ওলামাদের আগমনে বাতিলরা আতঙ্কিত: চরমোনাই পীর
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় ওলামা মশায়েখ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা : জাতীয় ওলামা মশায়েখ সম্মেলনে চরমোনাই পীরজাতীয় ওলামা মশায়েখ সম্মেলনে চরমোনাই পীর ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে সবাই অবগত। ডাকাতরাও আলেমদের ভয় পেতো। এখন ওলামাদের জেলে বন্ধি করতে, হামলা করতে এবং রক্ত ঝরাতে দ্বিধাবোধ করে না। ওলামাদের আগমনে বাতিলরা আতঙ্কিত। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় ওলামা মশায়েখ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ বলেন, ওলামা মশায়েখদের শক্তিশালী একটি সংগঠন থাকা দরকার। পরিপূর্ণ দ্বীনের দাওয়াত দিতে গিয়ে বাধা এলে তার মোকাবিলায় ওলামা মশায়েখ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সব চক্রান্ত নস্যাৎ করার দায়িত্ব ওলামায়ে কেরামের।
দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে। ভোট ও খাদ্যের সংকট নিয়ে সবাই চিন্তিত। সংকটের মূল কারণ কোরআন-সুন্নাহ থেকে আমাদের বের করে আনতে হবে। মুফতি ইয়াহইয়া মাহমুদ বলেন, যেদিকে তাকাই সেদিকেই দেখি দুর্নীতি ও আবর্জনা। এখন দেশের মানুষ যাবে কোথায়?
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, জামিল মাদরাসা বগুড়ার মোহাদ্দিস মাওলানা আবদুল হক আজাদ, খুলনা দারুল উলুম মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মোশতাক আহমদ, বরিশাল মাহমুদিয়া মাদরাসার মোহতামিম মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব প্রমুখ।
জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে ১৫ দফা সম্মেলন ঘোষণা ও কর্মসূচি উপস্থাপন করা হয়। সেগুলো হচ্ছে—
দেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত মুলনীতি ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা’ করতে হবে। বিভিন্ন চিন্তাধারার ওলামায়ে কেরামের মাঝে বিদ্যমান দূরত্ব কমিয়ে ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করা। ধর্মীয় ব্যক্তিরা ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও অপপ্রচার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের সব মসজিদের খতিব, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের যথাযথ মর্যাদা দিয়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।
দাওরায়ে হাদিস ও উচ্চতর মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষকদের সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের সমতুল্য মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রাইমারি স্কুলে মুসলিম শিশুদের কোরআন ও নামাজ শেখানোর জন্য একজন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আলেম নিয়োগ দিতে হবে।
যেকোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল এবং সম্মেলনে কোনও রকম প্রতিবন্ধকতা ও হয়রানি করা যাবে না। দেশের সব মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন এবং মক্তব ও মাদরাসার শিক্ষকদের চাকরিবিধি এবং বেতনকাঠামো প্রণয়ন করতে হবে। কারাবন্দী সব আলেমকে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে। ওলামায়ে কেরামের নামে করা সব ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
সমাবেশে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সেগুলো হচ্ছে, ১ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের প্রতিটি জেলা ও মহানগরে ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন ও সিরাতুন্নবী মাহফিল। ১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত থানা উপজেলায় ইমাম, মুয়াজ্জিন ও ওলামা সম্মেলন। ডিসেম্বর মাসব্যাপী সারা দেশে তাফসিরুল কোরআন মাহফিল ও গণ-কোরআন শিক্ষা কর্মসূচি।