ফুটপাতের বিক্রেতা থেকে ১৮ হাজার কোটি রুপির মালিক
বর্তমানে ৫৫ বছরের সাজন ১৮ হাজার কোটি রুপি বা ২২০ কোটি ডলারের মালিক! তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম ধনী ভারতীয়।
প্রথম নিউজ, অনলাৈইন ডেস্ক: দানিউব গ্রুপের মালিক রিজওয়ান সাজন মাত্র ১৬ বছর বয়সে তার পিতাকে হারান। এরপর তিনি নিজেই পরিবারের হাল ধরেন। সংসারের খরচ জোগাতে রাস্তায়–ফুটপাতে বিভিন্ন ধরনের বই ও স্টেশনারি পণ্য বিক্রি করেছেন তিনি। অতিরিক্ত আয়ের জন্য ‘ডেলিভারি বয়’ হিসেবে দুধ সরবরাহের কাজও করতেন তিনি। বর্তমানে ৫৫ বছরের সাজন ১৮ হাজার কোটি রুপি বা ২২০ কোটি ডলারের মালিক! তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম ধনী ভারতীয়।
১৯৯৩ সালে দানিউব নামের কোম্পানি প্রতিষ্ঠার আগপর্যন্ত সাজন এমন কঠিন দিন পার করেছেন। গালফ নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দারিদ্র্যের মধ্যে কাটানো দিনগুলো সম্পর্ক রিজওয়ান বলেন, বিষয়টা কঠিন ছিল, সত্যিই কঠিন। আমার বাবা একটি স্টিল ফ্যাক্টরিতে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করতেন। মাসে বেতন পেতেন সাত হাজার রুপি। তাতে সংসার চালানো ও আমাদের স্কুলের ফি পরিশোধ করা কষ্টকর ছিল। পরিস্থিতি অনেকটা দিন এনে দিন খাওয়ার মতোই ছিল।
তবে হাল ছেড়ে দেননি রিজওয়ান। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জন করেন আর্থিক সচ্ছলতা। এ ধারাবাহিকতায় ১৯৯৩ সালে দুবাইয়ে প্রতিষ্ঠা করেন দানিউব গ্রুপ। এরপর থেকেই তরতর করে তার ধনসম্পদ বাড়তে থাকে। ২০১৯ সালে দানিউব গ্রুপের বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে প্রায় ১৩০ কোটি মার্কিন ডলারে দাঁড়ায়। বর্তমানে গ্রুপটির মালিকানায় নির্মাণ উপকরণ কোম্পানি, রিয়েল এস্টেট ফার্ম বা আবাসনপ্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামো কোম্পানিসহ বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে।
রিজওয়ান সজনের আর্থিক সমৃদ্ধি অর্জনের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তার চাচা। ১৯৮১ সালে ১৮ বছর বয়সী রিজওয়ানকে কুয়েতে চাকরির প্রস্তাব দেন তিনি। তখন রিজওয়ান কুয়েতের একটি কোম্পানিতে ১৫০ দিনার মাসিক বেতনে সেলস ট্রেইনি হিসেবে কাজ শুরু করেন। আট বছর কাজ করার পর রিজওয়ান সেই কোম্পানির সেলস ম্যানেজারের দায়িত্ব নেন। তবে ১৯৯০ সালে ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন কুয়েত আক্রমণ করে কয়েকটি শহর একপ্রকার ধ্বংসই করে দেন। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে তার পশ্চিমা মিত্ররা সাদ্দাম তথা ইরাক আক্রমণ করে, যা উপসাগরীয় যুদ্ধ নামে পরিচিত। যুদ্ধের পরিস্থিতিতে রিজওয়ান মুম্বাই ফিরে আসেন ও চাকরি খুঁজতে শুরু করেন।
তবে এরপর তিনি দুবাইয়ের একটি ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানে চাকরি পান। সেখানে কিছুদিন কাজ করার পর রিজওয়ান সাজন সেই চাকরিও ছেড়ে দেন। এবার তিনি নিজেই একটি নির্মাণসামগ্রীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেন। আর এভাবেই জন্ম নেয় দানিউব গ্রুপ।