বান্দরবানে কেএনএ’র অতর্কিত গুলিতে এক সেনা সদস্য নিহত, আহত ২

সোমবার (১৩ মার্চ) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বান্দরবানে কেএনএ’র অতর্কিত গুলিতে এক সেনা সদস্য নিহত, আহত ২
বান্দরবানে কেএনএ’র অতর্কিত গুলিতে এক সেনা সদস্য নিহত, আহত ২

প্রথম নিউজ, ডেস্ক: বান্দরবানের রুয়াংছড়ি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) অতর্কিত গুলিবর্ষণে একজন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো দুই সেনাসদস্য। নিহত সেনাসদস্যের নাম মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন। তিনি রংপুর সদরের ঘাঘটপাড়া গ্রামের মৃত শমসের আলীর ছেলে। তিনি ৩০ বছর যাবৎ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। সোমবার (১৩ মার্চ) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জাতীয় শিশু দিবস ও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় মা ও শিশুদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে যাওয়া দলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনাসদস্যদের উপর রোববার (১২ মার্চ) আনুমানিক বেলা ১টায় কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এবং অপর দুজন সেনা সদস্য আহত হন। আহত দুই সেনাসদস্য বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিনের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। আইএসপিআর আরো জানিয়েছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি নামক এই সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটি ইতোপূর্বে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া’র মতো একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠীকেও বান্দরবানের পাহাড়ী এলাকায় অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

পাহাড়ী এলাকার অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য সরকার কর্তৃক নির্মিতব্য বান্দরবানের থানচি সড়ক সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের এই উন্নয়নমূলক কার্যক্রমকে প্রতিহত করার জন্য কেএনএ সন্ত্রাসী দলটি সড়ক নির্মাণ কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত অসামরিক ঠিকাদার, মালামাল সরবরাহকারী এবং শ্রমিকদের কাছে প্রথমে চাঁদা দাবি করে এবং পরবর্তী সময়ে কাজ বন্ধ করার হুমকি দেয়। কিন্তু সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই কাজ চলমান থাকায় কেএনএ সন্ত্রাসী দল গত ১১ মার্চ ১২ জন শ্রমিককে অপহরণ করে।

এদের মধ্যে একজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয় এবং চার শ্রমিককে এখনো কেএনএ জিম্মি করে রেখেছে। অবশিষ্ট সাত শ্রমিককে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিলেও তাদেরকে সেনাবাহিনীর সাথে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ না করার জন্য হুমকি দেয়। সবশেষ রোববার সেনাবাহিনীর টহল দলের উপর গুলিবর্ষণ করে কেএনএ।

উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের তিন উপজেলায় গাড়ি চলাচল বন্ধের জন্য কেএনএ পরিবহন মালিক সমিতিকে হুমকি দিয়ে নোটিশ জারি করে। কেএনএ সদস্যদের বিবিধ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দ্বারা সৃষ্ট নিরাপত্তাজনিত কারণে গত রোববার (১২ মার্চ) ওই এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন। এছাড়াও কেএনএ’র নির্যাতনে স্থানীয় বিভিন্ন পাহাড়ী সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী ঘর ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছে।

সূত্র : আইএসপিআর

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: