আতঙ্ক কাটিয়ে পুরনো চেহারায় নিউ মার্কেট

শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ীদের সমঝোতা বৈঠকের পর খুলেছে নিউমার্কেট এলাকার সকল বিপনিবিতান

আতঙ্ক কাটিয়ে পুরনো চেহারায় নিউ মার্কেট
আতঙ্ক কাটিয়ে পুরনো চেহারায় নিউ মার্কেট

প্রথম নিউজ, ঢাকা : বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিউমার্কেটের বিপণিবাতানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ীদের সমঝোতা বৈঠকের পর খুলেছে নিউমার্কেট এলাকার সকল বিপনিবিতান। সব ভয়, আতঙ্ক কাটিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে আসছেন ক্রেতারা। স্বস্তিতে বিক্রেতারাও। তবে ফুটপাথের ব্যবসায়ীরা কেউ কেউ দোকান খুললেও অনেকে পারছেন না। যানচলাচলও প্রতিদিনের মতো স্বাভাবিক রয়েছে। সরজমিন দেখা যায়, শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের কারণে দুদিন বন্ধ থাকার পর আজ সকাল থেকে নিউমার্কেট এলাকার দোকানপাটগুলো খুলতে শুরু করেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদেরও ভিড় বাড়ছে। ভয়, আতঙ্ক কাটিয়ে দূরদূরান্ত থেকে অনেকে আসছেন ঈদের কেনাকাটা করতে।

এদিকে ঈদ বাজারে দোকান খুলতে পারায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। দোকাফনদের বেচাবিক্রিও চলছে মোটামুটি। তবে নিউমার্কেটের মধ্যে ভিতরে ও বাইরের দোকানগুলো খুললেও রাস্তার পাশে ফুটপাথের দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে। মাঝে মাঝে খোলার প্রস্তুতি নিলেও দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা এসে তাদেরকে উঠিয়ে দিচ্ছেন। বস্তায় জিনিস বাধা অবস্থায় ফুটপাথের অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা অসহায়ের মতো বসে আছেন। নিউমার্কেটের নিরাপত্তা কর্মীরা জানিয়েছেন, পুরোদমে মার্কেট খোলা হয়েছে। ঈদের কেনাকাটা করতে ক্রেতারাও আসছেন। বিক্রেতারাও স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। এদিকে নিউমার্কেটের আশেপাশে থাকা নূরজাহান মার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেটও পুরোদমে খোলা হয়েছে। সেখানেও ভিড় জমিয়েছেন ক্রেতারা। তবে এসকল মার্কেটের প্রতিদিনের মতো সামনে বসা ফুটপাথের দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে। আবার মাঝে খুললেও ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।

সাভার থেকে আসা ক্রেতা খাদিজা বেগম বলেন, গত মঙ্গলবার কেনাকাটা করতে এসে ফিরে গিয়েছি। নিউমার্কেটে মারামারি হচ্ছিল। আজ সকালে খবর দেখে আবার কেনাকাটা করতে এসেছি। আজ কেনাকাটা শেষ করে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাবো। রাজু বলেন, দুইদিন ধরে মার্কেটে আসবো করে আসিনি। কেনাকাটা করার প্রয়োজন থাকলেও ভয়ে আসিনি। আজ স্বাভাবিক হয়েছে শুনে মার্কেটে এসেছি। শাড়ির দোকানের বিক্রেতা নাজমুল বলেন, কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে পেয়েছি। সকাল থেকে মোটামুটি ক্রেতা আসছে। এই দুইদিনে অনেক ক্ষতি হয়েছে। গাউছিয়া মার্কেটের কসমেটিকস এর দোকানি রাজিব বলেন, প্রতি ঈদে শেষের দিকে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকে কসমেটিকস পণ্য কেনার। পোশাক কেনার পর তার এসকল জিনিস ক্রয় করেন। বেচাবিক্রি ভালো হচ্ছে।

এদিকে ফুটপাথের দোকানি মো. সুমন। ওড়না দোকান নিয়ে নূর ম্যানশনের সামনে বসতাম। আজ এখনও দোকান খুলতে পারছি না। পকেটেও টাকা নেই। আর আমাদের গরিবদের উপর সব অত্যাচার। চাঁদপুরে বউ, বাচ্চা না খেয়ে আছে। প্রতিদিন ৫০০-৬০০ টাকার ইনকাম হয়। ভয়ে দোকান খুলতে পারছি না। ফুটপাথে ব্যাগ বিক্রেতা শুভ বলেন, সকাল থেকে বসে আছি। আজ তিনদিন ধরে দোকান খুলতে পারি না। ব্যাগ বিক্রি করি আমি। এই ঈদে সবাই অভাবে আছে। ঈদে বাড়িতে যাবো পকেটে কোন টাকা নেই। পরিবারে দুই ভাই ও মা আছে। অভাবের জন্য ঢাকায় আসছি। ফুটপাথে ব্যবসা করে যা আয় হয় তা দিয়ে টেনেটুনে আমার পরিবারের খরচ চলে যায়।
ফুটপাথে শাড়ি বিক্রেতা নোমান বলেন, সকাল থেকে এখনও পর্যন্ত জিনিসপত্র বস্তা থেকে নামাতে পারিনি। বস্তা বাধা অবস্থায় রয়েছে। শুধু এভাবে দাঁড়িয়ে আছি। মার্কেটে অনেক ক্রেতা আসছে। সকাল থেকে বসতে দিলে অনেক বিক্রি হতো। এই দুইদিন ধরে পরিবারকে কোন টাকা পয়সা দিতে পারছি না। এখনও ভয় আতঙ্ক কাজ করছে। আমরা গরিব মানুষ। আমাদের কেউ নেই। আজও দোকান খুলতে পারবো কিনা জানিনা। অবস্থা খুব করুন আমাদের। প্রতিদিন গাউছিয়া মার্কেটের সামনে বসি। এখানেই বহু বছর ধরে ব্যবসা করছি। কখন আমাদের বসতে দেয় সেই অপেক্ষায় আছি। দুই একজন মাঝে মাঝে দোকান খুলছে আবার পুলিশ এসে উঠিয়ে দিচ্ছে। 

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom