মার্কিন তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায়
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: দীর্ঘ ৭৭ দিন ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসাসেবা দিতে আমেরিকার প্রখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় জনস হপকিন্স থেকে তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় এসেছেন। বুধবার রাত ৭টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তারা। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
তিন চিকিৎসক হলেন- বিশ্বখ্যাত মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় জনস হপকিন্সের ডা. হামিদ আহমেদ আব্দুর রব, ডা. ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস ও ডা. জেমস পিটার অ্যাডাম হ্যামিলটন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রফেসর হামিদ রব জন হপকিন্স কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট প্রোগ্রামের পরিচালক এবং মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। আর অধ্যাপক ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস ইন্টারভেনশনাল অনকোলজি বিভাগের পরিচালক। তিনি রেডিওলোজি অ্যান্ড রেডিওলোজিকাল বিশেষজ্ঞ। আর সহযোগী অধ্যাপক জেমস পিটার হ্যামিলট একই বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলোজি বিভাগের পরিচালক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।
বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, মার্কিন তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রাজধানীর একটি হোটেলে অবস্থান করবেন। বৃহস্পতিবার ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থা নিয়ে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তারা। এরপর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করবেন মার্কিন চিকিৎসকরা।
এদিকে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা। সর্বশেষ গত ৯ই অক্টোবর মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরাও সংবাদ সম্মেলন করে তাকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে আনার জন্য আবেদন করে পরিবার। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে মার্কিন চিকিৎসকদের আসার অনুমতি দেয় সরকার।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ তাকে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়। ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, অস্টিও আর্থ্রাইটিস, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্রে জটিলতা, ফুসফুস, চোখ ও দাঁতের নানা সমস্যায় ভুগছেন। এ ছাড়া তার মেরুদণ্ড, ঘাড়, হাত ও হাঁটুতে বাতের সমস্যাসহ আরও কিছু শারীরিক জটিলতা রয়েছে।
২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কয়েকবার নানা অসুস্থতার কারণে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। গত বছরের জুনে বুকে ব্যথা অনুভব করলে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেয়া হয়। এরপর এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। চলতি বছরের ১৩ই জুন রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময় হাসপাতালে পাঁচ দিন চিকিৎসা শেষে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। সর্বশেষ গত ৯ই আগস্ট শারীরিক অসুস্থতার কারণে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।