Ad0111

৬০ শতাংশ বায়ু দূষণ রাতে, আবদুল্লাহপুর সবচেয়ে দূষিত এলাকা

ঢাকার একিউআই সূচক ১৮৮, সারা বিশ্বে অবস্থান তৃতীয়।

৬০ শতাংশ বায়ু দূষণ রাতে, আবদুল্লাহপুর সবচেয়ে দূষিত এলাকা
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অবস্থান এক থেকে পাঁচের মধ্যে ওঠানামা করছে। গত বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার বায়ু মানের সূচক (একিউআই) ছিল ২০৪। সেদিন দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। ভারতের দিল্লি ও উত্তর মেসিডোনিয়ার স্কোপজ যথাক্রমে ২৪১ ও ১৯৫ একিউআই সূচক নিয়ে তালিকার প্রথম ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল।

আজ শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার একিউআই সূচক ১৮৮, সারা বিশ্বে অবস্থান তৃতীয়। বসনিয়া হার্জেগোভিনার সারাজিভো এলাকা বায়ু দূষণে প্রথম। সেই শহরের একিউআই সূচক ছিল ২৮৬ আর পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থান দ্বিতীয়, সেই শহরের একিউআই ২০৮।

স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) বলছে, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে বায়ু দূষণ ১০ শতাংশ বেশি হয়েছে। সংগঠনটির গবেষণা বলছে, গড়ে ২০২০ সালে বায়ুমান সূচক (একিউআই) অনুযায়ী দূষণের মাত্রা ছিল ১৪৫। যা ২০২১ সালে এসে হয়েছে ১৫৯ দশমিক ১।

সংগঠনটি বলছে, ৬০ শতাংশ বায়ু দূষণ হয় রাতের বেলা। আর সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণ হয় আবদুল্লাহপুরে। ক্যাপসের পরিচালক ও স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, ২০২০ সালে যখন লকডাউন শুরু হয় তখন অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প থেমে যায়। স্কুল, কলেজ, যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। তবে ২০২১ সালে বিধিনিষেধ থাকলে তা আগের বছরের মতো কঠোর ছিল না। এ কারণে মানুষ ২০২০ সালে যে কাজগুলো করতে পারেনি সেগুলো পরের বছর করে ফেলে। নির্মাণ প্রকল্পের কাজ তরান্বিত করতে ইটের ব্যবহার ও উৎপাদন বেড়েছে গত বছর। রাস্তার সংস্কার, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ গতি পেয়েছে গত বছর।

তিনি বলেন, ঢাকাতে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লাখ গাড়ি চলাচল করে। এগুলোর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি গাড়ি ২০২০ সালে চলাচল করেনি। ব্যবহার না হওয়া ও পুরানো তেল মবিল নিয়ে পড়ে থাকায় গাড়িগুলোর ইঞ্জিনের কার্যকারিতা কমে যায়। অনেক মালিক সেটা সার্ভিসিং না করে রাস্তায় নিয়ে আসে। এর ফলে সড়কে দূষণে বেড়েছে। ক্যাপসের গবেষণা বলছে, পরিবহন খাত বায়ু দূষণের অন্যতম মাধ্যম। কোনো কিছু পোড়ানোর ফলে যে বায়ু দূষণ হয় তার উৎস ঢাকা শহরে দুটি। এর একটি হলো- যানবাহন, আর অন্যটি হলো বর্জ্য পোড়ানো।

কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, লকডাউনের মধ্যে আমরা দেখছি, ২৪ ঘণ্টায় আমাদের যে বায়ু দূষণ হয় তার ৬০ শতাংশ বায়ুদূষণ হয় রাতের বেলা। রাতের ১২ ঘণ্টায় ৬০ শতাংশ বায়ুদূষণ হয় আর বাকি ৪০ শতাংশ বায়ুদূষণ হয় দিনের বেলা। রাতের বেলা বায়ু দূষণ বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, রাতে বায়ুর চাপ বেড়ে যায়। ওপর থেকে বায়ু নিচের দিকে চাপ দেয়। রাতে তাপমাত্রা কমে যায় এবং কুয়াশা পড়ে, এ কারণে আকাশ ভেজা ভেজা থাকে। আবার দেখা যায় দিনের বেলায় বায়ু প্রবাহের গতি বেশি থাকে রাতে কম থাকে। এসব কারণে ধুলাবালি নিচের দিকে থাকে। বায়ু দূষণ বাড়ে। এছাড়া আন্তঃনগরীয় বাসগুলো রাতে প্রচণ্ড গতিতে চলাচল করে। রাতে সংস্কারের কাজও হয়। দিনের বেলা কম গতিতে বাস চলাচলের কারণে ধুলাগুলো উড়তো না। রাতে দ্রুত গতিতে চলাচলের কারণে ধুলা উড়তে থাকে।

নির্মাণ কাজের জন্য ব্যবহৃত ইট, বালু, সিমেন্ট রাতে পরিবহনের মাধ্যমে, স্থানান্তর হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ট্রাকে মাটি, সিমেন্ট, ইট ঢেকে পরিবহন করার কথা থাকলেও তা হয় না। হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী ঢেকে পরিবহন করতে হবে। এছাড়া রাস্তায় পানি দেওয়ারও নির্দেশনা ছিল কিন্তু সেগুলো কোনোটাই মানা হচ্ছে না। নির্মাণসামগ্রীর ধুলা বাতাসে মিশে যায়। আবার রাত ১১ টার পর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা রাস্তা ঝাড়ু দেয়। বিভিন্ন স্থানে আবর্জনা পোড়ানো হয় এসব কারণে প্রচুর দূষণ হয়।

কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, আমরা ঢাকার ১০টি এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা জরিপ করছি। এর মধ্যে সবচেয়ে দূষিত এলাকা আব্দুল্লাহপুর। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে মিরপুর আর তৃতীয় শাহবাগ। তিনি আরও বলেন, ঢাকার ১০০টি স্থানে বর্জ্য পোড়ানো হয়। ২০২০ সালে আমরা দেখেছি যেখানে যেখানে বর্জ্য পোড়ানো হয় সেখানে বায়ু দূষণ বেশি হয়। এর মধ্যে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ, নিউমার্কেটের ডাম্পিং এলাকায় প্রচুর বর্জ্য পোড়ানো হয়। কিছু গণমাধ্যমে খবর প্রচারের পর কিছুদিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ হয়। তবে এখন আবার বর্জ্য পোড়ানো শুরু হয়েছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news