মাদ্রাসার ৩ শিশু শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে প্রকাশ্যে চুল কাটলেন মেয়র
নির্যাতনের শিকার ওই ৩ শিক্ষার্থী হলো- গোপালদী মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র বায়েজিদ (১০), হেফজ বিভাগের ছাত্র সিয়াম (৮) ও আফরিদ (৮)।
প্রথম নিউজ, নারায়ণগঞ্জ : নিজের মালিকানাধীন সাইজিং মিলের মেশিনের নাট-বল্টু চুরির অভিযোগে তিন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর হাত বেঁধে বেধড়ক পিটিয়ে মাথার চুল কেটে দিয়েছেন গোপালদী পৌরসভার মেয়র এমএ হালিম সিকদার। ২ ঘণ্টা ধরে ওই শিক্ষার্থীদের পেটানোর পর স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে শত শত মানুষের সামনেই তাদের চুল কেটে দেওয়া হয়। সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার গোপালদী পৌরসভার রামচন্দ্রদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নির্যাতনের শিকার ওই ৩ শিক্ষার্থী হলো- গোপালদী মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র বায়েজিদ (১০), হেফজ বিভাগের ছাত্র সিয়াম (৮) ও আফরিদ (৮)। এদিকে এ ঘটনা স্থানীয় গণমাধ্যমে জানানোর অপরাধে মেয়র হালিম শিকদারের লোকজন নির্যাতিত শিশুদের পরিবারের ওপর থানায় অভিযোগ না করতে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে নির্যাতনের শিকার ২ শিশুর পরিবার বাড়িতে তালা লাগিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন এলাকাবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রামচন্দ্রদী গ্রামে গোপালদী পৌর মেয়র হালিম সিকদারের মালিকাধীন সিকদার সাইজিংয়ের সামনে পড়ে থাকা কয়েকটি নাট-বল্টু নিয়ে খেলা করছিল ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। এ সময় বিষয়টি মিলের লোকজন মেয়রকে জানালে তারা মেয়রের নির্দেশে ওই ৩ শিক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে তুলে আনে। এ সময় মিলের অভ্যন্তরে হাত বেঁধে প্রায় ২ ঘণ্টা ৩ শিক্ষার্থীর ওপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। এ সময় ৩ শিশুর স্বজনরা শত মিনতি করলেও মন গলেনি মেয়র হালিম শিকদারের।
পরে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে ওই ৩ শিশুকে রামচন্দ্রদী বাসস্ট্যান্ডে এনে শত শত মানুষের সামনে তাদের মাথার চুল কেটে ভয়ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। বায়েজিদের পিতা জাহাঙ্গীর বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই আমার ছেলেসহ তিন শিশুকে নির্যাতন করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার দাবি করছি। এ ব্যাপারে গোপালদী পৌরসভার মেয়র এমএ হালিম সিকদার গণমাধ্যমের কাছে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এরা পেশাদার চোর। অতীতেও তারা চুরি করেছে তাই তাদের চুল কেটে দিয়েছি।
শিশুদের স্বজনদের না ডেকে এমন নির্যাতন করার এখতিয়ার আছে কিনা- জানতে চাইলে উল্টো গণমাধ্যমের এমন প্রশ্ন করার এখতিয়ার আছে কিনা- তা জানতে চেয়ে পালটা প্রশ্ন করে লাইন কেটে দেন তিনি। এ বিষয়ে আড়াইহাজার থানার ওসি আজিজুল হক হাওলাদার জানান, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।