মানবাধিকার রক্ষায় সোচ্চার দেশগুলোই মিয়ানমারে বিনিয়োগ করছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শনিবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ডিপ্লোম্যাটস ম্যাগাজিনের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, মানবাধিকার রক্ষায় সোচ্চার দেশগুলোই মিয়ানমারে বিনিয়োগ করছে।মিয়ানমারে বিপুল বিনিয়োগ করা দেশগুলোকে রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে নিজেদের স্বার্থে ও বিনিয়োগ রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শনিবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ডিপ্লোম্যাটস ম্যাগাজিনের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০১৬-২০২২ সালে মিয়ানমারের মিনিস্ট্রি অব ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ফরেন ইকোনকিম ইনভেস্টমেন্টের একটি তালিকা তুলে ধরেন। সেখানে তিনি এই সময়ে মিয়ানমারে শীর্ষ বিনিয়োগকারী দেশের নামগুলো বলেন।
তিনি বলেন, এই তালিকার শীর্ষে আছে সিঙ্গাপুর। তারা সেখানে বিনিয়োগ করেছে ২৬ বিলিয়ন ডলার। চীন বিনিয়োগ করেছে ২২ বিলিয়ন ডলার, তৃতীয় বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ থাইল্যান্ড বিনিয়োগ করেছে ১২ বিলিয়ন ডলার। হংকং বিনিয়োগ করেছে ১০ বিলিয়ন, যুক্তরাজ্য ৭.৫ বিলিয়ন ডলার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সংখ্যাগুলো উল্লেখ করে সবাই প্রকৃত চিত্র বুঝে নিতে পারবেন বলেও মন্তব্য করেন।
সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীন ও যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জোর পদক্ষেপ নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছে বলে জানান। পরে সাংবাদিকরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। তিনি অত্যন্ত আন্তরিকভাবে বলেছেন তারা রোহিঙ্গা বিষয়ে আমাদের সহায়তা করেই যাবে। তারা এজন্য একজন সিনিয়র ফোকাল এনভয় নিয়োগ করেছে। একইভাবে চীনও এ বিষয়ে স্পেশাল ফোকাল এনভয় নিয়োগ করেছে। আমাদের এখন আশা, এই আন্তরিকতার কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হবে।
তিনি বলেন, আমরা শান্তিময় দেশ, ধৈর্য ধরলে এর ভালো ফল পাওয়া যায়। সমস্যা সমাধানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বিশ্বের ১৩৪টি দেশ জাতিসংঘে বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে মিয়ানমার এখনো আন্তরিক নয়। তারা তারিখের পর তারিখ দিয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। তবে আমরা কখনোই আশা ছাড়িনি। তিনি বলেন, নিজেদের স্বার্থেই বিশ্বনেতাদের একসঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
ডিপ্লোম্যাটস প্রকাশনীর নির্বাহী উপদেষ্টা আবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, ডিপ্লোমেটস ম্যাগাজিনের উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ফারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ওবায়দুল হক, আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের সাবেক প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জে. (অব.) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য কূটনীতিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।