কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন

কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন করা হয়েছে

কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন
কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দূতাবাসের মিনিস্টার (শ্রম) এবং চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স মোহাম্মদ আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও রাষ্ট্রদূতের ব্যক্তিগত সহকারী জিহোন ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এ দিন প্রত্যুষে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে মিনিস্টার (শ্রম) এবং চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যদের নিয়ে দূতাবাসে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু কর্নারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এসময় বঙ্গবন্ধুসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে শহীদ ও মহান স্বাধীনতার জন্য যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের উত্তরোত্তর উন্নতি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

পরে দূতাবাসের হলরুমে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ’ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে প্রথম সচিব (পাসপোর্ট ও ভিসা) মো. ইকবাল আখতার ও সোনালী ব্যাংক প্রতিনিধি মোহাম্মদ লুৎফর রহমান। বাণী পাঠ শেষে বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ভাষণের ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বটি অত্যন্ত প্রাণবন্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। মিনিস্টার (শ্রম) এবং চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স মোহাম্মদ আবুল হোসেনের উপস্থিতিতে কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যসহ বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। তারা তাদের বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এসময় বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন।

মিনিস্টার (শ্রম) এবং চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স মোহাম্মদ আবুল হোসেন তার বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করার পাশাপাশি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শাহাদাত বরণকারীদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতা, ৩০ লাখ শহীদ, সম্ভ্রম হারা দুই লাখ মা-বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর-মুক্তিযোদ্ধাদের, যাদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

তিনি বলেন, বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে ৭ মার্চ একটি অবিস্মরণীয় দিন। স্বাধীনতা ও মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে কোটি বাঙালিকে উজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ভাষণের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।

এসময় চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স আরও বলেন, ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব উপলব্ধি করে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর এ ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ এর মর্যাদা দিয়ে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ এ অন্তর্ভুক্ত করেছে। যা জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবান্বিত করেছে। এ ভাষণের কারণেই বিশ্বখ্যাত নিউজউইক ম্যাগাজিন বঙ্গবন্ধুকে ‘পয়েট অব পলিটিক্স’ হিসেবে অভিহিত করে।

তিনি উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্য প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে।

মিনিস্টার (শ্রম) এবং চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স সবাইকে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করে দেশপ্রেম ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা সুখী-সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ গড়তে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: