৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে পরিবারকে সময় দিন: নজরুল ইসলাম খান

আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের এক গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রবীণ শ্রমিক নেতা এই আহ্বান জানান।

৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে পরিবারকে সময় দিন: নজরুল ইসলাম খান

প্রথম নিউজ, ঢাকা: ‘৭ জানুয়ারি ভোট বর্জন করে নিজ নিজ বাসায় পরিবার-পরিজনকে সময় দিতে’ ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নজরুল ইসলাম খান।

আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের এক গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রবীণ শ্রমিক নেতা এই আহ্বান জানান।

তিনি বনেন, ‘‘একজন বক্তা এখানে বলেছেন, এবার ১৭৪টি আসনে কে নির্বাচিত হবে এটা ঠিক হয়ে গেছে… ওখানে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা আসলে হচ্ছে না। বাকি কিছু কিছু জায়গা প্রতিদ্বন্দ্বিতা তা আবার কার কার মধ্যে… ‘আমরা আর মামাদের’ মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে… হয় সরকারি দল আর না হয় সরকারি দলের যিনি প্রধান তার পায় ছুঁয়ে সালাম করে দোয়া নিয়ে যারা যারা নির্বাচন করছেন কিংবা তাদের যে প্রতীক সেই প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে কিংবা আপস করে কতগুলো সিট ঠিক করে নিয়েছে সেখান থেকে সরকারি দলের প্রার্থী প্রত্যাহার হইছে … এভাবেই তো নির্বাচনটা হচ্ছে… এর অর্থ বুঝি না… এটা কি নির্বাচন? না রসিকতা না ফাইজলামি… এগুলোর কোনো মানে হয়।”

‘‘আমরা জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি এই রসিকতা, এই খেলা, এই ফাইজলামিতে যাইয়েন না… কোনো দরকার নাই তো। ভোট কেন্দ্রে যাবেন না বরং এই সময়টা ছেলে-মেয়েদের সাথে কাটাতে পারেন, নাতি-নাতনিতে সাথে কাটাতে পারেন। আমরা সেজন্য শান্তিপূর্ণ অসহযোগ ও নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়েছি। দেশের স্বার্থে এই নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনে আপনারা (শ্রমিকরা) অংশ নেবেন এই অনুরোধ থাকলো।”

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘নির্বাচন মানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, নির্বাচন মানে প্রতিযোগিতা… নির্বাচনে মানে হচ্ছে জনগণের সামনে একটা চয়েজ দিতে হবে যে, আপনি ওনাকে পছন্দ করেন না, ওনাকে পছন্দ করেন। না তাকে পছন্দ করেন। এই পছন্দ করার মতো মানুষগুলো যদি আসমান-জমিন খারাপ থাকে তাহলে আসলে এটা চয়েজ হলো না? এই ভোট করে লাভটা কি? যেখানে ১৭৪টা জায়গায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হচ্ছে না প্রাকটিক্যালি… তা হলে এর অর্থ কি? ’’

‘‘আমি ভোট দিতে যাবে কি যাবো না… এটা আমার অধিকার… আমি যাবো না। কারণ আমার সামনে কোনো চয়েজ নাই… এটা তো আমার কিছু করার নাই। আপনারা ঠিক করে নিয়েছেন, আপনারা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন… আপনারা ভাগাভাগি করে যা পারেন নিয়ে যান গা। কেনো আমাকে এর মধ্যে জড়াইতেছে? আমি তো এর মধ্যে নাই।”

প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন এরকম নির্বাচনে সরকার অর্থের অপচয় করছে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন একটা নির্বাচন করার জন্য প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে যা কিনা জনগণের টাকা। আমি সেইদিন বলছিলাম আল্লাহর ওয়াস্তে এই শীতের দিনে মিছে মিছে এই পুলিশ, এই আনসার, এই বিজেবি, এই আর্মি, সরকারি কর্মচারীদের কেনো কষ্ট দিচ্ছেন মিছা মিছি। এটা তো কোনো নির্বাচন না। একজন সাধারণ লোককে আপনি জিজ্ঞাসা করে তারা কি বলে? এখনই মানুষ দেখে দেখে বলে দিচ্ছে কে কে নির্বাচিত হচ্ছেন।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবের নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের উদ্যোগে বর্তমান শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে এই গোল টেবিল আলোচনা হয়। এই আলোচনায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, গণঅধিকার পরিষদের নূরুল হক নূর, জেএসডির মোশারেফ হোসেন মন্টু, বিএনপির অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা আশরাফ আলী আকনসহ বিভিন্ন দলের শ্রমিক নেতারা বক্তব্য রাখেন।