প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯৪, জিডিপি ৪১৬ বিলিয়ন ডলার
মাথাপিছু আয় বেড়ে ২৫৯১ ডলার
প্রথম নিউজ, ঢাকা: গত অর্থবছরে (২০২০-২১) মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার সাময়িকভাবে ৪১১ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ হিসাব করা হয়েছিল। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছিল ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ। তবে ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে পরিবর্তন করে ২০১৫-১৬ অর্থবছরকে ভিত্তিবছর ধরায় প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে। অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়েছে। মোট জিডিপির আকারও বেড়ে ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাময়িক হিসাবে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিবিএসের এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা একটা সাময়িক হিসাব করেছিলাম। তবে চূড়ান্ত হিসাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় ও মোট প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে। এটা মিরাকল। প্রথমে যে হিসাব করেছিলাম তার থেকে আমরা ভালো করেছি।
তিনি বলেন, মোট জিডিপির আকার বেড়ে ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। পাশাপাশি প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়েছে। এই অঞ্চলে এত প্রবৃদ্ধি নেই বলা যায়।
২০২০-২১ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৫৯১ মার্কিন ডলার হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। গত অর্থবছরে (২০২০-২১) মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) নয় মাসের সাময়িক হিসেবে ২ হাজার ৫৫৪ মার্কিন ডলার হয়েছিল (যা টাকার অঙ্কে ছিল ২ লাখ ১৬ হাজার ৫৮৯ টাকা)। ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে চূড়ান্ত হিসাবে মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৫৯১ মার্কিন ডলার হয়েছে, যা টাকার অঙ্কে ২ লাখ ১৯ হাজার ৭৩৮ টাকা।
বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের ফিগার, যে কেউ এটা নিয়ে গবেষণা করতে পারেন। আমরা সামগ্রিকভাবে ভালো করেছি বলেই মাথাপিছু আয় বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রতি বছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারসহ কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক নির্দেশক প্রাক্কলন ও প্রকাশ করে আসছে। এ পর্যায়ে চূড়ান্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ২০২০ অর্থবছরের জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে।
চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে শতকরা ৬ দশমিক ৯৪ ভাগ, যা সাময়িক হিসাবে ছিল ৫ দশমিক ৪৩ ভাগ । ২০২০-২১ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৯ হাজার ৭৩৮ টাকা বা ২৫৯১ মার্কিন ডলার।
কৃষি খাত: সার্বিক বিবেচনায় কৃষি খাতের ২০২০-২১ অর্থবছরে চূড়ান্ত হিসাবে শতকরা ৩ দশমিক ১৭ ভাগ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা সাময়িক হিসাবে ছিল ২ দশমিক ৩৭ ভাগ । চূড়ান্ত হিসাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে শস্য উপখাতে শতকরা ২ দশমিক ২৯ ভাগ, পশুপালন উপখাতে শতকরা ২ দশমিক ৯৪ ভাগ, বন উপখাতে শতকরা ৪ দশমিক ৯৪ ভাগ এবং মৎস্য খাতে শতকরা ৪ দশমিক ১১ ভাগ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে ।
শিল্প খাত: চূড়ান্ত হিসাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের প্রবৃদ্ধি ১১ দশমিক ৫৯ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে । বছর শেষে বিদ্যুৎ খাতে ১১ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং নির্মাণ খাতে ৮ দশমিক ০৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে। সার্বিকভাবে চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী শিল্প খাতে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে ১০ দশমিক ২৯ ভাগ যা সাময়িক হিসাবে ছিল ৫ দশমিক ৯৯ ভাগ।
সেবা খাত: ২০২০-২১ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা খাতে ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ, যানবাহন খাতে ৪ দশমিক ০৪ শতাংশ, ব্যাংক ও বীমা খাতে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ , শিক্ষা খাতে ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ ও স্বাস্থ্য খাতে ১০ দশমিক ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে। সার্বিকভাবে চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী সেবা খাতে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ, যা সাময়িক হিসাবে ছিল ৫ দশমিক ৮৬ ভাগ।
মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, এক্সপোর্ট বেড়েছে। এছাড়া রেমিটেন্স ২৫ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। এসব কারণেই মূলত অর্থনীতির আকার বেড়েছে। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ওমিক্রনের সময়ও পিছিয়ে নেই। আমাদের রপ্তানি আয় বেড়েছে। ব্যক্তি বিনিয়োগ বেড়েছে ১৪ শতাংশ। আমাদের রেভিনিউ ১৪ শতাংশ বেড়েছে। কাজেই এসব কারণেই মোট জিডিপির পরিমাণ বেড়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির কারণে আমাদের মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: