রপ্তানি রেমিট্যান্স নিম্নগতির ফলে বড় ধাক্কা রিজার্ভে
রেমিট্যান্সে ভালো না করা আর হঠাৎ করে রপ্তানি আয় হোঁচট খাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রপ্তানিকারক ও অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, এভাবে কমতে থাকলে রিজার্ভ আরও চাপের মধ্যে পড়বে।
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: নানা উদ্বেগের মধ্যে ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ- এই ৪ মাসে রপ্তানি পণ্য থেকে ৫ বিলিয়ন (৫০০ কোটি) ডলারের বেশি আয় হলেও এপ্রিলে তা বড় ধাক্কা খেয়েছে। নেমে এসেছে ৪ বিলিয়ন ডলারের নিচে। অন্যদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহের গতিও বেশ খানিকটা ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সে কারণে রিজার্ভও কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ছে না। রেমিট্যান্সে ভালো না করা আর হঠাৎ করে রপ্তানি আয় হোঁচট খাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রপ্তানিকারক ও অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, এভাবে কমতে থাকলে রিজার্ভ আরও চাপের মধ্যে পড়বে।
সার্বিক রপ্তানি কমছে: দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলছে ডলার সংকট। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। বরং ডলার সংকট আরও প্রকট হচ্ছে। যার প্রভাবে রিজার্ভ তলানিতে নেমেছে। এই সংকট উত্তরণের অন্যতম উৎস রপ্তানি আয়। কিন্তু সেখানেও সুখবর নেই।
চলতি অর্থবছরের এপ্রিল মাসে বিদেশে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় এসেছে ৩৯১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ০.৯৯ শতাংশ কম। শুধু প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়েছে তা নয়, এপ্রিলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও রপ্তানি পিছিয়ে আছে ১৬.৭৮ শতাংশ। এদিকে তৈরি পোশাকের রপ্তানি বাড়লেও দেশের অন্যান্য প্রধান খাতগুলোর রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমছে। সংকট থেকে বের হতে পারছে না এককালের প্রধান রপ্তানি খাত পাট। এ ছাড়া হিমায়িত ও চিংড়ি মাছ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ও হোম টেক্সটাইল থেকেও রপ্তানি আয় ক্রমান্বয়ে কমছে।
পোশাক রপ্তানিতে ধাক্কা: মোট রপ্তানি আয়ের ৮৫ ভাগ দখল করে আছে তৈরি পোশাক। তৈরি পোশাক রপ্তানি কমলে মোট রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধিতে ধাক্কা লাগে। জুলাই-এপ্রিল সময়ে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প থেকে এসেছে ৪০.৪৯ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪.৯৭ শতাংশ বেশি। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে ৫.৭৭ শতাংশ। গেল এপ্রিল মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩.২৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। আগের বছর একই সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৩.৩৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। অর্থাৎ এপ্রিল মাসে প্রবৃদ্ধি কমেছে ১.০১ শতাংশ।পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ঈদের ছুটির কারণে কয়েক দিন কারখানাগুলোতে উৎপাদন বন্ধ ছিল; রপ্তানি হয়নি। রপ্তানি কমার এটাও একটি কারণ। তবে নানা বাধা বিপত্তির মধ্যদিয়ে যাচ্ছি আমরা।
বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন উদ্যোক্তারা: ভর্তুকি কমাতে বছরে চারবার বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করবে বিদ্যুৎ বিভাগ। সরকার বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দিয়ে আসছে, সুতরাং এ খাতে ভর্তুকি কমানো হলে বিদ্যুতের দাম বাড়বে। তবে তিনমাস অন্তর বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পরিকল্পনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন খাতের শিল্পকারখানার উদ্যোক্তারা। ঢাকা সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে ভর্তুকি কমাতে আগামী ৩ বছরে মোট ১২ বার বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের কথা জানান।
নিট পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিটিএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, সব মিলিয়ে আমরা ভালো নেই। আমাদের অর্ডার কমছে। অর্ডার চলে যাচ্ছে ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায়। আগামীতে রপ্তানি আরও কমবে বলে মনে হচ্ছে। গ্যাস সংকট লেগেই আছে। বিশ্ব পরিস্থিতিও ভালো না। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে রপ্তানি বাড়ার আশা করা বোকামি। আবার নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়লে আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমবে। সিস্টেম লসের নামে চুরি ও ক্যাপাসিটি চার্জ বন্ধ করা হলে ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হবে না।
সংকট কাটছে না পাট খাতে: সংকট থেকে বের হতে পারছে না এককালের প্রধান রপ্তানি খাত পাট। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) জুলাই-এপ্রিল সময়ে খাতভিত্তিক আয়ের তথ্যে দেখা যায়, এই ১০ মাসে পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে ৭১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আয় এসেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭.০৫ শতাংশ কম। সদ্য সমাপ্ত মাসে পাট খাত থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার। অর্থাৎ এই মাসে লক্ষ্যমাত্রা থেকে আয় কম হয়েছে ১৪.৫৬ শতাংশ। এ ছাড়া সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই খাতে রপ্তানি হয় ৯১ কোটি ডলার। ২০১১-১২ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি ছিল ৯৭ কোটি ডলারের। অর্থাৎ ১০ বছরে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়েনি, বরং ৬ শতাংশ কমেছে।
এদিকে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের পাটপণ্য আমদানিতে ভারত অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করলে পাটের রপ্তানি পরিস্থিতি বেশি খারাপ হয়। বাংলাদেশ থেকে প্রতি টন পাটপণ্য আমদানিতে ১৯ থেকে ৩৫২ ডলার পর্যন্ত শুল্ক ধরা হয়। এ সিদ্ধান্তের পরে বিশ্বের কোথাও ভারতের বিকল্প বাজার গড়ে তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। ইপিবি’র তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে দেখা যায়, অ্যান্টি-ডাম্পিং কার্যকর হওয়ার আগের বছর, অর্থাৎ ২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ৪২ হাজার টন পাটপণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। পরের বছর তা ৮০ হাজার টনে নেমে আসে। এর পরের বছরগুলোতে রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে আরও কমতে থাকে।
বাংলাদেশ বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মো. রাশেদুল করিম মুন্না মানবজমিনকে বলেন, দেশের শিল্পগুলো অতি মাত্রায় কাঁচামাল রপ্তানি নির্ভর অবস্থায় আছে। আমরা কাঁচাপাট বা সুতা রপ্তানি করছি শতকরা প্রায় ৮৫ ভাগ। আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণে যখন বিক্রি কমে যাচ্ছে তখন এই খাতের উপর প্রভাব পড়ছে। এ ছাড়া আমাদের উৎপাদিত পণ্য লিমিটেড কয়েকটি মার্কেটে চলে। এজন্য রপ্তানি বাড়ছে না। তিনি বলেন, নীতি সহায়তাও অনুপস্থিত রয়েছে। অন্য খাতগুলোর মতো পাট খাত সুবিধা পাচ্ছে না। ফলে এই খাতের উন্নয়ন হচ্ছে না। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ প্লাস্টিক ব্যাগ নিষিদ্ধ করায় পাট পণ্যের চাহিদা বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার থেকে সহায়তা পেলে এই খাত থেকে ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করা সম্ভব।
পথ হারিয়েছে হোম টেক্সটাইল: সবাইকে চমকে ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি বাণিজ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল হোম টেক্সটাইল। ওই বছর ১৬২ কোটি ১৯ লাখ ৩০ হাজার ডলারের বিদেশি মুদ্রা দেশে এসেছিল এই খাত থেকে, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ৪৩.২৮ শতাংশ বেশি। সেই আশায় ভর করে গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই খাত থেকে প্রায় ২ বিলিয়ন (১৯৮ কোটি) ডলার আয়ের লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। কিন্তু ওই অর্থ বছরে হোম টেক্সটাইল রপ্তানি থেকে আসে ১০৯ কোটি ৫২ লাখ (১.০৯ বিলিয়ন) ডলার। অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে আয় কমে ৩২.৪৭ শতাংশ, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আসে ৪৪.৬৮ শতাংশ। সেই নেতিবাচক ধারা এখনো চলছে। ইপিবি’র তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এই খাত থেকে মাত্র ৭০ কোটি ২৫ লাখ ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৬ শতাংশ কম। লক্ষ্যের চেয়ে আয় কমেছে আরও বেশি, ৩১ শতাংশ।
চিংড়ি ও হিমায়িত মাছের বিশ্ববাজার হারিয়েছে বাংলাদেশ: বিশ্ববাজারে চিংড়ির চাহিদা বাড়লেও এই খাতে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কমেছে। রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে চিংড়ি খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩০০ মিলিয়ন ডলার। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ২৬ শতাংশ কম। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে চিংড়ি রপ্তানি থেকে ২১ কোটি ২২ লাখ ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২১ শতাংশ কম। লক্ষ্যের চেয়ে আয় কমেছে আরও বেশি, ২২ শতাংশ। শুধু চিংড়িই না, হিমায়িত মাছের রপ্তানিও কমেছে। ইপিবি’র প্রতিবেদন বলছে, গত ১০ মাসে হিমায়িত মাছ রপ্তানি করে ৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা আয় হয়েছে। যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৬ শতাংশ কম এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২.৭৭ শতাংশ কম।
হ্যাচারির মালিকদের সংগঠন শ্রিম্প হ্যাচারি এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ও সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেছেন, দেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য চিংড়ি। কিন্তু এই খাতে সংশ্লিষ্টরা কৃষির মতো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না। চিংড়ি খাতেও কৃষির মতো ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে হবে। বিদ্যুতে ভর্তুকি দিতে হবে। ভেন্নামি চিংড়ির গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ভারত ভেন্নামি চিংড়ি চাষ করে যদি এগিয়ে যেতে পারে তাহলে আমরা পারছি না কেন? পণ্যের ব্রান্ডিং করার উপরও গুরুত্ব দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা রাখতে হবে।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানিও কমেছে: চামড়া ও চামড়াজাত খাত থেকে রপ্তানি আয় অব্যাহতভাবে কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে এই খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৮৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৪ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যের চেয়ে আয় কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ।
জাহাজ রপ্তানি কমেছে ৯৭ শতাংশ: রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি নিয়ে আশা জাগিয়েছিল জাহাজ খাত। ইপিবি’র তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জাহাজ রপ্তানি থেকে বাংলাদেশের আয় ছিল ৪৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এরপর ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই খাত থেকে রপ্তানি আয় বেড়ে ১ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলারে দাঁড়ায়। কিন্তু করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এই খাতের রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমেছে। ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) মাত্র ১৭ হাজার ডলারের জাহাজ রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯৬.৭২ শতাংশ এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯৬.৫৫ শতাংশ কম।
অস্বাভাবিক রেমিট্যান্স: ঈদের আগে সাধারণত দেশের প্রবাসী আয় বেড়ে যায়। আর ঈদের পরে কিছুটা কমে। কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বিষয়টি পুরো উল্টো ঘটেছে। অর্থাৎ সদ্য বিদায়ী এপ্রিল মাসের শেষদিকে হঠাৎ করেই অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সদ্য বিদায়ী এপ্রিল মাসে বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিরা ২০৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার সমান ১১০ টাকা ধরে)। তথ্য বলছে, এপ্রিলের শেষ ৩ দিনেই রেমিট্যান্স এসেছে ৩৬ কোটি ডলার। অর্থাৎ শেষ ৪ দিনে গড় রেমিট্যান্স এসেছে ৯ কোটি ৫ লাখ ডলার করে। আর এপ্রিলের শেষ দিন রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ কোটি ডলারের বেশি। অথচ ঈদের আগের ১২ দিনে দেশে এসেছিল ৮৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। সে হিসেবে প্রতিদিন এসেছে ৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। মাসের শেষদিন হঠাৎ করে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
চাপে রিজার্ভ: রপ্তানি কমছেই। এর প্রভাব পড়ছে রির্জাভে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২রা মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ১৯.৯৬ বিলিয়ন ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৫.৩৭ বিলিয়ন ডলার। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই দুই হিসাবেই রিজার্ভ প্রায় একই জায়গায় অবস্থান করছে। তবে চলতি সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে। সেই বিল ১.৩০ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি হবে বলে জানা গেছে। সে হিসাবে আকুর বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসবে। ‘গ্রস’ হিসাবে নামবে ২৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর কাছে ১১.৬৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এই সংকটের সময় রপ্তানি আয় বাড়ায় এক ধরনের স্বস্তি ছিল। কিন্তু এপ্রিলে হোঁচট খাওয়ায় উদ্বেগ বাড়লো। রিজার্ভ আরও কমে যাবে।