প্রথিতযশা ১৪ চিকিৎসক পেলেন সম্মাননা

শুক্রবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হেলথকেয়ার এক্সপো-২০২৩ আয়োজকের পক্ষ থেকে এই প্রথম হেলথকেয়ার এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।

প্রথিতযশা ১৪ চিকিৎসক পেলেন সম্মাননা

প্রথম নিউজ, অনলাইন: দেশের ১৪ জন প্রথিতযশা চিকিৎসককে তাদের স্ব-স্ব ক্ষেত্রে অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য দেওয়া হলো সম্মাননা। শুক্রবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হেলথকেয়ার এক্সপো-২০২৩ আয়োজকের পক্ষ থেকে এই প্রথম হেলথকেয়ার এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক নাজমুল হক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক খলিলুর রহমান, বিহার ইউনিভার্সিটি কমিশনের (ইন্ডিয়া) অধ্যাপক ড. রাজ বর্ধন আজাদ, কলকাতার মেডিকা হাসপাতাল প্রেসিডেন্ট ড. সৌমিত্র ভারদোয়াজ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হেলথকেয়ার এক্সপোর আয়োজক সুবিধা ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক মুরাদ হোসাইন, এমপ্যাথি সলিউশনের (ইন্ডিয়া) ডিরেক্টর দালিপ কুমার চোপড়া, মেডিকেল ভ্যালু ট্রাভেল আলাইন্সের (এমভিটি) গভর্নিংবডির সদস্যসহ দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীরা। অনুষ্ঠানে সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন সম্মাননা প্রাপ্তদের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ তুলে দেন।

উল্লেখ্য, ঢাকার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কনভেনশন হলে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে তিন দিনব্যাপী শুরু হওয়া বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হেলথকেয়ার এক্সপোর দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির অংশ হিসাবেই চিকিৎসকদের জন্য এই সম্মাননার আয়োজন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এই এক্সপো বিভিন্ন দেশের হাসপাতাল ও মেডিকেল প্রযুক্তি এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে  জ্ঞান লাভ ও পারস্পারিক প্রযুক্তি বিনিময়ের সুযোগ তৈরি হবে।

সম্মাননা প্রাপ্ত ১৪ জন চিকিৎসকদের মধ্যে রয়েছেন- বিশিষ্ট বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জন ও শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের জাতীয় সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. সামন্ত লাল সেন। শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির প্রতিষ্ঠাতা ও উন্নয়নে তার অসামান্য অবদানের জন্য সম্মাননায় ভূষিত হন। বিএসএমএমইউর ইউরোলজি বিভাগের প্রক্টর ও অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল; যার নেতৃত্বে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের সার্জনদের একটি দল বাংলাদেশে প্রথম ক্যাডেভারিক কিডনি প্রতিস্থাপন করেন।

ঢাকার ওএসবি চক্ষু হাসপাতালের পরিচালক ও চিফ কনসালটেন্ট, বাংলাদেশের প্রথম মহিলা চক্ষু বিশেষজ্ঞ ফেলো, এশিয়া প্যাসিফিক একাডেমি অফ অফথালমোলজির (এপিএও) সভাপতি, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের শীর্ষ ১০০ চক্ষু বিশেষজ্ঞ হিসাবে স্বীকৃত অধ্যাপক ড. আভা হোসেন। বাংলাদেশ এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে অন্ধত্ব প্রতিরোধে তার উল্লেখযোগ্য নেতৃত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মাননা পেয়েছেন।

বাংলাদেশে অস্থি মজ্জা (বোন ম্যারো) প্রতিস্থাপনের পথপ্রদর্শক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগ ও বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমেদ খান তার তত্ত্বাবধানে প্রথম বোন-ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট (বিএমটি) প্রবর্তনের জন্য সম্মাননায় ভূষিত হোন।

বিএসএমএমইউর নিউরোসার্জারি বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হোসেন প্রথমবারের মতো দেশে এন্ডোস্কোপিক ডিস্ক সার্জারি চালু ও এন্ডোস্কোপিক পিটুইটারি সার্জারির পথিকৃৎ হিসাবে সম্মাননা পেয়েছেন।

এছাড়াও দেশের শিশু বিশেষজ্ঞ, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ নিওনেটোলজি এবং শিশু স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সম্মাননায় ভূষিত হোন। বিএসএমএমইউর প্রজনন এন্ডোক্রিনোলজি এবং বন্ধ্যাত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান, অধ্যাপক ড. পারভীন ফাতিমা বাংলাদেশে প্রথম টেস্ট-টিউব বেবির জন্য।
ঢাকায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স প্রতিষ্ঠা, নিউরোলজির ক্ষেত্রে তার জীবন উৎসর্গ করা অবদান তথা বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবায় অধ্যাপক ড. কাজী দীন মোহাম্মদের অসামান্য অবদানের জন্য সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।

অধ্যাপক ড. এম এ ফইজ ম্যালেরিয়া, অর্গানো ফসফরাস যৌগিক বিষক্রিয়া, সাপের কামড়, নিপাহ সংক্রমণ, কালাজ্বর এবং যক্ষ্মা রোগের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অবদানের জন্য, অধ্যাপক ড. খন্দকার মানজারে; শামীম মেডিকেল শিক্ষাবিদ হিসাবে, অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জনস্বাস্থ্যে অবদানের জন্য; অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসাইন অর্থপেডিক্সে এবং  অধ্যাপক ড. এম এ হাই ক্যান্সার চিকিৎসায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হেলথকেয়ার এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।

সম্মাননাপ্রাপ্ত চিকিৎসকগণ মানবতা, জনস্বাস্থ্য ও দেশের চিকিৎসা উন্নয়নে তাদের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।