সরকার বিরোধী বিক্ষোভে সামিল হওয়ার জের, আরো তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিলো ইরান
ইতিমধ্যেই চারজন বিক্ষোভকারীকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। আরও বেশ কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হয়েছে, নয়তো জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।
প্রথম নিউজ ডেস্ক: দেশব্যাপী সরকার বিরোধী বিক্ষোভে সামিল থাকার জন্য তিন ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইরানের বিচার বিভাগ। নভেম্বরে ইসফাহানে তিনজন নিরাপত্তা কর্মীকে গুলি করে হত্যা করার দায়ে ওই ৩ ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে যে তারা অন্যায় বিচারের শিকার হয়েছে এবং তাদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই চারজন বিক্ষোভকারীকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। আরও বেশ কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হয়েছে, নয়তো জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।
শুক্রবার যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় তাঁরা হলেন- মাজিদ কাজেমি, (৩০), সালেহ মিরহাশেমি (৩৬) এবং সাইদ ইয়াকুবি (৩৭)। গত বছর ১৬ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহর ইসফাহানে বিক্ষোভের সময় বাসিজ আধাসামরিক বাহিনীর দুই সদস্য এবং একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যার দায়ে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছিলো। যদিও বেশ কয়েকটি সূত্র অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে বলেছে যে ওই ব্যক্তিদের জোর করে গুম করা হয়েছিল। তারপর তাদের নির্যাতন করে অপরাধমূলক মামলার ভিত্তি তৈরি করে বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। এমন অভিযোগও উঠেছে যে কাজেমিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁর ভাইকে নির্যাতন করার একটি ভিডিও দেখানো হয়। বিবৃতি না দিলে তার ভাইকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়।
কাজেমি প্রহসনের শিকার হয়েছে বলে দাবি একাধিক সূত্রের। আদালত কাজেমি এবং অন্য দুই ব্যক্তিকে "ঈশ্বরের বিরুদ্ধে শত্রুতার" জন্য দোষী সাব্যস্ত করে মাত্র চার দিনের বিচারের পরে জানুয়ারিতে মৃত্যুদণ্ড দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইরান (CHRI) এর মতে, অপরাধীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল, প্রসিকিউটররা জোরপূর্বক স্বীকারোক্তির উপর নির্ভর করে মামলা চালিয়ে যায়। মামলাটি আসলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিলো বলে মনে করছে CHRI।
গত সপ্তাহে, ইরান কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে সুপ্রিম কোর্ট মাজিদ, সালেহ এবং ইয়াকুবির সাজা বহাল রেখেছে।অ্যামনেস্টির মধ্যপ্রাচ্যের ডেপুটি ডিরেক্টর ডায়ানা এলতাহাউই এক বিবৃতিতে বলেছেন - ''এই তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা আসলে ইরানি জনগণের অধিকারের দাবিতে অবিচল প্রতিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার একটি নির্মম পদক্ষেপ। এঁদের শাস্তি দিতে জঘন্য পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছিল। জীবনের অধিকার এবং ন্যায্য বিচারের প্রতি নির্লজ্জ অবহেলার উদাহরণ হয়ে থাকবে এই সাজা।
''জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক ইরানে একের পর এক মৃত্যুদণ্ডর সাজা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।তিনি জাতিসংঘের সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন যে এই বছর এখনো পর্যন্ত কমপক্ষে ২০৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।