সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধাক সরকারের দাবিতে বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
আজ বুধবার বিকেলে আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে একদফা যৌথ ঘোষণার সমাবেশে তিনি এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধাক সরকারের দাবিতে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি জানান, এক দফার যেীথ ঘোষণা। অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আগামী ১৮ ও ১৯ জুলাই দুই দিনের পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হবে। ১৮ জুলাই ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে এবং ১৯ জুলাই ঢাকা মহানগরীতে এ পদযাত্রা হবে অনুষ্ঠিত হবে।১৮ জুলাই ঢাকা মহানগরীতে সকাল ১০টায় গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ি পর্যন্ত এ পদযাত্রাটি অনুষ্ঠিত হবে। এবং ১৯ জুলাই ঢাকা মহানগরীর উত্তরার আব্দুল্লাপুর থেকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত পদযাত্রা হবে।
আজ বুধবার বিকেলে গণতন্ত্রের ঘাতক, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও সর্বনাশা অনাচারে লিপ্ত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যুগপৎ ধারায় বৃহত্তর গণআন্দোলনের একদফা যৌথ ঘোষণার সমাবেশে তিনি এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা, নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির এক দফা ঘোষণা করছি।’
ফখরুল বলেন, ‘এ কর্মসূচি ঘোষণা দিলাম। ওইদিন কর্মসূচি করার আগেই দাবি মেনে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দেবেন, পদত্যাগ করে বিদায় নেবেন। যদি বিদায় না নেন, তারপর তো আরও কর্মসূচি আসছেই। কঠোর কর্মসূচি দিয়ে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে জনগণ।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকের এই এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা ব্যক্তি মির্জা ফখরুলের নয়, তরুণ প্রজন্মের তরুণ্যের নেতা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা। দেশের ১৮ কোটি মানুষ, যারা গণতন্ত্রের জন্য তাকিয়ে আছেন, তাদের জন্য ঘোষণা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমেই আমরা ক্ষমতার পরিবর্তন চাই। তবে সেই নির্বাচন আপনার মতো শেয়ালের হাতে হোক, তা চাই না। আপনি বারবার নির্বাচন গিলে খেয়ে ফেলেছেন। ২০১৪ সালে খেয়েছেন, ২০১৮ সালে একবার খেয়েছেন, আবারও খেতে চাইছেন। সেই সুযোগ আর দেওয়া হবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। জনগণ ঠিকমতো খেতে পারে না। কিন্তু আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজেরা ভাল আছে। তারা বলেছিল ঘরে ঘরে চাকরি দিবে। ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে। এসময় তিনি বলেন, আপনারা চাকরি পেয়েছেন ? ১০ টাকা কেজি দরে চাল পাচ্ছেন? এ সময়ে উপস্থিত জনতা না সূচক উত্তর দেন। তিনি বলেন, আপনারা চাকরী না পেলেও আওয়ামী লীগের লোকেরা চাকরী পেয়েছে। কিন্তু তাদের ২৫ লক্ষ টাকা পযর্ন্ত ঘুস দিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সরকার বাংলাদেশ বিরোধী সরকার, গণতন্ত্র বিরোধী সরকার। এই লুটেরা সরকারকে সরিয়ে দিতে হবে। আজকে বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। এই সমাবেশ ঠেকানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছে। ঠিকিয়ে রাখতে পারেনি। এই সংগ্রাম বিএনপির নয়, তারেক রহমানের নয়। এই সংগ্রাম মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার সংগ্রাম।
শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আপনি ইলেকশন ইলেকশন করছেন। আপনি নিজেই তো দাঁড়াতে পারছেন না। আপনার অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। আপনি বিএনপিকে এখনো ভালো করে বুঝতে পারেন নাই। ছাত্রদল যুবদল অঙ্গসংগঠনকে এখনো ভালো করে বুঝতে পারেন নাই। তারা নীরব থাকে। যদি একবার জ্বলে উঠে তাহলে স্বৈরাচারীর পতন নিশ্চিত হয়ে পড়ে। তাদের কাছে স্বৈরাচারী এরশাদ টিকতে পারে নাই আপনিও পারবেন না।
এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলন, দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার আন্দোলন এই আন্দোলন সফল হতে হবে। কোনভাবে পিছুটান নেওয়া যাবে না।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহাজান ওমর, ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, জয়নুল আবেদিন, নিতাই রায় চৌধুরী, এডভোকেট আহমদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওণকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ ।