পাকিস্তানকে ১২৮ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ
শুরুর মতো হলো না শেষটা। লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত কিংবা সৌম্য সরকাররা

প্রথম নিউজ, ডেস্ক :শুরুর মতো হলো না শেষটা। লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত কিংবা সৌম্য সরকাররা যেভাবে শুরু করেছিলেন, কিংবা প্রথম ১০ ওভার যেভাবে খেলেছিলো বাংলাদেশ, শেষটা তেমন হলো না। বাংলাদেশের রান যেখাকে কম করে ১৫০ হওয়ার কথা, সেখানে হলো কেবল ১২৭।
ডেথ ওভারে বাংলাদেশের ব্যাটিং আগের মতোই থেকে গেলো। বরাবরই ডেথ ওভারে ভালো বোলিং করে থাকে পাকিস্তানি বোলাররা। এবারও তাই করলো। চেপে ধরলো বাংলাদেশকে। যার ফলে কাংখিত স্কোরটা হলো না। ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ থেমে গেরো ১২৭ রানে।
অ্যাডিলেড ওভালে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানকে মাত্র ১২৮ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে সক্ষম হয়েছে সাকিব আল হাসানের দল।
১০ ওভারে বাংলাদেশের রান ছিল ১ উইকেট হারিয়ে ৭০। ওই সময় দেয়া হয় পানি পানের বিরতি। এরপরই ভোজবাজির মত সব পাল্টে যায়। ১১তম ওভারে পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেন শাদাব খান। সৌম্য সরকারের পর সাকিব আল হাসান ব্যাট করতে নেমেই বিতর্কিত এলবিডব্লিউ আউটের শিকার হলেন। এরপরই পুরোপুরি ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ।
শাদাব খানের দলটি ছিল মিডল স্ট্যাম্পে। বল মিস করেন সাকিব। ফিল্ডাররা আবেদন করতেই আঙ্গুল তুলে দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান আম্পায়ার আদ্রিয়ান হোল্ডস্টক। সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নিলেন সাকিব। রিরভিউতে দেখা গেলো বল লাইনে থাকলেও পায়ে আঘাত হানার ঠিক আগ মুহূর্তে ব্যাটের ছোঁয়া লেগেছিল। আল্ট্রা এডজ ভিউতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বল ব্যাট ছুঁয়েছিল, ব্যাট মাটি ছোঁয়নি; কিন্তু টিভি আম্পায়ার অনেকটা তাড়াহুড়ো করেই ফিল্ড আম্পায়ারের এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্তই বহাল রাখলেন। আউট দিলেন সাকিবকে।
এ সিদ্ধান্ত যেন মেনেই নিতে পারছিলেন না সাকিব। মাঠে অবস্থিত জায়ান্ট স্ক্রিনে সবই দেখা যাচ্ছিল। তাতে দেখা যাচ্ছে আউট নন সাকিব। অথচ, তাকে আউট দেয়া হলো। সাকিব মাঠ ছেড়ে যেতে না চাইলে আম্পায়ার এসে তাকে বুঝিয়ে প্যাভিলিয়নে পাঠান।
রিভিউ চেক করার সময় টিভি আম্পায়ার লংটন রুসেরি বলেন, বল ব্যাটে লাগেনি। ব্যাট মাটিতে লেগেছে। এরপর বল লেগেছে সাকিবের পায়ে। অথচ, রিভিউটা ভালোভাবে দেখারই প্রয়োজন বোধ করেনি আম্পায়ার। সাকিবের ব্যাট মাটিতে লেগেছিল কি না সেটাও ভালো করে দেখলেন না। আউটের সিদ্ধান্ত দিয়ে দিলেন।
সাকিবের আগের বলেই আউট হয়ে যান সৌম্য সরকার। শাদাব খানের বলেই শান মাসুদের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১৭ বলে ২০ রান করে আউট হন সৌম্য।
সাকিবের পর বিদায় নেন আরও এক ব্যাটার। নাজমুল হোসেন শান্ত ৪৮ বলে ৫৪ রান করে আউট হন। ৭টি বাউন্ডারির মার মারেন তিনি। মূলতঃ সাকিব-সৌম্যর বিদায়ের পর যে ব্যাকফুটে গিয়েছিল টাইগাররা সেখান থেকে বের হতে পারেনি আর।
আগের ম্যাচেই এই অ্যাডিলেড ওভালে প্রথমে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকার মত শক্তিশালী দলকে হারিয়ে দিয়েছে নেদারল্যান্ডস। সুতরাং, সেখানে টস জিতে যে কেউ প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেবে এটাই স্বাভাবিক। সাকিব আল হাসান ব্যাটিংই নিলেন।
ব্যাট করতে নেমে সূচনাটা ভালোই ছিল বাংলাদেশের। বিশেষ করে বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্যাটিং শুরু করেন লিটন দাস। নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গে নিয়ে ২১ রানের জুটি গড়ে ফেলেন তিনি।
কিন্তু শাহিন শাহ আফ্রিদির বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলটিকে এক পা এগিয়ে এসে খেলার চেষ্টা করেন লিটন। কিন্তু বল চলে যায় থার্ডম্যান অঞ্চলে শান মাসুদের হাতে। ৮ বলে ১০ রান করে বিদায় নেন তিনি।
লিটন দাস আউট হওয়ার পর উইকেটে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত এবং সৌম্য সরকারের প্রথম কাজ ছিল আর উইকেট না হারানো এবং রানের গতি বাড়ানো। অর্পিত দায়িত্ব বেশ ভালোভাবেই পালন করে যাচ্ছেন এই দুই টপ অর্ডার।
পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে খুব বেশি রান ওঠেনি। ১ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেছে ৬০ রান। তবে, পাওয়ার প্লে শেষ হয়ে গেলেও ধীরে ধীরে নিজেদের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন শান্ত এবং সৌম্য। এরই মধ্যে ইনিংসের ১০ ওভার শেষ হলো স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের রান যুক্ত হলো ৭০টি। উইকেট সেই ১টিই।
১১তম ওভারে সৌম্য-সাকিব বিদায় নেয়ার পরও শান্ত-আফিফ চেষ্টা করেন স্কোর বড় করার। কিন্তু ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি করার পর ৫৪ রান করে শান্ত আউট হয়ে যান। শান্ত আউট হয়ে যাওয়ার পর মোসাদ্দেক হোমেন সৈতক ৫, নুরুল হাসান সোহান ০, তাসকিন আহমেদ ১, নাসুম আহমেদ ৭ রান করে আউট হন। ২০ বলে ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন আফিফ হোসেন ধ্রুব।
এরই ফাঁকে নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা বোলিংটা করে নিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি। ২ উইকেট নেন শাদাব খান এবং ১টি করে উইকেট নেন হারিস রউফ এবং ইফতিখার আহমেদ।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews