বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্নপূরণ হলো না শাওনের
বিসিএস দিয়ে ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না মেহেদী হাসান শাওনের
প্রথম নিউজ, ঢাকা : বিসিএস দিয়ে ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না মেহেদী হাসান শাওনের। গত ১ মে (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার ধূপখোলা বাজারে বাজার করতে গিয়ে তিতাস গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ হন শাওন।
ছয় দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার (৬ মে) সকাল সোয়া ৬টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যান তিনি। শাওন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম ব্যাচের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
নিহত শাওনের রুমমেট ও একই বিভাগের ছাত্র হাসান আলী ভূঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, শাওন পরিবারের একমাত্র ছেলে। তার বাবা-মা এবং তার স্বপ্ন ছিল বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে ক্যাডার হবেন কিন্তু সেই স্বপ্ন তিতাস গ্যাসের অবহেলার কারণে পূরণ হলো না। শাওন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। সে খুব নম্র, ভদ্র ও মেধাবী ছাত্র ছিল। ঘটনার দিন সে মেসের জন্য বাজার করতে গিয়েছিল ধূপখোলা বাজারে। সেখানেই তিতাস গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়েছিল শাওন। ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে আজ সকালে আইসিইউতে মারা যায় শাওন।
তিনি বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্র নিহতের ঘটনায় আমরা দোষী দায়ীদের বিচার দাবি করছি।
হাসান আরও বলেন, আমরা দুজন একই রুমে থাকতাম এবং একই বিভাগের ছাত্র। আমার ও শাওনের বাড়ি নাটোরের বাঘাটিলা থানা এলাকায়। তার বাবার নাম আব্দুল লতিফ। তারা এক ভাই এক বোন ছিল। তার ছোট বোন নবম শ্রেণিতে পড়ে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জিএম আল আমিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শাওন খুব মেধাবী এবং নম্র, ভদ্র একজন ছাত্র ছিল। চেহারা দেখলেই বোঝা যায় সে কত ভালো ছিল। সে মা-বাবার একমাত্র ছেলে ছিল। তার মা-বাবাও খুব সহজ-সরল মানুষ, সে ছিল পরিবারের একমাত্র অবলম্বন। তার মা-বাবাও এখন শয্যাশায়ী, এরই মধ্যে তার মাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। যারা দায়িত্বশীল ব্যক্তি, এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার পরও তারা এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করেনি। তিতাস গ্যাসের অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী আইনগত কি ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেই কার্যক্রমগুলো এগোতে থাকব।
তিনি আরও বলেন, আমরা ভাইস চ্যান্সেলরের অনুমতিক্রমে সকাল থেকে এখানে আছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তার মরদেহ নাটোরে পৌঁছে দেওয়া হবে।
জানতে চাইলে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ১ মে দগ্ধ অবস্থায় আমাদের এখানে ভর্তি হয়। আজ সকালে আইসিইউতে চিকিৎসা দিন অবস্থায় মারা যায় সে। তার শরীরের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।