নির্বাচনের সঙ্গে জাহাঙ্গীরকে তলবের কোনো সম্পর্ক নেই
দুদক সচিব বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়ে ২০২০ সালের একটি অভিযোগ ও ২০২২ সালের আরেকটি অভিযোগ নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয়।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সঙ্গে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে তলবের কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন। আজ বুধবার (১৭ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দুদক সচিব বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়ে ২০২০ সালের একটি অভিযোগ ও ২০২২ সালের আরেকটি অভিযোগ নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয়। অভিযোগ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এরই মধ্যে অনেকের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। অনেক কাগজপত্রও সংগ্রহ করা হয়েছে। অভিযোগের অনুসন্ধানের শেষ পর্যায়ে তার (জাহাঙ্গীর আলম) বক্তব্য প্রয়োজন। এ কারণেই তাকে তলব করা হয়েছে। এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই।
ভুয়া ব্যাংক হিসাবে অবৈধ লেনদেন, বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আগামী ২১ ও ২২ মে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে নোটিশ দেয় দুদক।
দুদকের উপ-পরিচালক আলী আকবরের নেতৃত্বে দুটি আলাদা অনুসন্ধান টিম জাহাঙ্গীর আলমকে তলব করেছে। দুই টিমের অপর দুই সদস্য হলেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলিয়াজ হোসেন ও মো. আশিকুর রহমান। দুদক সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ হলো বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেন।
আরেকটি অভিযোগ হলো গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিছুর রহমান ও কতিপয় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ। গত বছরের জুনে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ১ম অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এজন্য দুই সদস্যের টিম গঠন করা হয়। পরে দুদকে তার বিরুদ্ধে আরেকটি নতুন অভিযোগ জমা পড়ে।
২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বহিষ্কার করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জাহাঙ্গীর আলমের কিছু বিতর্কিত মন্তব্য সম্বলিত ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর জাহাঙ্গীর আলমকে শোকজ করা হয়েছিল।
এর আগে ওই বছরের ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। পরে অবশ্য তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছিল আওয়ামী লীগ। এবার আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে মনোনয়ন জমা দিয়েও প্রার্থী হতে না পারায় জাহাঙ্গীর আলম তার মাকে প্রার্থী করে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন তিনি। আর দলীয় সিদ্ধান্ত না মানা এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে গত সোমবার তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।