আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫ দিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ
এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী এবং তাদের সঙ্গে আসা স্বজন ও আবাসিক ভবনে বসবাসরত ডাক্তার এবং কর্মকর্তারা।
প্রথম নিউজ, বরগুনা: বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত পাঁচ দিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানির পাম্প বিকল হওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী এবং তাদের সঙ্গে আসা স্বজন ও আবাসিক ভবনে বসবাসরত ডাক্তার এবং কর্মকর্তারা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও আবাসিক ভবনে পানি সরবরাহের জন্য এক বছর আগে একটি নতুন বৈদ্যুতিক মটর বাসানো হয়। মটরটি ২৩ আগস্ট বুধবার দুপুরে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এর পর থেকে আজ ২৭ আগস্ট রোববার পর্যন্ত পাঁচদিন আমতলী হাসপাতাল এবং আবাসিক ভবনে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। নোংরা হয়ে আছে হাসপাতালের পরিবেশ। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ।
রোববার (২৭ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালে ট্যাপ থেকে পানি পড়ছে না। রোগী এবং স্বজনরা বালতি এবং পানির বোতল ভরে বাহিরের গভীর নলকূপ থেকে পানি নিয়ে আসছেন। আমতলী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানি সরবরাহের জন্য ২০২২ সালের প্রথম দিকে ৮-৯ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি বৈদ্যুতিক মটর বসানো হয়।
হাসপাতালের আবাসিক ভবনে চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীসহ বসবাসরত চাকরিজীবীরা পড়েছেন মহাবিপদে। হাসপাতালের অভ্যন্তরে একটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য কর্মকর্তাতাদের জন্য রয়েছে ৪টি আবাসিক ভবন। ওই সব ভবনে বসবাসরত চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মচারীরা পানির অভাবে ঠিকমত গোসলসহ সাংসারিক কাজকর্ম করতে পারছেন না।
রোগীর সঙ্গে আসা শিরিনা বেগম নামে এক স্বজন বলেন, গভীর নলকূপ থেকে পানি ভরে চার তলায় নিয়ে ওঠা খুব কষ্টকর। এভাবে আর পারা যায় না। ডেঙ্গু জরে আক্রান্ত লিটন কাজী বলেন, এখানে চিকিৎসার জন্য আসার পর থেকে টয়লেটের ট্যাপে পানি নেই। পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। ষাটোর্ধ্ব আব্দুল জব্বার নামে এক রোগী বলেন, বাবা বয়সের কারণে এমনিতেই ঠিকমত হাঁটতে পারি না তার ওপর ডেঙ্গু জ্বর। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে এখানে পানি নাই।
হাসপাতালের আবাসিক ভবনে বসবাসরত নার্স রেবা, সালমা, মোর্শেদা, আঁখি বলেন, হাসপাতালের পানি তোলার বৈদ্যুতিক পাম্প মেশিনটি নষ্ট থাকায় এখন আমরা পানি পাই না। বিকল্প ব্যবস্থায় বাহির থেকে পানি সংগ্রহ করে তা দিয়ে সাংসারিক, রান্নাবান্না ও ধোয়া মোছাসহ বাসা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছি। ‘আমাদের পানি না হলে এক মিনিটও চলে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, ঠিকাদার ও স্বাস্থ্য প্রকৌশলীর যোগসাজশে কম মূল্যের এবং নিম্ন মানের একটি বৈদ্যুতিক মটর বসানোর কারণে এক বছরের মাথায় সেটি আবারও নষ্ট হয়ে গেছে। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবদুল মুনায়েম সাদ বলেন,পানির পাম্পে সমস্যা দেখা দিয়েছে। সমস্যা সমাধানের জন্য সিভিল সার্জন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পটুয়াখালীর উপ-সহকারী প্রকৌশলী দেবব্রত হালদার বলেন, কি কারণে মটরটি নষ্ট হয়েছে তা জানি না তবে শিগগিরই মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।