সুরা ওয়াকিয়া তিলাওয়াতে অভাব দূর হয়
প্রথম নিউজ, অনলাইন:
সুরা ওয়াকিয়া: ১-৯৬
এ সুরা নাজিল হয়েছে মক্কায়। এর আয়াত ৯৬টি এবং রুকু ৩টি।
প্রথম থেকে শেষ রুকু, ১ থেকে ৯৬ নম্বর আয়াত। এ সুরাও শুরু হয়েছে কেয়ামতের আলোচনা দিয়ে। কেয়ামতের দিন ডানপন্থি, বামপন্থি ও অগ্রগামী দলের লোকদের অবস্থা কী হবে তা আলোচনা করা হয়েছে বিস্তারিত। সুরার শেষের দিকে পবিত্র কুরআনের মাহাত্ম্য, মর্যাদা আলোচনা হয়েছে বিশদভাবে।
সুরা ওয়াকিয়ার ফজিলত অনেক বেশি। এই সুরা পাঠ করলে কখনো অভাব আসে না। দরিদ্রতা কখনো গ্রাস করতে পারে না। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সুরা ওয়াকিয়াহ তিলাওয়াত করবে, তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করবে না।’ (বাইহাকি, শুআবুল ঈমান; হাদিস : ২৪৯৮)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) যখন অন্তিম রোগশয্যায় শায়িত ছিলেন, তখন হজরত ওসমান (রা.) তাকে দেখতে যান।
এসময় তিনি জিজ্ঞেস করেন-
হজরত ওসমান: আপনার অসুখটা কি?
হজরত ইবনে মাসউদ: আমার পাপসমূহই আমার অসুখ।
হজরত ওসমান: আপনার বাসনা কি?
হজরত ইবনে মাসউদ: আমার পালনকর্তার রহমত কামনা করি।
হজরত ওসমান: আমি আপনার জন্যে কোন চিকিৎসক ডাকব কি?
হজরত ইবনে মাসউদ: চিকিৎসকই আমাকে রোগাক্রান্ত করেছেন।
হজরত ওসমান: আমি আপনার জন্যে সরকারী বায়তুল মাল থেকে কোন উপঢৌকন পাঠিয়ে দেব কি?
হজরত ইবনে মাসউদ: এর কোন প্রয়োজন নেই।
হজরত ওসমান: উপঢৌকন গ্রহণ করুন তা আপনার পর আপনার কন্যাদের উপকারে আসবে।
হজরত ইবনে মাসউদ: আপনি চিন্তা করছেন যে, আমার কন্যারা দারিদ্র ও উপবাসে পতিত হবে। কিন্তু আমি এমন চিন্তা করি না। কারণ, আমি কন্যাদেরকে জোর নির্দেশ দিয়ে রেখেছি যে, তারা যেন প্রতিরাত্রে সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করে।
আমি রাসুলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করবে, সে কখনও উপবাস করবে না।’
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করবে না।
হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) তার মেয়েদেরকে প্রত্যেক রাতে এ সুরা তিলাওয়াত করার আদেশ করতেন। (বাইহাকি: শুআবুল ঈমান-২৪৯৮)
সুরা ওয়াকিয়ায় আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা ভাগ হয়ে যাবে তিন ভাগে। তখন ডান হাতের সঙ্গীরা? কী হবে ডান হাতের সঙ্গীদের? আর বাম হাতের সঙ্গীরা? কী হবে বাম হাতের সঙ্গীদের? আর যারা আগে যাবে তারা তো আগেই থাকবে ।’
কিয়ামতে মানুষ তিন ভাগে বিভক্ত হবে: সৌভাগ্যবান, দুর্ভাগা, ভালো কাজে অগ্রগামীরা। ভালো কাজে অগ্রগামী কারা? তারা পাবে অনন্ত পুরস্কার। তারা আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত।
সৌভাগ্যবান লোকদের থাকবে পুরস্কার। সৌভাগ্যবান লোক হবে কারা?
দুর্ভাগা লোক হবে কারা? দুর্ভাগাদের পরকালীন কঠিন শাস্তির বিবরণ।
এই সুরার মাধ্যমে কেয়ামত সম্পর্কে জানা যায়। যখন কেয়ামত সংঘটিত হবে তখন পৃথিবীতে ভূমিকম্প তৈরি হবে। পাহাড় তুলা হয়ে উড়ে যাবে।
আল্লাহ বলেন, যখন যা আসার তা আসবে, আর তাকে কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। তখন কাউকে কাউকে নিচে নামানো হবে এবং কাউকে কাউকে ওপরে ওঠানো হবে। পৃথিবী তখন প্রবল ঝাঁকুনিতে প্রকম্পিত হবে, পাহাড়গুলো যাবে ভেঙেচুরে। ধুলোয় গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাবে।