রাতের আঁধারে কৃষকের ৩০০ মেহগনি গাছ কেটে দিল দুর্বৃত্তরা
মঙ্গলবার (২১ জুন) ভোরে উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের মিজাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রথম নিউজ, মাগুরা: মাগুরা সদরে রবিউল ইসলাম নামে এক কৃষি উদ্যোক্তার ৭৮ শতাংশ জমিতে লাগানো বাগানের প্রায় ৩০০টি মেহগনি গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (২১ জুন) ভোরে উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের মিজাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদরের হাজরাপুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম কৃষি বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে বাবার সঙ্গে নানা রকম ফলজ বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে কৃষিকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। বছর খানেক আগে তিনি ৩০০ মেহগনি গাছ লাগিয়েছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার রাতের আঁধারে তার বাগানের ৩০০ মেহগনি গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি উদ্যোক্তা রবিউল ইসলাম বলেন, লেখাপড়া শেষ করে চাকরি না খুঁজে আমি কৃষিকাজ করছি। আমার স্বপ্ন একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা হয়ে সমাজে কৃষকের উন্নয়ন ঘটানো। ফলজ গাছের পাশাপাশি আমার স্ত্রীর পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৭৮ শতক জমিতে ৩০০ মেহগনি গাছ লাগিয়ে ছিলাম। জমির চারপাশে এই গাছ লাগালেও ভেতরের জমি একজন পেঁপে চাষিকে বর্গা দিয়েছিলাম। তিনি আরও বলেন, শ্বশুর বাড়ির এলাকা হওয়ায় গাছ লাগানোর পরে আমি কমই এখানে এসেছি। গাছগুলো দেখাশোনা করতেন পেঁপে চাষি। কিন্তু আজ আমার সব মেহগনি গাছের মাঝ বরাবর কারা যেন কেটে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমার সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই। তবে হিংসাবশত কেউ শত্রুতা করেছে আমার বাগানের গাছের সঙ্গে। আমার সন্তানের মত তিলে তিলে গড়ে তোলা গাছ কেটে আমার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করেছে। মানসিকভাবে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি। বছর খানেক আগে আমার মাল্টাগাছও কে বা কারা কেটে দিয়েছিল। এইভাবে চললে কৃষি আগাতে পারবে না। এদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতেই হবে।
রবিউলের বাবা শরিফুল ইসলাম বলেন, এলাকার কারও সঙ্গে আমাদের কোনো ধরনের ঝামেলা নেই। আমরা কৃষক মানুষ। সারা বছর ফলমূল চাষ করে আমাদের দিন চলে। মনে হচ্ছে হিংসা করে আমার সন্তানের এমন ক্ষতি করেছে কেউ। গত বছর একইভাবে আমাদের আলাইপুরের মাল্টা বাগানের গাছ কেটে দিয়েছিল।
মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ বলেন, কৃষি উদ্যোক্তারা আমাদের দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তরুণ কৃষি উদ্যোক্তারা কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সরকার সব সময় তাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। কিন্তু রবিউলের মতো যদি এরকম কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হন, তবে তা হতাশার কথা। এটা কখনোই আমাদের কাম্য নয়। আমি জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। যেন দোষীরা আইনের আওতায় আসে, আর কৃষি উদ্যোক্তা রবিউলও যেন সঠিক বিচার পান। এ বিষয়ে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, বিষয়টি পুলিশ খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews