স্ত্রী-শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহিদুল হক আধার জানান, রায়ের বিষয়ে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

স্ত্রী-শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

প্রথম নিউজ, শেরপুর: শেরপুরে স্ত্রী ও শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় মো. ইসমাইল হোসেন (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।  মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ইসমাইল ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।

চাঞ্চল্যকর এই জোড়া খুনের মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে জেলা দায়রা আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল বলেন, ইসমাইল হোসেন তার স্ত্রী বিলকিস আক্তার (২৫) ও মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ২০১৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ঈদুল আজহায় বিলকিস মেয়েকে নিয়ে ভাই আব্দুল খালেকের বাড়িতে বেড়াতে যান। ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে ইসমাইল ওই বাড়িতে গেলে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে স্ত্রী বিলকিস আক্তারের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয় পড়েন। এক পর্যায়ে ধারালো দা দিয়ে তাকে উপুর্যপরি কোপাতে থাকেন। বিলকিসের চিৎকারে শাশুড়ি খালেদা বেগম (৫০) ও মামাশ্বশুর নুরুল আমিন, প্রতিবেশী কুদ্দুস মিয়া ও সেলিনা বেগম এগিয়ে গেলে তাদেরও কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। এসময় আশপাশের লোকজন ইসমাইলকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

অন্যদিকে স্ত্রী-শাশুড়িসহ পাঁচজনকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরদিন বিলকিস আক্তার মারা যান। এরপর শাশুড়িসহ চারজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুদিন পর শাশুড়িও মারা যান এবং অন্য তিনজন পঙ্গুত্ববরণ করেন।

এ ঘটনায় ২৭ সেপ্টেম্বর বিলকিসের বড়ভাই আব্দুল খালেক নালিতাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর ২ অক্টোবর ইসমাইল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২৮ মে একমাত্র আসামি ইসমাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম। ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি বিচারিক আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন এবং পরবর্তীতে সংবাদদাতা বাদী, জবানবন্দি গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসকসহ ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও চলতি বছরের ৫ মার্চ উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি গ্রহণ করা হয়। অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ইসমাইলকে সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত করেন।

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহিদুল হক আধার জানান, রায়ের বিষয়ে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।