প্রভাব দেখিয়ে ২০ একর ফসল নষ্ট, কৃষকদের গ্রামছাড়া করার হুমকি

এতে ফসলের মাঠেও লোনা পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে গেছে ২০ একর জমির বোরো ধানের চারা। এতে একদিকে ঋণের বোঝা, অন্যদিকে ধান নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা প্রায় অর্ধশত কৃষক।

প্রভাব দেখিয়ে ২০ একর ফসল নষ্ট, কৃষকদের গ্রামছাড়া করার হুমকি

প্রথম নিউজ, বরগুনা: বরগুনার তালতলীতে স্লুইসগেট খুলে মাছের ঘেরে পানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এতে ফসলের মাঠেও লোনা পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে গেছে ২০ একর জমির বোরো ধানের চারা। এতে একদিকে ঋণের বোঝা, অন্যদিকে ধান নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা প্রায় অর্ধশত কৃষক।

জানা যায়, তালতলীর সোনাকাটা ইউনিয়নের সকিনা ও নিদ্রার চর এলাকার ২৭ জন কৃষক ২০ একর জমিতে এবার বোরো চাষ করেছেন। তবে স্থানীয় প্রভাবশালী মালেক আকন নিজের মাছের ঘেরে পানি ঢোকানোর জন্য খালের স্লুইস গেট খুলে রেখেছেন। এতে এ এলাকায় ২০ একর জমিতে লোনা পানি ঢুকে ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক কৃষক বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বোরো আবাদ করেন। কিন্তু চারা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ঋণের টাকা পরিশোধ করা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
 
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, নিজে ঘেরে পানি নেওয়ার জন্য স্লুইস গেট খুলেছেন মালেক আকন। লোনা পানি ঢুকে ফসল ক্ষতির কথা বললে মালেক বলেন, ‘আমার ঘেরে পানি দরকার, তাই স্লুইস গেট খুলে লোনা পানি ওঠানো হয়েছে। এতে তোমাদের ক্ষতি হলে আমি কী করতে পারি? তোমরা যদি বেশি বাড়াবাড়ি করো তাহলে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে।’ এ ছাড়া মালেক তাদের গ্রামছাড়া করার নানা হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলেও জানান কৃষকরা।

মনির, সোহরাব, হাশেমসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, আমরা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বোরো ধানের চাষ করেছি। কিন্তু মালেকের কারণে সব চারা জ্বলে গেছে। প্রভাবশালী মালেক তার ব্যক্তিমালিকানা ঘেরে স্লুইস গেট খুলে লোনা পানি ওঠায়। এ জন্য আমাদের জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। আমরা ক্ষতিপূরণ চাই। আরেক কৃষক রফিক হোসেন বলেন, আমার নিজের দেড় একরসহ অন্য কৃষদের ২০ জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এ বিষয়ে মালেক আকনের কাছে বললে তিনি উল্টো হুমকি দেন। বলেন, ‘তোরা যা পারো করো, আমি কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে পারব না।’

এ বিষয়ে মালেক আকন বলেন, আমি ঘেরে পানি উঠিয়েছি। তাতে কিছু কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। তবে তারা যে পরিমাণ ক্ষতির কথা বলে তা হয়নি। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান হবে। তিনি আরও বলেন, আমি পানি ওঠানোর আগে সবাইকে জানিয়েছি। আমি কোনো কৃষককে হুমকি দিইনি। তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাওসার হোসের বলেন, এ বিষয়ে মালেকের বিরুদ্ধে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থার জন্য থানায় পাঠানো হয়েছে কৃষকদের। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom