গার্মেন্টস শ্রমিকদের ১৪ দফা দাবি

গার্মেন্টস শ্রমিকদের ১৪ দফা দাবি

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার জামিন নামঞ্জুর করাসহ ১৪ দফা দাবি জানিয়েছে ‘সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন’।

সোমবার (১০ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সোহেল রানার জামিন নামঞ্জুর করাসহ মামলার সব আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব দাবি জানান সংগঠনের নেতারা।


সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, ‘২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ভবন ধ্বসে সরকারি হিসাবে এক হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক প্রাণ হারান। আড়াই হাজার শ্রমিককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আহত হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন সহস্রাধিক শ্রমিক। তাদের মধ্যে কমপক্ষে এক হাজার শ্রমিক পঙ্গুত্ব বরণ করে বেঁচে আছেন।’


তিনি আরও বলেন, ‘এই মর্মাহত দুর্ঘটনা শুধু বাংলাদেশ নয়, সমগ্র বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয়। এই ঘটনায় ভবন মালিক সোহেল রানা, পাঁচটি গার্মেন্টস মালিক ও সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হলে সরকার বিভিন্ন আইনে তিনটি মামলা দায়ের করে, যা গত ১০ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। এর মধ্যে সোহেল রানা ছাড়া বাকি সব আসামি জামিনে আছেন। তাই এই সমাবেশ থেকে আমরা সোহেল রানার জামিন নামঞ্জুরসহ ১৪ দফা দাবি জানাই।’

তাদের দাবিগুলো হলো– রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ মামলার সব আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া; শুনানিতে সোহেল রানার জামিন নামঞ্জুর করা; জামিনপ্রাপ্ত অন্যান্য সব আসামিদের জামিন বাতিল করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া; রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের সুব্যবস্থা করা; রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত শ্রমিকদের সন্তানদের লেখাপড়ার সুব্যবস্থা করা; সব ক্রেতা ও ব্র্যান্ডকে অ্যাকর্ড চুক্তি স্বাক্ষর করা; গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা করা; ইপিজেডসহ সব কারখানায় অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন ও যৌথ দর কষাকষি করার স্বাধীনতা দেওয়া; সব ক্রেতা ব্র্যান্ড ও মালিকদের কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাজনিত বিমায় অংশগ্রহণ করা; সব শ্রমিককে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাজনিত বিমার আওতায় আনা; সব শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশচিত করা; সব শ্রমিকের পেশাগত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস করা এবং কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন ও আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষর করা।

সমাবেশে আরও ছিলেন সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাদিজা আক্তার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উর্মি আক্তার, প্রচার সম্পাদক ইয়াহিয়া খানসহ বিভিন্ন এলাকার ৪০টি ইউনিয়নের নির্বাহী কমিটির সদস্যসহ গার্মেন্টস শ্রমিকরা। সমাবেশ শেষে তারা প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে মিছিল শুরু করেন। পুরানা পল্টন মোড়ে গিয়ে তা শেষ হয়।