মুন্নীকে পাল্টা জবাব অপু বিশ্বাসের
প্রথম নিউজ, বিনোদন ডেস্ক: ‘শেষ হইয়াও হইলো না শেষ’ রেশ থেকে গেল। শোবিজের সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত সঙ্গীতশিল্পী কৌশিক হোসেন তাপস, ফারজানা মুন্নী, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ও শবনম ইয়াসমিন বুবলীর ইস্যু। কিছুদিন আগে তাপসের স্ত্রী মুন্নী ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, তাপস-বুবলী গোপনে প্রেম করছেন। পরে নিজের মত পরিবর্তন করে বুবলীকে বুকে টেনে অপু বিশ্বাসকে দোষারোপ করেন মুন্নী। এরপর অপুও সামাজিকধ্যমে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট দেন।
এখানেই শেষ নয়, এবার ভিডিও বার্তা নিয়ে এলেন অপু বিশ্বাস। রোববার ভোরে ২৮ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের এক ভিডিও বার্তায় বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন অপু।
শুরুতেই তিনি বলেন, বারবার চলচ্চিত্রের এই ব্যাপারগুলো আসা খুব বাজে একটা ব্যাপার। আপনারা জানেন দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে আমি চলচ্চিত্রে আছি। বিগত দিনে এ ধরনের ফেস করতে হয়নি। এর আগে অনেক সুন্দরী-সুন্দরী নায়িকা ছিলেন- শাবনূর আপু, মৌসুমী আপু, পপি আপু। তখন আরও সুন্দর-সুন্দর নায়কদের আর্বিভাব ছিল। তখন এমন কাদা ছোড়াছুড়ি ছিল না।
ভিডিওতে এ নায়িকা বলেন, আমি অত্যন্ত পছন্দ করি মুন্নী ভাবি ও তাপস ভাইয়াকে। আমার এত বছরের ক্যারিয়ারে কখনও তাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। এমনকি গানবাংলা চ্যানেলটি কোথায় অবস্থিত সেটাও আমি চিনি না। তাদের সঙ্গে কথা হয়নি বা কাজ হয়নি। তবে হাতিরঝিল প্রাঙ্গণে অনেক বড় করে তারা একটি প্রোগ্রাম করেছিল। আমি যদি ভুল না করে থাকি, সেখানে বাংলাদেশের প্রত্যেক আর্টিস্ট পারফর্ম করেছে। খুবই ভালো কথা। কারণ, একজন আর্টিস্টের জন্য গানবাংলা উঁচু একটি প্ল্যাটফর্ম। আমার হয়ত কখনও সুযোগ হয়নি অথবা সুযোগের জায়গাটা খুঁজতে যাইনি যে, আমার গানবাংলার কাজ করা উচিত ছিল।
ফারজানা মুন্নীর সেই ফেসবুক স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একমাস আগে আপনারা দেখেছিলেন যে, মুন্নী ভাবি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। যার নামটা বলতে আমার ঘৃণা লাগে, কিন্তু নাম কিছু কিছু জায়গায় উল্লেখ না করলে বুঝতে অসুবিধা হয়। আজকে শুধুমাত্র আপনাদের ক্লিয়ার করার জন্য নামটা বলতে হচ্ছে। সেটি হচ্ছে বুবলী।
যোগ করে অপু বিশ্বাস বলেন, বুবলীর একটি কথা নিয়ে মুন্নী ভাবি স্ট্যাটাস দিয়েছিল এরকমভাবে যে, বুবলী অ্যান্ড তাপস হ্যাভিং রিলেশনশীপ। অপু বিশ্বাসের লাইফে যেভাবে ঝামেলা করেছে এবং যেভাবে বুবলী বাচ্চা পেটে নিয়েছে; সে মুন্নী ভাবি ও তাপস ভাইয়ার মাঝে এ রকমই একটি সম্পর্ক তৈরি করতে যাচ্ছে। সেটা (ফেসবুক স্ট্যাটাস) ছিল ১৩-১৫ মিনিটের মতো। তারপর স্ট্যাটাসটি উধাও হয়ে যায়। উধাও হওয়ার পর একটা গ্রুপ বলে যে, আমি হ্যাক করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমি কিন্তু মুন্নী ভাবির সঙ্গে কখনও কথাই বলিনি। এমনকি তার নম্বরও জানি না। তাহলে রাত ৩টায় যখন তিনি স্ট্যাটাসটা দিলেন, আমি তো ওনাকে বলিনি যে, বুবলীর সঙ্গে তাপস ভাইয়ার সম্পর্কের মধ্যে আমার নাম ধরে স্ট্যাটাসটা দিতে। আমি কি বলেছি যে, অপু বিশ্বাসের লাইফটা নষ্ট করেছিল বুবলী। আমি তো তাকে বলিনি। তাহলে কেন ওই সময় আমার নামটা উল্লেখ করে লিখল!
মুন্নীর সঙ্গে ফোনালাপ প্রসঙ্গে অপু বলেন, একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ছোট ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলার একটি পর্যায়ে তাকে বললাম, মুন্নী ভাবির নম্বরটা কি আমাকে দিতে পারবে? কারণ, আমি আসলে কিছু ফোনকল বুঝতে পারছিলাম। মুন্নী ভাবির সঙ্গে আমার সরাসরি কথা বলার সুযোগ হয়নি। কিন্তু তিনি যে পাওয়ারফুল পারসোনালিটি, আমি সত্যিই পছন্দ করি। দেখুন বেলাশেষে, প্রত্যেকটা মেয়েই তার স্বামীকে ভালোবাসে। আজকের ভিডিওর মাধ্যমে মুন্নী ভাবিকে শ্রদ্ধা জানাতে চাই, কারণ তিনি ফার্স্ট প্রায়োরিটি ফ্যামিলিকে দিয়েছেন। আপনি যে কথাগুলো বলেছেন, তা নিয়ে আমার কষ্ট বা মন খারাপ নেই। অবশ্যই প্রত্যেকটা মানুষ তার সংসার বাঁচাতে চায়।
তিনি আরও বলেন, এই যে তার (ফারজানা মুন্নী) সংসারে টানাপোড়েন, সেই একই তৃতীয় পক্ষ। যে তৃতীয় পক্ষ আমার সংসারটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সরি টু সে ভাবি; আপনি যেমন একটি ইনফরমেশন দিয়েছেন যে, একটি ফোন এসেছে রাত ৩টায়। সেখানে অপু বিশ্বাস লেখা। কাইন্ড ইওর ইনফরমেশন, ট্রু-কলারে যে নামটা দিয়ে রেজিস্ট্রার করা হয়, সে নামটা ভেসে আসে। আমার নম্বরটি থেকে যদি আপনার নম্বরে কল যায়, তাহলে ওখানে নাম উঠবে আব্রাম খান। কারণ, আমার ওইভাবে রেজিস্ট্রি করা। মুন্নী ভাবি আমাকে প্রথমে ফোন করেছিল মোবাইল ফোনে। তখন তাকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করতে বলি। কারণ, বিষয়টি সেনসেটিভ। আমার সঙ্গে কিন্তু ওনার হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে মুন্নী জানিয়েছিলেন, তিনি কেবল অপুর কথার পরিপ্রেক্ষিতে কথাগুলো বলেছেন, যে কল রেকর্ড পরে ফাঁস হয়। এ প্রসঙ্গে অপু বলেন, উনি (ফারজানা মুন্নী) এতটা ডিস্টার্ব ছিল যে, আমার কোনো কথাই বলতে হয়নি। নিজেই বলছিল। তিনি আমাকে বলেছেন ‘আমি আর এই সংসারে থাকব না’। আমি তখন তাকে বলেছি, ভাবি আপনি আমাকে অপু ডেকেছেন না! আমাকে আদর করেছেন না! ওই মহিলার (বুবলী) ইনটেনশন হচ্ছে, প্রতিটা সংসার ভাঙানো। শাকিব অত্যন্ত সরল-সোজা একজন মানুষ। সেই সরল-সোজা মানুষকে যা-তা করে ইউজ করতে পেরেছে সাইনবোর্ডের মতো। আমি আপনার ক্ষেত্রে এমনটা হতে দেব না। দরকার হলে বলেন, আমি ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলব। আপনি ভাইয়াকে ছেড়ে যাবেন, এটা স্বপ্নে চিন্তা করবেন না। আপনি যদি এই কাজ করেন, তাহলে এখনই ফোনটা কেটে দেব। আমি যখন তাকে বললাম, আমি ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলি। তখন ভাবি বলল, অপু তোমাকে সে তার কাছে এতটা খারাপ বানিয়েছে যে, তুমি কীভাবে কথা বলবা। সেই স্পেসটাই তো রাখেনি। আমার বাচ্চাকে নিয়ে সে (বুবলী) বাজে মন্তব্য করেছে।
তিনি আরও বলেন, ভাবি (ফারজানা মুন্নী) বলছিল, আমি তাকে প্রশ্ন করছিলাম। সে উত্তর দিচ্ছিল। ভাবি আপনি স্ট্রং পারসোনালিটির মানুষ। আমি এখনও আপনাকে রেসপেক্ট করি। তাহলে অযথা কেন আমার মতো নির্দোষ মেয়ের সম্মানহানী করবেন!
ফারজানা মুন্নীর সঙ্গে শাকিবের ফোনালাপ নিয়ে অপু বলেন, ভাবি তো শুধু আমাকে না। তিনি শাকিবকে ফোন করছিলেন। শাকিব ফোন ধরছিল না। তখন ভাবি আমাকে বলছিল, শাকিব আমার নম্বর ধরছে না। তখন তাকে বারবার শাকিবের নম্বর মিলিয়ে দিয়েছি। শাকিবকে মেসেজ পাঠিয়েছি তার সঙ্গে কথা বলার জন্য।
অপু বলেন, আলু গন্ধর জন্য আমার পরিবারটা নষ্ট হয়েছে। মন থেকে দোয়া করি আপনি ও ভাইয়া ভালো থাকেন। আপনারা ভালো ভাবে চলেন। আপনারা ভালো মন্দ যেটাই বলেন পরিবার সবার আগে তারপর সবকিছু। আমার কাছেও আমার পরিবার আগে। তারপর সবকিছু। উপস্থাপকও হয়ত একটু বোকার মতো কাজ করেছেন। সে হয়ত চেয়েছেন আমাকে আপনাদের কাছে বাজে ভাবে উপস্থাপন করতে। তাদে আমার সমস্যা নেই। আমার পরিবারের লোকজন জানেন আমি কেমন। সবশেষে বলব হ্যাপি থাকুন। আর এই পচা আলুর গন্ধ আর কোনো পরিবারকে যাতে নষ্ট করতে না পারে। আমার এই তথ্যটা আপনারা মাথায় রাখবেন।
ভিডিও বার্তায় ফারজানা মুন্নীর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা আদান-প্রদানও দেখান। কয়েকটি বার্তা পড়েও শোনান। অপু বিশ্বাসের ভিডিও বার্তার পর এবার তাপস, মুন্নী ও বুবলী কি বলেন তারই অপেক্ষায় অনুরাগীরা।