প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নয়, মানুষের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত- এই বিষয়ে একমত হয়েছেন বিশ্বের দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি রাষ্ট্র যুক্তরাষ্টও ও চীন। গত শনিবার পেরুর রাজধানী লিমায় এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার (এপেক) সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং। পরে বৈঠক নিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
বিবৃতিতে বলা হয়, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্তের ওপর মানুষের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি দৃঢ়তার সাথে সমর্থন করেছেন দুই নেতা। বিচক্ষণ ও দায়িত্বশীল পদ্ধতিতে সামরিক ক্ষেত্রে এআই প্রযুক্তি বিকাশের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তারা। সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো সাবধানে এই দুই নেতা বিবেচনা করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব দেন। দুই নেতার বৈঠক নিয়ে চীনের সংক্ষিপ্ত সরকারি ভাষ্যেও এআই-সংক্রান্ত একই কথার উল্লেখ রয়েছে। বৈঠকের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। কিন্তু তারা তাৎক্ষণিকভাবে এ অনুরোধে সাড়া দেয়নি। পারমাণবিক অস্ত্র ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিষয়টি নিয়ে মার্কিন-চীনের মধ্যে আরও আলোচনা হবে কি না বা পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র গত মে মাসে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় প্রথম আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শুরু করেছিল। কিন্তু সেই আলোচনায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত-সম্পর্কিত বিষয়টি এসেছিল বলে মনে হয় না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের গত বছরের অনুমিত হিসাব অনুযায়ী, বেইজিংয়ের কাছে ৫০০টি অপারেশনাল পারমাণবিক ওয়ারহেড আছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা সম্ভবত হাজার পেরিয়ে যাবে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, তাইওয়ানের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র যাতে বেইজিংয়ের ‘লাল রেখা’ (রেড লাইন) অতিক্রম না করে, সেজন্য ওয়াশিংটনকে এই বৈঠকে সতর্ক করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। তবে বৈঠকে বাইডেনকে শি চিন পিং বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সাথে বেইজিং কাজ করতে আগ্রহী।
নতুন করে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু ও কূটনৈতিক উত্তেজনা বাড়ার উদ্বেগের মধ্যে আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন ট্রাম্প। তাইওয়ানকে নিজ ভূখণ্ড বলে দাবি করে চীন। তাইওয়ান দখলে শক্তি প্রয়োগ করার বিষয়টিও উড়িয়ে দেয়নি চীন। অন্যদিকে স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানের প্রধান নিরাপত্তা-সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র। যদিও তাইপেকে কূটনৈতিকভাবে ওয়াশিংটন স্বীকৃতি দেয় না।