লুটপাটকারীদের রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে বিধি নিষেধ-অলি আহমদ
প্রথম নিউজ, ঢাকা: লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, ‘ব্যাংকের টাকা ঋণের নামে লুটপাট হয়েছে। ঋণের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। যে যা লুট করছে তার তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশ করেনি। অনেক ব্যাংকে নগদ টাকা নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রতিনিয়ত টাকা ধার করে দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা করছে। টাকা পাচারের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অন্য ব্যাংকের অবস্থা খুবই করুণ।’
তিনি বলেন, ‘টাকা পাচারকারী এবং লুটপাটকারীদের তথ্য ফাঁস হবে বিধায় বাংলাদেশ ব্যাংক অলিখিতভাবে সাংবাদিকদের প্রবেশধিকারে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। টাকা পাচারকারী এবং ব্যাংক লুটপাটকারীরাই ৯০ শতাংশ ঘরবাড়ি বিদেশে করেছে।’
শনিবার (৪ মে) বিকেলে মগবাজারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অলি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের স্বীকার করেছেন তিন বিদেশি শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে কাজ করেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, এ সরকার বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল। দেশ স্বাধীন হলেও বর্তমান সরকার স্বাধীন না। স্বাধীন দেশ, বাংলাদেশের জনগণের চাওয়া অনুযায়ী স্বাধীনভাবে দেশ চালাতে হবে।’
তিনি বলেন, আই এ টি এ এর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ। আই এ টি এ-ভুক্ত বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোর কাছে পাওনা দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এই পাওনা পরিশোধ না করলে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক বিমানগুলো নামবে কি না সন্দেহ আছে। গ্যাসের অভাবে অনেক কারখানা বন্ধ। ফলে শ্রমিকেরা অনেকে বেতন পাচ্ছে না। ব্যাংকের দেনা পরিশোধ হচ্ছে না। যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে।
অলি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে চট্টগ্রাম, চন্দনাইশ, পটিয়া, মিরসরাই, ফটিকছড়িসহ পাহাড় কেটে ইটের ভাটা বানাচ্ছে এবং বসতি স্থাপন করছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি। ডলার সংকটের কারণে কাঁচামালের আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ফলে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাসের দাম সরকার কয়েক দফা বৃদ্ধি করায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে ফলে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে সরকারি দলের অনেক রাজনীতিক এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যাপক দুর্নীতির ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সরকার এবং দুদক নিরব। জনগণ অসহায়। বর্তমানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া। সহসায় উদ্ধার হওয়া সম্ভবনা নেই। সুতরাং যুব সমাজ ও দেশের সর্বস্তরের জনগণকে আবেদন করবো দেশকে এ অসহনীয় অবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করুন। অন্যথায় দেশের অবস্থা আরও ভয়াবহ হতে পারে। যার দায়-দায়িত্ব সবাইকে বহন করতে হবে।’
তিনি দেশীয় উদ্যোক্তাদের অনুরোধ করে বলেন, দেশীয় মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে আসুন। এতে করে বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীলতা কমে যাবে। একে অন্যের দিকে তাকিয়ে বসে থাকলে চলবে না।