রাবিতে নির্যাতনের শিকার হয়ে মেডিকেলে ভর্তি শিক্ষার্থী
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
প্রথম নিউজ, রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে পানি গরম করাকে কেন্দ্র করে এক ছাত্রীকে ৭ দিন ধরে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে অত্র হলের দোলন নামের এক সিনিয়র শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। আজকে নির্যাতন সইতে না পেরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে গেলে পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সুমাইয়া সুলতানা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নুরুন্নাহার দোলন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি অত্র হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক স্মৃতির ইন্ধনে এমন কাজ করেছেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গত ২০শে ফেব্রুয়ারি পানি গরম করাকে কেন্দ্র করে ভুক্তভোগী সুমাইয়ার সঙ্গে অভিযুক্ত দোলনের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দোলন রাগান্বিত হয়ে অকথ্য গালিগালাজ করেন। পরে অভিযুক্ত দোলন ওইদিন রাতেই হলের দায়িত্বরত ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে বসেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সবার সামনে ক্ষমা চাইলেও ছাত্রলীগের দায়িত্বরত নেত্রীরা তাকে বিভিন্নভাবে শাসান। এরপর দোলন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক স্মৃতি রয়ের সহায়তায় প্রভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। ৭ দিন ধরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে রুমে ডাকা ও বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করেন দোলন ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক স্মৃতি রয়। গতকাল অভিযুক্ত দোলনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অত্র হলের প্রভোস্ট ড. ফারজানা কাইয়ুম কেয়া ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে তার কক্ষে ডাকেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং অভিযুক্ত দোলন। ভিতরে আলোচনা চলাকালীন একপর্যায়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে দ্রুত তাকে রাজশাহী মেডিকেলে নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি রামেকের ১৫নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নুরুন্নাহার দোলনকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। এদিকে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোলনসহ অভিযুক্তদের হল থেকে বহিষ্কারসহ ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গমাতার হল প্রাধ্যক্ষ প্রভোস্ট ড. ফারজানা কাইয়ুম কেয়া এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে ইচ্ছুক নন। এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা এম. তারেক নূর বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। ওই শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য রামেকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকেই আমার দপ্তরে ডেকেছি। নির্যাতনের বিষয়ে যথাযথ প্রমাণ পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: