এ.টি.এম খালেদের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে বাকৃবি ছাত্রদলের শ্রদ্ধা
বীর প্রতীক এ.টি.এম খালেদের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোঃ আতিকুর রহমান এবং সদস্য সচিব মোঃ শফিকুল ইসলাম এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত তার স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
প্রথম নিউজ, বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ১ম শহীদ মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন আহবায়ক, সর্বকনিষ্ঠ বীর প্রতীক এ.টি.এম খালেদের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোঃ আতিকুর রহমান এবং সদস্য সচিব মোঃ শফিকুল ইসলাম এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত তার স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। এ সময় তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এ এম সোয়াইব, তরিকুল ইসলাম তুষার, আশরাফ আহমেদ সদস্য মেহেদী, শাহরিয়ার সহ অনেকে।
এ টি এম খালেদের পৈতৃক বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। শহরের মধ্যপাড়ার স্কুল লেনে তাঁর বাবার বাড়ি। তাঁর ডাক নাম দুলু। এ নামেই তিনি বেশি পরিচিত ছিলেন। তাঁর বাবার নাম গোলাম মওলা প্রামাণিক। মা রেজিয়া খাতুন। খালেদ অবিবাহিত ছিলেন। তিন ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। ১৯৭১ সালে তিনি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতার পর সেখানে পুনরায় ভর্তি হন। তাঁর আকাঙ্ক্ষা ছিল, পড়াশোনা শেষ করে নিজ এলাকায় আধুনিক কৃষিচাষে আত্মনিয়োগ করার। কিন্তু তাঁর সে আশা আর পূরণ হয়নি। পরে তিনি জড়িয়ে পড়েন ছাত্র রাজনীতিতে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন । খেলাধুলায়ও ছিল তাঁর বেশ উৎসাহ। এ জন্য তাঁর জীবনের কয়েকটি বছর নষ্ট হয়ে যায়।
এটিএম খালেদ মুক্তিবাহিনীর ১১ নম্বর সেক্টরের মানকারচর সাব-সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ভারতের দেরাদুনে প্রশিক্ষণ নেন। যুদ্ধ করেন কুড়িগ্রাম জেলার কোদালকাটি, চিলমারীসহ আরও কয়েক স্থানে। ১ অক্টোবর সুবেদার আলতাফের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর কয়েকটি দল কোদালকাটির পাকিস্তানি অবস্থানে একযোগে আক্রমণ করে। একটি দলে ছিলেন খালেদ। দু-তিন দিন সেখানে যুদ্ধ হয়। ৩ অক্টোবর দুপুরের পর পাকিস্তানি অবস্থান থেকে আর কোনো গুলি আসছিল না। বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধাদের চিন্তিত করে ফেলে। এ অবস্থায় দুঃসাহসী খালেদসহ আরও কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলার ভেলায় করে নদী পার হয়ে পাকিস্তানি অবস্থানে গিয়ে দেখেন, সেখানে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার কেউই নেই। পাকিস্তানিদের গোটা প্রতিরক্ষা খাঁ খাঁ করছে। চারদিকে তন্নতন্ন করে খুঁজেও পাকিস্তানিদের দেখা গেল না। তখন তাঁরা বুঝতে পারলেন, পাকিস্তানিরা পালিয়ে গেছে।
১৭ অক্টোবর চিলমারীতে ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। সেদিন মুক্তিযোদ্ধারা একযোগে পাকিস্তানিদের বিভিন্ন অবস্থানে আক্রমণ করেন। এ টি এম খালেদ ও কাজিউল ইসলাম ছিলেন একটি দলের নেতৃত্বে। তাঁরা জোড়গাছ স্কুলের পাকিস্তানি অবস্থানে আক্রমণ করেন। তাঁদের প্রচণ্ড আক্রমণে সেখানকার পাকিস্তানিরা হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। বেশির ভাগ পাকিস্তানি পালিয়ে তাদের মূল ঘাঁটিতে আশ্রয় নেয়। খালেদ এক পাকিস্তানি সেনাকে জীবিত আটক করেন। এই পাকিস্তানি সেনাকে পরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য তিনি 'বীর প্রতীক' খেতাব প্রাপ্ত হন। মুক্তিযোদ্ধা এ টি এম খালেদ মুক্তিযুদ্ধ শেষে আবার পড়াশোনায় মন দিয়েছিলেন। ১৯৭৯-৮০ সালে অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ১৯৮০ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে বীর প্রতীক এ টি এম খালেদ শহীদ হোন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: