রাশিয়ার ‘বিদ্যুৎ সন্ত্রাসে’ ৪৫ লাখ ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎহীন: জেলেনস্কি

রাশিয়ার ‘বিদ্যুৎ সন্ত্রাসে’ ৪৫ লাখ ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎহীন: জেলেনস্কি
রাশিয়ার ‘বিদ্যুৎ সন্ত্রাসে’ ৪৫ লাখ ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎহীন: জেলেনস্কি

প্রথম নিউজ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলাকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে তুলনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে অগ্রগতি সীমিত হয়ে যাওয়ায় রাশিয়া এখন ‘বিদ্যুৎ সন্ত্রাস’ শুরু করেছে। তাদের হামলার কারণে ইউক্রেনের ৪৫ লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় এসব দাবি করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। খবরে জানানো হয়, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে টার্গেট করে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালাতে শুরু করেছে রাশিয়া। মূলত ক্রাইমিয়া সেতুতে ট্রাক বোমা হামলার পর গত ১০ই অক্টোবর থেকে এ ধরণের হামলা শুরু হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির মতে, গত প্রায় এক মাসের হামলায় ইউক্রেনের এক তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে জনগণকে বিদ্যুৎ ব্যবহার কমিয়ে আনতে সরকারের তরফ থেকে প্রায় প্রতিদিনই অনুরোধ জানানো হচ্ছে। এছাড়া ৪৫ লাখ মানুষ পুরোপুরি বিদ্যুৎহীন হয়ে আছে। রুশ কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, খেরসন থেকে রাশিয়ার সেনারা কিছুটা পিছু হটবে। যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের সেনাদের অব্যাহত চাপের কারণে খেরসন থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিয়েছে রাশিয়া।

এখন সামরিক বাহিনীর সদস্যদেরও সরিয়ে নেয়া হবে বলে ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে। যদিও এরপরেও খেরসনের বড় অংশটিই রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ থাকবে, তবে গুরুত্বপূর্ণ শহরাঞ্চলের দখল পেয়ে যাবে ইউক্রেন। জেলেনস্কির দাবি, যুদ্ধক্ষেত্রে পরাজয় ঠেকাতে না পেরে এখন বেসামরিক টার্গেটে হামলা করছে মস্কো। তিনি আরও বলেন, ফ্রন্টলাইনে রাশিয়া ব্যর্থ হচ্ছে, তাই ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলা করছে তারা। রাশিয়া যে ‘সন্ত্রাসবাদের’ আশ্রয় নিয়েছে তা প্রমাণ করে আমাদের শত্রুরা এখন দুর্বল হয়ে পড়ছে। তারা যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনকে পরাজিত করতে পারছে না। তাই তারা আমাদের জনগণের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে যে, ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে লক্ষ্যবস্তু মনে করছে তারা। 

রাশিয়ার সেনারা খেরসন ছেড়ে যাচ্ছে বলে যখন রিপোর্ট আসে, ঠিক তখনই জেলেনস্কি নতুন এই অভিযোগ উত্থাপন করলেন। রাশিয়ার কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, চাপের মুখে তাদেরকে খেরসন ছেড়ে পিছু হটতে হচ্ছে। কিরিল স্ট্রেমাসভ নামে খেরসনের এক কর্মকর্তা দেশটির এক গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের হয়তো এ অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পশ্চিমা কর্মকর্তা বলেন, বেশিরভাগ রাশিয়ান কমান্ডিং অফিসারকে ইতিমধ্যেই শহর থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। শহরের নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করার পরিবর্তে তারা এখন দিনিপ্রো নদীর ওপারে তাদের প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান তৈরি করছে। 
খেরসন শহরের অভ্যন্তরে ঠিক কী ঘটছে তা জানা মুশকিল। রাশিয়া খেরসন থেকে হাজার হাজার নাগরিককে দেশের অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, ইউক্রেনের সেনারা দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরটি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম। তবে ইউক্রেন বলছে যে, রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের খবরের মধ্যেও তাদেরকে সেখানে এখনও যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। তারা সন্দেহ করছে, রুশ সেনা প্রত্যাহারের খবরটি একটি ফাঁদ। তারা এই ফাঁদের বিষয়টি নিয়ে সতর্ক রয়েছে। 

রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করার এক সপ্তাহের মধ্যেই খেরসন নিজের দখলে নিতে শুরু করে। মার্চ মাসেই এই শহরের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় মস্কোর হাতে। অনেকটা বিনা বাধায় খেরসন রাশিয়ার হয়ে যায়। গত সেপ্টেম্বরে এক বিতর্কিত গণভোটের পর এই অঞ্চলকে নিজের অংশ করে নেয় রাশিয়া। ইউক্রেনের সেনাদের হাতে খেরসনের পতন হবে যুদ্ধে রাশিয়ার জন্য সবথেকে বড় ধাক্কা।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom