ডিসির স্বাক্ষর জাল করে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ

খুলনা জেলা প্রশাসন পরিচালিত সৈয়দপুর ট্রাস্ট এস্টেটের এই অর্থ রাজস্ব বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সোহেল আরমান দুটি ব্যাংক থেকে চেকের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে।

ডিসির স্বাক্ষর জাল করে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ

প্রথম নিউজ, খুলনা: খুলনা জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর জাল করে প্রায় ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। খুলনা জেলা প্রশাসন পরিচালিত সৈয়দপুর ট্রাস্ট এস্টেটের এই অর্থ রাজস্ব বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সোহেল আরমান দুটি ব্যাংক থেকে চেকের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর বিষয়টি ধরা পড়লে এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। সদর থানা পুলিশ অভিযোগটি গত ৫ সেপ্টম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠিয়েছে। 

জেলা প্রশাসন থেকে জানা গেছে, দানবীর হাজী মুহম্মদ মুহসীনের সব সম্পদ দিয়ে সৈয়দপুর ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে স্টেটের প্রধান। রাজস্ব বিভাগ ট্রাস্টের সম্পদ দেখাশোনা করে। এর অর্থ দিয়ে গরিব শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, দুস্থদের সহযোগিতাসহ সেবামূলক কাজ করা হয়। খুলনা মহানগরীর এনআরবিসি ও ইসলামী ব্যাংকে ট্রাস্টের দুটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর ট্রাস্টের ব্যাংক হিসাব পরীক্ষণের সময় অসংগতি ধরা পড়ে। যাচাইয়ের পর স্বাক্ষর জাল করে প্রায় ৪০ লাখ টাকা উত্তোলনের বিষয়টি ধরা পড়ে। ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল থেকে গত ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১টি চেকে এই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত কর্মচারী সোহেল আরমান পলাতক।  

এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরির পাশাপাশি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইউসুফ আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে প্রতিবেদন এক সপ্তাহের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।  খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, সরকারি অর্থ আত্মসাতের মামলা দুদকে করতে হয়। জেলা প্রশাসনের অভিযোগ পাওয়ার পর গত ৫ সেপ্টেম্বর দুদকে পাঠানো হয়েছে।

দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, মামলা গ্রহণের জন্য প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি নিতে হয়। খুব শিগগির অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হবে।

খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসিন আরেফীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযুক্ত কর্মচারী প্রায় আড়াই মাস ধরে অনুপস্থিত। তার অনুপস্থিতির কারণে খোঁজ নিতে গিয়ে অর্থ নেওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে চেকে টাকা তুলে নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৪০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে এমনটা জানা গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে সঠিক হিসাব বেরিয়ে আসবে। কে বা কারা জড়িত, তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।