নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হচ্ছে না পাকিস্তানে
প্রথম নিউজ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলতি বছর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ভোটার তালিকা হালনাগাদ না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। দেশটির কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার শনিবার এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ভোটার তালিকা এখনও হালনাগাদ হয়নি। আদমশুমারির মাধ্যমে এটি (হালানাগাদ) করতে হবে। শুমারি শেষে নতুন ভোটার তালিকা তৈরিতে সময় লাগবে অন্তত ৪ থেকে ৫ মাস। তাছাড়া কোন সাংবিধানিক আসনের আয়তন কতখানি হবে, সেটিও নির্ভর করছে নতুন ভোটার তালিকার ওপর। তালিকা হাতে পেলে আসনগুলোর আয়তন পুনর্বিন্যাস করতে হবে। সেখানেও অন্তত দেড় থেকে দু’ মাস সময় প্রয়োজন।’
আজম নাজির তারার বলেন, শনিবার পাকিস্তানের বিশেষ সরকারি সংস্থা কাউন্সিল অব কমন ইন্টারেস্টের (সিসিআই) বৈঠকে এসব ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সেই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন। উল্লেখ্য, সিসিআই মূলত পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক সরকারগুলোর মধ্যে একপ্রকার সেতুবন্ধনের কাজ করে। জাতীয় যে কোনো ইস্যুতে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিস সরকারেরর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্ল্যাটফরম হিসেবে কাজ করে এই সিসিআই।
শনিবারের বৈঠকে কেন্দ্রীয় এবং পাকিস্তানের ৪টি প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন উল্লেখ করে নাজির তারার বলেন, ‘বৈঠকে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে আগামী নির্বাচন হবে নতুন ভোটার তালিকার ভিত্তিতে। এখন, সব দিক সামাল দিয়ে কবে নির্বাচনের আয়োজন করা সম্ভব হবে— সেই ঘোষণা দেবে নির্বাচন কমিশন। পাকিস্তানে নির্বাচন আয়োজনের সার্বিক দায়িত্বে থাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কোনো সরকার তার মেয়াদ শেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার বিধান রয়েছে দেশটির সংবিধানে।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে তত্ত্ববধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারকে। গত বৃহস্পতিবার শেহবাজ জানিয়েছেন, আগামী ৯ আগস্ট ক্ষমতা হস্তান্তর করবে তার সরকার।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কুনওয়ার দিলশাদ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আদমশুমারি, নতুন ভোটার তালিকা ও সাংবিধানিক আসনগুলোর আয়তন পুনর্বিন্যাস করতে অন্তত ৫ থেকে ৬ মাস সময় লাগবে। সেই হিসেবে সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির দিকে হবে নির্বাচন।’
এদিকে শনিবারই আলোচিত তোশাখানা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা ইমরান খান। ইসলামাবাদের জেলা ও দায়রা আদালত তাকে এই মামলায় ৩ বছর কারাবাসের সাজাও দিয়েছেন। ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের কো-চেয়ারম্যান শাহ মুহম্মদ কুরেশি অবশ্য বলেছেন, জেলা ও দায়রা আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবে পিটিআই।