বাংলাদেশে ‘আরব বসন্ত’ চেষ্টার হুঁশিয়ারি রাশিয়ার, যা বললেন মোমেন
গতকাল রোববার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘৫২ বছরে বাংলাদেশের অর্জন’ শীর্ষক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল আমেরিকার কাছে সন্তোষজনক মনে না হলে ‘আরব বসন্তের’ মতো করে বাংলাদেশকে আরও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হতে পারে। এমনটা আশঙ্কা করে বিবৃতি দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির এমন বক্তব্য নাকচ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, আমার তো নিশ্চয়ই মনে হয় না এ ধরনের কোনো সুযোগ আছে। গতকাল রোববার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘৫২ বছরে বাংলাদেশের অর্জন’ শীর্ষক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার বিবৃতির বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমার তো নিশ্চয়ই মনে হয় না এ ধরনের কোনো সুযোগ আছে। আমরা একটা গণতান্ত্রিক দেশ। শেখ হাসিনার কারণে আমাদের দেশে গণতন্ত্র সমুন্নত আছে। আর আমরা ৭ জানুয়ারি নির্বাচন করব।’ আবদুল মোমেন বলেন, রাশিয়া কী বলেছে, এটা আমাদের ইস্যু নয়। এটা ওদের জিজ্ঞাসা করেন। অনেকে অনেক ধরনের কথা বলবে কিন্তু আমরা এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আমরা সার্বভৌম, আমাদের ভারসাম্য পররাষ্ট্রনীতি।
সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি চলে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কে কী বলল, না বলল, এটা তাদের মাথাব্যথা। আমরা পরাশক্তিগুলোর টানাটানিতে পা দিতে চাই না। আমাদের ভারসাম্য কূটনীতি নিয়ে আমরা চলতে চাই।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ১৫ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, গত ১২-১৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে সরকারবিরোধীরা রাস্তাঘাট অবরোধ করে, যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আমরা এসব ঘটনার সঙ্গে ঢাকায় পশ্চিমা কূটনৈতিক মিশনগুলোর, বিশেষ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক লক্ষ্য করছি। মারিয়া জাখারোভা আশঙ্কা করছে যে, আগামী সপ্তাহগুলোয় ‘পশ্চিমা শক্তিগুলোর পক্ষে অসুবিধাজনক’ বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকমের অবরোধ আরোপ করা হতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিল্প খাতের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর ওপর আঘাত আসতে পারে; সেই সঙ্গে কিছু সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক রায় প্রদানে বাধাদানের তথ্যপ্রমাণহীন অভিযোগ তুলে পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
মারিয়া জাখারোভা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত হবে, এমন সম্ভাবনা কম। বিবৃতির শেষে তিনি বলেন, তবে আমরা নিশ্চিতভাবে মনে করি, বাইরের শক্তিগুলোর সব ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতার বিষয়টির সুরাহা হবে দেশটির বন্ধুপ্রতিম জনগণের দ্বারাই, অন্য কোনো শক্তির দ্বারা নয়।