প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: ভারতের হিমাচল প্রদেশের সিরমৌর জেলায় শত শত মানুষের সামনে একই নারীকে বিয়ে করেছেন দুই ভাই। ‘হট্টি’ সম্প্রদায়ের প্রাচীন প্রথা অনুসরণ করে এই বিয়ে হয়। দুই বর প্রদীপ ও কপিল নেগি এবং কনে সুনীতা চৌহান নিজের ইচ্ছায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।
গত ১২ জুলাই থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের বিবাহোৎসবে ‘জোড়িদারা’ নামে পরিচিত বহুগামী বিয়ের এই রীতিতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আইনগত স্বীকৃতি থাকা এই প্রথা এখনো টিকে আছে সীমান্তবর্তী পাহাড়ি অঞ্চলে। কনে সুনীতা বলেন, ‘আমি প্রথাটি সম্পর্কে জানতাম এবং স্বেচ্ছায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি আমাদের সম্পর্কের প্রতি আমার শ্রদ্ধা।’
প্রদীপ জানান, ‘এই সিদ্ধান্ত ছিল পারিবারিক, সম্মতিপূর্ণ এবং আমরা গর্বিতভাবে তা গ্রহণ করেছি।’ কপিল, যিনি বিদেশে কর্মরত, জানান, ‘আমি দূরে থাকলেও আমাদের স্ত্রীকে ভালোবাসা, স্থিরতা ও সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
হিমাচলের ‘হট্টি’ সম্প্রদায়কে ২০২২ সালে তফসিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। হিমাচল রাজস্ব আইনে তাদের বহুবিবাহ প্রথা এখনো বৈধ। শুধুমাত্র বাদনা গ্রামেই গত ছয় বছরে এ ধরনের পাঁচটি বিয়ের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃষিজমির বিভাজন রোধ, পাহাড়ি এলাকায় পারিবারিক ঐক্য ও নিরাপত্তা বজায় রাখা— এসবই এই বহুগামী প্রথার পেছনের মূল কারণ।
সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কুন্দন সিং শাস্ত্রী জানান, ‘এই প্রথার উৎপত্তি হাজার হাজার বছর আগে। এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর প্রয়োজন থেকেই গড়ে উঠেছে।’ তবে নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও শহরমুখী প্রবণতার ফলে প্রথাটির চর্চা দিনে দিনে কমে আসছে।