রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে চায় পাকিস্তান: বিলাওয়াল

শনিবার আল-জাজিরা টিভিতে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে চায় পাকিস্তান: বিলাওয়াল

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: পাকিস্তান রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি। তবে ইউক্রেন সংঘাতে দেশটির অবস্থান আগামীতেও নিরপেক্ষ থাকবে বলে জানান তিনি। শনিবার আল-জাজিরা টিভিতে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। রাশিয়ার পাশাপাশি বিশ্বের সকল দেশের সঙ্গেই পাকিস্তান সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী বলে জানান তিনি। এ খবর দিয়েছে ডন।

খবরে বলা হয়, শুধু রাশিয়া ইস্যুতেই নয়, অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়েও একাধিক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বিলাওয়াল। প্রতিবেশী আফগানিস্তান নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ২০২১ সালে কাবুলের পতনের পর নতুন শাসকদের কাছ থেকে অনেক প্রত্যাশা ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। পাকিস্তানের অবস্থান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গেই। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চায় তালেবান নারীদের জন্য শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করুক। পাকিস্তানও তাই চায়। তাছাড়া আফগানিস্তানের মাটি সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়।

তিনি বলেন, আফগানিস্তানের নতুন শাসকদের সাথে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ত হওয়াই এখন এই সংকটের একমাত্র সমাধান। কারণ এটি একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ আফগানিস্তান গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি দেশটি নিজে উন্নত হলে প্রতিবেশীরাও শান্তিতে থাকতে পারবে। তিনি বলেন, বিশ্ব চায় তালেবানরা তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করুক। আফগানিস্তান তালেবান দখলের পর পাকিস্তানে বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে বলেও অভিযোগ করেন পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইসলামাবাদ চায় আফগান তালেবানরা এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কাজ করুক। 

ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে, সম্প্রতি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার জন্য ইরান-পাকিস্তান সীমান্তে বেলুচিস্তানে একটি সীমান্ত বাজার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সরকার ইরান থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের বিষয়ে কাজ করছে। সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠাকে ‘ইতিবাচক অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। তিনি বলেন, এটি শুধু দুই দেশের জন্য নয়, পুরো অঞ্চল এবং আমাদের জন্য একটি ইতিবাচক খবর।

তিনি পাকিস্তানে চীনের বিনিয়োগ নিয়ে নেতিবাচক কথাবার্তার বিরোধিতা করেন। বিলাওয়াল বলেন, এটি দুর্ভাগ্যজনক। চীন পাকিস্তানে জ্বালানি ও সড়ক অবকাঠামো প্রকল্পগুলি সম্পন্ন করেছে। সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন এই পিপিপি নেতা। তিনি বলেন, জন্ম থেকেই গণতন্ত্রের পথ কঠিন ছিল পাকিস্তানের জন্য। পাকিস্তানের বেশিরভাগ মানুষ চায় সেনাবাহিনী অরাজনৈতিক থাকুক এবং দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ না করুক। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর এমন প্রভাব আজীবন চলতে পারে না এবং এর পরিবর্তন দরকার। তিনি বলেন, আমরা শুধু এখনই নয়, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সংগ্রাম করে আসছি। কিন্তু এমন পরিবর্তন রাতারাতি সম্ভব নয়। আমরা বিশ্বাস করি না যে, দেশের সামরিক প্রতিষ্ঠানে হামলার মাধ্যমে এই পরিবর্তন আসতে পারে। এ দিয়ে তিনি মূলত গত ৯ই মে সামরিক স্থাপনায় পিটিআই কর্মীদের হামলার দিকে আঙুল তোলেন।