রাজধানীতে জামায়াতের বিক্ষোভ
আজ বুধবার সকালে পূর্ব রামপুরা থেকে মালিবাগ আবুল হোটেল পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ আটক সকল নেতা-কর্মীকে মুক্তি ও অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে জামায়াত। আজ বুধবার সকালে পূর্ব রামপুরা থেকে মালিবাগ আবুল হোটেল পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
এসময় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, সরকার গণবিচ্ছিন্ন এবং আন্তর্জাতিকভাবে বন্ধুহীন হয়ে এখন সেলফি তুলে অবৈধ ক্ষমতা রক্ষার ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা চলমান গণআন্দোলন নির্মমভাবে দমনের জন্য পুলিশ বাহিনীকে জনগণের ওপর লেলিয়ে দিয়েছে। সরকারবিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করার জন্যই গুম, খুন ও অপহরণ অব্যাহত রেখেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে জনগণের বুকে গুলি চালাবেন না। গণগ্রেপ্তার করে, মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে, গুলি করে জনতার আন্দোলনকে বন্ধ করা যাবে না। আর সেলফি তুলে সরকারের শেষ রক্ষাও হবে না। তিনি সরকারকে অবিলম্বে গুম বন্ধ করে সকলকে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় তাদেরকে একদিন জনতার কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
রেজাউল করিম বলেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে চরম দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। এজন্য তারা জামায়াতকে বিশেষভাবে টার্গেট করেছে। তারা কথিত বিচারের নামে প্রহসনের মাধ্যমে শীর্ষ নেতাদের একের পর হত্যার পরও তাদের জিঘাংসা বন্ধ হয়নি বরং তারা নতুন নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।
সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই সরকার বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং সারা দেশে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বায়বীয় মামলা দিয়ে ইতিহাসের বর্বরতম নির্যাতন চালাচ্ছে।
নেতা-কর্মীরা আদালত থেকে জামিন লাভ করলেও সরকার তাদের মুক্তি দিচ্ছে না বরং মিথ্যা ও সাজানো মামলায় নেতাকর্মীদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। বাকশালী ও জুলুমবাজ সরকারের হাত থেকে রেহাই পায়নি দেশ বরেণ্য আলেম-ওলামাও। এমনকি মৃত ব্যক্তিরা সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে মুক্ত নন। তাই এই ফ্যাসীবাদী সরকারের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে হলে নৈশভোটের সরকারের পতনের কোনো বিকল্প নেই। তিনি সরকার পতনের লক্ষ্যে সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সরকার জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া ক্ষমতায় থাকার জন্যই দেশের গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস এবং জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করেছে। ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে। নিলর্জ্জভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশন ও বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের সকল অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান। তারা আবারো জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার দিবাস্বপ্নে বিভোর। কিন্তু তাদের স্বপ্নবিলাস ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র জনগণ কখনোই বাস্তবায়িত হতে দেবে না। তিনি সরকারকে সময় থাকতে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান। অন্যথায় জনগণ রাজপথে সরকারকে গণদাবি মানতে বাধ্য করবে ইনশাআল্লাহ।
বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক,কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ ও জামাল উদ্দীন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মু. আতাউর রহমান সরকার ও নাসির উদ্দীন প্রমূখ।