৩ দিনের রিমান্ড মিল্টন সমাদ্দারের

বৃহস্পতিবার (২ মে) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

৩ দিনের রিমান্ড  মিল্টন সমাদ্দারের

প্রথম নিউজ, অনলাইন: মৃত্যু সনদ জালিয়াতির মামলায় চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২ মে) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

এদিন মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করে মিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ কামাল হোসেন। মিল্টন সমাদ্দারের পক্ষে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম শিকদার। শুনানি শেষে ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।

এ সময় বিচারক আশ্রম সম্পর্কে জানতে চান। মিল্টন সমাদ্দার জানান, চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার আশ্রমের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৪ সালে। এক বছর পর সমাজসেবা অধিদপ্তরে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন তিনি। ২০১৮ সালে আশ্রমের কার্যক্রম পরিচালনার লাইসেন্স পান। আশ্রমটিকে কেন্দ্র করে দুটি লাইসেন্স করা হয়। একটি ফাউন্ডেশনের, আরেকটি সমাজকল্যাণের লাইসেন্স। সমাজকল্যাণের লাইসেন্সে হতদরিদ্রদের আশ্রয়, সেবা দেওয়া ও চিকিৎসার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত। এ সময় বিচারক চিকিৎসার জন্য আশ্রমে কী কী ব্যবস্থা আছে, জানতে চাইলে মিল্টন সমাদ্দার বলেন, চিকিৎসার জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত আশ্রমে ১৩৫ জন মারা গেছেন। তাদেরকে কবরস্থ করার রশিদও আছে। মৃতদের কবর দেওয়ার বিষয়ে একাধিক মন্ত্রণালয়ে ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো সহযোগিতা পাননি। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় আশ্রমের নিজস্ব অর্থায়নে মৃতদের কবরস্থ করা হয়।

বর্তমানে আশ্রমে ২৫৬ জন অসহায় মানুষ অবস্থান করছেন। তাদের সবাই বেওয়ারিশ। ছয়জন গর্ভবতী মহিলাও আছেন। তাদের দেখভাল করার জন্য একজন ডাক্তার আছেন। গর্ভবতী নারীদের পাশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজার করানো হয় আশ্রমের নিজস্ব অর্থায়নে। আশ্রমে বেওয়ারিশ লোক ছাড়া অন্য কারও থাকার সুযোগও নেই বলে আদালতকে জানান মিল্টন সমাদ্দার।

ডেথ সার্টিফিকেটের বিষয়ে জানতে চাইলে মিল্টন সমাদ্দার জানান, যাদের নাম-ঠিকানা পাওয়া যায় না, তাদের কবরস্থ করার জন্য সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়। এর বাইরে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই। কোনোটাতেই তার স্বাক্ষর নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাক্ষর করে থাকেন।

সার্টিফিকেটে কী লেখা থাকে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, কী কারণে লোকটি মারা গেছে, সেটাই লেখা থাকে। 

মৃত্যুর কারণ কীভাবে নিশ্চিত হন, এমন প্রশ্নের জবাবে মিল্টন বলেন, আমাদের একজন ডাক্তার আছেন। তিনি যখন তাদের দেখে যান, কার কী সমস্যা, সেটা উল্লেখ করা থাকে। তার কী কী রোগ ছিল, সার্টিফিকেটও লেখা হয় সেটার ওপর ভিত্তি করে। ডাক্তার পরিচয়ে কোনোদিন কোনো কাগজে স্বাক্ষর করিনি। 

এ সময় তিনি একটা সুযোগ চান, যাতে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে আশ্রমটি ভালোভাবে চালাতে পারেন।

আয়-ব্যয়ের বিষয়ে তিনি জানান, অডিট ফার্ম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে অডিট করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করা আছে।