ড্রিংকওয়েল বুথের পানির মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার দাবি

পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পূর্বের মূল্য বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

ড্রিংকওয়েল বুথের পানির মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার দাবি

প্রথম নিউজ, ঢাকা: ঢাকা ওয়াসার পানির পাম্প স্টেশন থেকে পরিচালিত ড্রিংকওয়েলের এটিএম বুথের পানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ। পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পূর্বের মূল্য বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

বুধবার (২ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দুদিন আগেও যেখানে সুপেয় পানিবঞ্চিত অসহায় দরিদ্র এবং সাধারণ নাগরিকরা ৪০ পয়সা প্রতি লিটার পানি কিনতো। সেখানে আজ ১০ পয়সা ভ্যাটসহ প্রতি লিটার ৮০ পয়সায় কিনতে হচ্ছে পানি। ড্রিংকওয়েলের এই পানির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত শুধু অযৌক্তিক তাই নয়, এটি নিন্দনীয় এবং ঢাকা ওয়াসার অসহায় নির্ণয় ও অসাধারণ মানুষদের জন্য নেওয়া প্রকল্পের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। 

তিনি আরও বলেন, আমরা জানি ঢাকা ওয়াসা ড্রিংকওয়েলকে বিনামূল্যে পানি সরবরাহ করে থাকে এবং তাদের স্থাপনা বিনামূল্যে ব্যবহার করে থাকে। তাই তাদের পানি যেখানে বিনামূল্যে সরবরাহ করার কথা কিন্তু তাদের ব্যবস্থাপনার জন্য নামমাত্র মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। পাশাপাশি আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম কাণ্ডজ্ঞানহীন কিছু দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেছেন- বিদ্যুতের মূল্য এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিবেশ পরিস্থিতির কারণেই পানির মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এ সকল বক্তব্য দেওয়ার জন্য এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আমরা অনুরোধ জানাই। 

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা জানি এই পানির বিক্রির কোনো অর্থ ঢাকা ওয়াসা নেয় না। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার ৩২১টি পাম্পে এটিএম বুথের মাধ্যমে সাধারণ মানুষদের নিকট সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। যার উদ্দেশ্য ছিল ঢাকা ওয়াসার সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। ইতিমধ্যে মানবিক এই কাজের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাওয়ার্ড কর্পোরেট এক্সিলেন্স (এসিই) পুরস্কার পেয়েছে ড্রিংকওয়েল। 

তিনি আরও বলেন, তাই ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের যেই উদ্দেশ্য সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নাগরিকদের সুপেয় পানি সরবরাহ করার তার সঙ্গে ড্রিংকওয়েলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সাংঘর্ষিক। আমরা এই মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পূর্বের মূল্যই রাখার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি বিষয়টি সরকারের স্থানীয় মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করছি।

জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে ড্রিংকওয়েলের ৩২১টি পানির এটিএম বুথ রয়েছে রাজধানীতে। এর মধ্যে বর্তমানে চালু আছে ২৯৭টি বুথ। এসব বুথ থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৪ লাখ লিটার পানি টাকার বিনিময়ে সরবরাহ করা হয় গ্রাহকদের কাছে। ব্যাংকের এটিএম কার্ডের মতো আর এফআইডি কার্ড পানির বুথের মেশিনের নির্দিষ্ট স্থানে রাখলে কল থেকে পানি বেড়িয়ে আসে। গ্রাহকরা এই পানি নিজেদের পাত্রে সংগ্রহ করে নেন। এতে ৫০ টাকা দিয়ে কার্ড করে ১০ থেকে ৯৯৯ টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করা যায় ওইসব বুথগুলো থেকেই। মেশিনে কার্ড ধরলে যে পরিমাণ খাওয়ার উপযোগী পানি গ্রাহক নেবেন, সেই অনুযায়ী দাম কেটে রাখা হয়।

আর যে পানি আগে প্রতি লিটার ৪০ পয়সা করে পাওয়া যেত সেই পানি গত (১ আগস্ট)  থেকে প্রতি লিটার ৭০ পয়সা করে দাম নির্ধারণ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এর সঙ্গে আরও ১০ পয়সা ভ্যাট যুক্ত হয়ে গ্রাহককে ড্রিংকওয়েলের বুথ থেকে প্রতি লিটার পানি এখন কিনতে হচ্ছে ৮০ পয়সায়।