নিকলী থানার সার্ভিস ডেস্কে নারীর সঙ্গে পুরুষদের আটকে রাখার ঘটনায় তোলপাড়
একই কক্ষে পুরুষ থাকায় ওই নারী বের হওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন। এ সময় এক নারী পুলিশ সদস্য ওই নারীকে ধমকাতে থাকেন এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।
প্রথম নিউজ, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের নিকলী থানার নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্কে এক নারীকে আটকে রেখে সেখানে জুয়া অপরাধী পাঁচ পুরুষকে এনে একসঙ্গে রাখার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী ভয়ে কাঁপতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি কান্না শুরু করেন। এ ছাড়া ডেস্কের ভেতরে ওই নারীর সঙ্গে আটক থাকা পুরুষদের একের পর এক বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়ায় চরম অস্বস্তিতে দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয় ওই নারীর। মানবিক উদ্যোগ হিসেবে চালু হওয়া নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্কে নারীর সঙ্গে পুরুষদের এভাবে আটকে রাখার একটি ভিডিও ক্লিপ ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে বিভিন্নজনের কাছে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিও ক্লিপটিতে দেখা যায়, নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্কের কক্ষটির এক কোণে জড়োসড়ো হয়ে এক নারী দাঁড়িয়ে আছেন। পাশে কয়েকজন পুরুষ। একই কক্ষে পুরুষ থাকায় ওই নারী বের হওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন। এ সময় এক নারী পুলিশ সদস্য ওই নারীকে ধমকাতে থাকেন এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।
নিকলী থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে মারামারির ঘটনায় গত ২০শে জানুয়ারি ওই নারীকে নিকলী থানার ওসি মোহাম্মদ মনসুর আলী আরিফ এর নির্দেশে আটক করা হয়। সকাল ১০টায় তাকে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্কে এনে আটকে রাখা হয়। এর দুই ঘণ্টা পর দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার কারপাশা থেকে পাঁচ জুয়াড়িকে এনে ওই নারীর সঙ্গে ডেস্কের একই কক্ষে আটকে রাখা হয়। ওইদিন আটক হওয়া নারী বিষয়টি নিশ্চিত করে ক্ষোভের সঙ্গে জানান, তাকে একটি মামলার আসামি হিসেবে ধরে নিয়ে তাস খেলার অভিযোগে ধরে আনা পাঁচজন পুরুষ আসামির সঙ্গে একই রুমে আটকে রাখা হয়। পুরুষ আসামিদের বিড়ি সিগারেটের গন্ধে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ওই নারীকে অস্বস্তিকর অবস্থায় কাটাতে হয়েছিল।
পুরুষ আসামিদের তার কাছ থেকে অন্য রুমে নেয়ার কথা বলা হলেও ওই নারীর কথায় পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। অবশেষে চুরির অপরাধে আরেকজন নারীকে পুলিশ থানায় ধরে নিয়ে এলে তখন ওই নারীকে অন্য একটি হাজত কক্ষে সরিয়ে নিয়ে নারী আসামিটির সঙ্গে রাখা হয়। অভিযোগের বিষয়ে নিকলী থানার ওসি মোহাম্মদ মনসুর আলী আরিফ বলেন, ভিডিওটা আমি কয়েকদিন আগে দেখেছি। ওই সময় ডেস্কের তালা ছিল না। পুরুষদের কক্ষের ভিতর নিয়ে শুধু নাম-ঠিকানা লেখা হয়েছে। একসঙ্গে আটকে রাখার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমাদের আলাদা হাজতখানা রয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: