সরকারের ব্যাংক ঋণে বেসরকারি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে

কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে না বলে অভিমত সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)।

সরকারের ব্যাংক ঋণে বেসরকারি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে

প্রথম নিউজ, অনলাইন: অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি পূরণের জন্য ব্যাংকিং খাত থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। এর ফলে বেসরকারি খাতের জন্য ঋণের জায়গা ছোট হয়ে যাবে। বেসরকারি খাত চাহিদা অনুযায়ী ঋণ পাবে না। এতে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ব্যাহত হবে। কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে না বলে অভিমত সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)। কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়াটা ইতিবাচক হয়নি মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, এর ফলে অনিয়ম উৎসাহিত হবে। রাজনৈতিকভাবে দুর্নীতিবাজরা সহায়তা পাবেন। এ ছাড়া বাজারে বিশৃঙ্খলাও চলমান থাকবে। কালো টাকার মালিকরা অর্থ পাচারে অংশ নেন। এছাড়া সরকারের প্রকল্প গ্রহণ ও ব্যয়ের সমালোচনাও করেন বক্তারা।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪.৬ শতাংশ। এই ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা; যা মোট ঘাটতির ৫৩.৭১ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে এটি একটি অসামঞ্জস্য প্রাক্কলন। এটি অর্জনযোগ্য নয়।

ড. ফাহমিদা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ৬.৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। এরপর বেসরকারি বিনিয়োগ লক্ষ্যও ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু সরকার ব্যাংক থেকে টাকা নেয়ার ফলে বেসরকারি খাতের জন্য ঋণের জায়গা ছোট হয়ে যাবে। বেসরকারি খাত চাহিদা অনুযায়ী ঋণ পাবে না। এতে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ব্যাহত হবে। কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে না।

সরকারের ঋণের বোঝা আরও বাড়বে উল্লেখ করে সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক এরপর বলেন, সুদের হার বৃদ্ধির কারণে এমনিতেই চাপের মধ্যে রয়েছে বেসরকারি খাত। এখন সুদহার বাজারের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে; যদিও সুদহার বাজারের হাতে ছেড়ে দেয়া ছাড়া কোনো উপায়ও ছিল না। তার উপরে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেয়ার ফলে সুদের হার আরও বাড়বে। এতে সরকারের ঋণের বোঝাও আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যার নাম উচ্চ মূল্যস্ফীতি। বৈদেশিক মুদ্রার অবনমনকে আমরা উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখছি। প্রায় ১০ শতাংশ থেকে একবছরে মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা অবাস্তব। মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক করা হলেও আর্থিকনীতিতে সরকার পরিবর্তন আনেনি।
অনুষ্ঠানে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এমএ মান্নান বলেন, মন্ত্রী থাকার সময় তার হাত দিয়ে এমন প্রকল্প একনেকে গেছে, যেগুলোর সঙ্গে তিনি মনেপ্রাণে একমত ছিলেন না। তিনি বলেন, আমরা বাস করি ভূ-তলে (মাটিতে), আর বিনিয়োগ করি পাতালে। এ ধরনের অনেক প্রকল্প বাংলাদেশে আছে।
এমএ মান্নান বলেন, বাজেটে কোথায় ব্যয় করছি, সেখান থেকে আমরা কী পাচ্ছি- এসব বিচার করা দরকার। আদৌ কোনো ফল পাচ্ছি কি না, তাও দেখা দরকার।’ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রায় ১০ বছরের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে কোনো কোনো জায়গায় আমার ভিন্নমত অবশ্যই আছে।

মূল্যস্ফীতির এ সময়ে ভ্যাট আরোপ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের কষ্ট বেড়েছে- এ যুক্তি মানতে রাজি নন এমএ মান্নান। তিনি বলেন, আমি ভ্যাটের সমর্থক। অনেকে বলেন, গরিবের ওপর কেন চাপানো হলো। আসলে এটা অজান্তে হয়, যার ওপর চাপে সে টেরও পায় না। গরিবের জন্য চাল, ডালে ভ্যাট নেই। অন্যগুলো যা আমরা সবাই ব্যবহার করি, সেগুলোর ক্ষেত্রে ৫০ টাকার মালে ৫ টাকা ভ্যাট থাকলে বোঝা যায় না।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, প্রবৃদ্ধির একটা বাইপ্রোডাক্ট হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। একটাকে ছেড়ে আরেকটা করা যাবে না। প্রবৃদ্ধি না করলে আমাদের জীবনযাত্রা নিচে নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে যাবে, কিন্তু আমাদের সবকিছু নেমে আসবে। এই ঝুঁকি আমাদের নিতে হবে। বড় অর্থনীতির দেশগুলো এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই গেছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, এখন ৫০ শতাংশের বেশি তরুণ এ দেশে আর ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে না। এ দেশের পরিশ্রমী উদ্যোক্তারা সোনার ডিম পাড়া হাঁস। কিন্তু এসব হাঁস জবাই করে দেয়ার চেষ্টা চলছে। ব্যবসার পরিবেশ তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু লাল ফিতার দৌরাত্ম্য তো এখনো প্রবলভাবে বিদ্যমান। তাই দেশের সম্ভাবনা এখন রাজনৈতিক অর্থনীতির লৌহ ত্রিভুজে আটকে আছে। এ ত্রিভুজ ভাঙতে গেলে বাজেটের আলোচনায় এসব সমস্যা তুলে ধরতে হবে।

অনুষ্ঠানে বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ বলেন, বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা সচরাচর বাজেট নিয়ে কথা বলেন। এবার তারা একটু নার্ভাস। ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিয়ে গেলে তাদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যাবে। তারা চিন্তিত ব্যাংক থেকে সরকার টাকা তুলে নিয়ে গেলে তারা কীভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, গত দুই বছর ধরে সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের পতনের প্রেক্ষিতে নতুন অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির চাপ কমানো ও বিদেশি মুদ্রার স্থিতি ধরে রাখার চেষ্টার বিষয়টিকে প্রাধান্যের শীর্ষে রাখার কথা থাকলেও প্রস্তাবিত বাজেটে তা দেখা যায়নি। তিনি বলেন, গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে ১০ শতাংশের কাছাকাছি থেকে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনাও সম্ভব হবে না। এই মূল্যস্ফীতি কমাতে মুদ্রা সরবরাহে সংকোচনমূলক উদ্যোগ নেয়া হলেও ফিসক্যাল পলিসিতে এর প্রতিফলন নেই। আবার বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়নেও কোনো পদক্ষেপ ঘোষণা করা হয়নি বাজেটে, মন্তব্য করে ফাহমিদা বলেন, সবমিলে মূল্যস্ফীতি নামিয়ে আনা দুরূহ হবে।
 

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর সঞ্চালনায় সংলাপে আরও বক্তব্য দেন সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এমএ মান্নান এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান ও রাশেদা কে. চৌধূরী, সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ ও শ্রমিকনেতা রাজেকুজ্জামান রতন। 

আলোচনায় বক্তারা বলেন, চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বাড়বে। ডলারের উচ্চদাম, আর্থিক খাতে বিশৃঙ্খলা ও সুশাসনের অভাব রয়েছে। বাজেটে এসব বিশৃঙ্খলা দূর করে স্বস্তি তৈরির কোনো নির্দেশনা নেই। ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ নেই, বিদ্যুৎ-জ্বালানি নিয়েও চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সুখবর নেই রিজার্ভের ক্ষেত্রেও। ট্যাক্স-ভ্যাটের আওতা ও আদায় বাড়াতে গিয়ে হয়রানির শিকার হবেন সাধারণ মানুষ। সুখবর নেই কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার বাজেটেও।

কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়াটা ইতিবাচক হয়নি মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, এর ফলে অনিয়ম উৎসাহিত হবে। রাজনৈতিকভাবে দুর্নীতিবাজরা সহায়তা পাবেন। এ ছাড়া বাজারে বিশৃঙ্খলাও চলমান থাকবে। কালো টাকার মালিকরা অর্থ পাচারে অংশ নেন। এছাড়া সরকারের প্রকল্প গ্রহণ ও ব্যয়ের সমালোচনাও করেন বক্তারা।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪.৬ শতাংশ। এই ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা; যা মোট ঘাটতির ৫৩.৭১ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে এটি একটি অসামঞ্জস্য প্রাক্কলন। এটি অর্জনযোগ্য নয়।

ড. ফাহমিদা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ৬.৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। এরপর বেসরকারি বিনিয়োগ লক্ষ্যও ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু সরকার ব্যাংক থেকে টাকা নেয়ার ফলে বেসরকারি খাতের জন্য ঋণের জায়গা ছোট হয়ে যাবে। বেসরকারি খাত চাহিদা অনুযায়ী ঋণ পাবে না। এতে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ব্যাহত হবে। কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে না। সরকারের ঋণের বোঝা আরও বাড়বে উল্লেখ করে সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক এরপর বলেন, সুদের হার বৃদ্ধির কারণে এমনিতেই চাপের মধ্যে রয়েছে বেসরকারি খাত। এখন সুদহার বাজারের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে; যদিও সুদহার বাজারের হাতে ছেড়ে দেয়া ছাড়া কোনো উপায়ও ছিল না। তার উপরে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেয়ার ফলে সুদের হার আরও বাড়বে। এতে সরকারের ঋণের বোঝাও আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যার নাম উচ্চ মূল্যস্ফীতি। বৈদেশিক মুদ্রার অবনমনকে আমরা উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখছি। প্রায় ১০ শতাংশ থেকে একবছরে মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা অবাস্তব। মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক করা হলেও আর্থিকনীতিতে সরকার পরিবর্তন আনেনি।
অনুষ্ঠানে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এমএ মান্নান বলেন, মন্ত্রী থাকার সময় তার হাত দিয়ে এমন প্রকল্প একনেকে গেছে, যেগুলোর সঙ্গে তিনি মনেপ্রাণে একমত ছিলেন না। তিনি বলেন, আমরা বাস করি ভূ-তলে (মাটিতে), আর বিনিয়োগ করি পাতালে। এ ধরনের অনেক প্রকল্প বাংলাদেশে আছে।
এমএ মান্নান বলেন, বাজেটে কোথায় ব্যয় করছি, সেখান থেকে আমরা কী পাচ্ছি- এসব বিচার করা দরকার। আদৌ কোনো ফল পাচ্ছি কি না, তাও দেখা দরকার।’ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রায় ১০ বছরের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে কোনো কোনো জায়গায় আমার ভিন্নমত অবশ্যই আছে।

মূল্যস্ফীতির এ সময়ে ভ্যাট আরোপ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের কষ্ট বেড়েছে- এ যুক্তি মানতে রাজি নন এমএ মান্নান। তিনি বলেন, আমি ভ্যাটের সমর্থক। অনেকে বলেন, গরিবের ওপর কেন চাপানো হলো। আসলে এটা অজান্তে হয়, যার ওপর চাপে সে টেরও পায় না। গরিবের জন্য চাল, ডালে ভ্যাট নেই। অন্যগুলো যা আমরা সবাই ব্যবহার করি, সেগুলোর ক্ষেত্রে ৫০ টাকার মালে ৫ টাকা ভ্যাট থাকলে বোঝা যায় না।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, প্রবৃদ্ধির একটা বাইপ্রোডাক্ট হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। একটাকে ছেড়ে আরেকটা করা যাবে না। প্রবৃদ্ধি না করলে আমাদের জীবনযাত্রা নিচে নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে যাবে, কিন্তু আমাদের সবকিছু নেমে আসবে। এই ঝুঁকি আমাদের নিতে হবে। বড় অর্থনীতির দেশগুলো এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই গেছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, এখন ৫০ শতাংশের বেশি তরুণ এ দেশে আর ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে না। এ দেশের পরিশ্রমী উদ্যোক্তারা সোনার ডিম পাড়া হাঁস। কিন্তু এসব হাঁস জবাই করে দেয়ার চেষ্টা চলছে। ব্যবসার পরিবেশ তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু লাল ফিতার দৌরাত্ম্য তো এখনো প্রবলভাবে বিদ্যমান। তাই দেশের সম্ভাবনা এখন রাজনৈতিক অর্থনীতির লৌহ ত্রিভুজে আটকে আছে। এ ত্রিভুজ ভাঙতে গেলে বাজেটের আলোচনায় এসব সমস্যা তুলে ধরতে হবে।

অনুষ্ঠানে বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ বলেন, বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা সচরাচর বাজেট নিয়ে কথা বলেন। এবার তারা একটু নার্ভাস। ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিয়ে গেলে তাদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যাবে। তারা চিন্তিত ব্যাংক থেকে সরকার টাকা তুলে নিয়ে গেলে তারা কীভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, গত দুই বছর ধরে সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের পতনের প্রেক্ষিতে নতুন অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির চাপ কমানো ও বিদেশি মুদ্রার স্থিতি ধরে রাখার চেষ্টার বিষয়টিকে প্রাধান্যের শীর্ষে রাখার কথা থাকলেও প্রস্তাবিত বাজেটে তা দেখা যায়নি। তিনি বলেন, গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে ১০ শতাংশের কাছাকাছি থেকে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনাও সম্ভব হবে না। এই মূল্যস্ফীতি কমাতে মুদ্রা সরবরাহে সংকোচনমূলক উদ্যোগ নেয়া হলেও ফিসক্যাল পলিসিতে এর প্রতিফলন নেই। আবার বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়নেও কোনো পদক্ষেপ ঘোষণা করা হয়নি বাজেটে, মন্তব্য করে ফাহমিদা বলেন, সবমিলে মূল্যস্ফীতি নামিয়ে আনা দুরূহ হবে।