পর্দায় নিজেকে দেখতে ভালোই লাগে,ফারহানা হামিদ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিঞ্জের ওয়েব সিরিজ ‘সদরঘাটের টাইগার ২’-এ লাইলি চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় তরুণ অভিনেত্রী ফারহানা হামিদ। ৫ জুন হইচইতে মুক্তি পাবে ওয়েব সিরিজ ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’। এতে রয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার এসেছিল ‘বাঙালি বিলাস’ ছবির ট্রেলার।
সেখানেও তিনি মুল ভূমিকায়। কাজ ও সমসাময়িক ব্যস্ত নিয়ে কথা বলেছেন কালের কণ্ঠের সঙ্গে। শুনেছেন সুদীপ কুমার দীপ।
‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’ দর্শকের কেমন লাগবে বলে মনে করছেন?
ট্রেলারেই তো বাজিমাত করেছে।
খুবই ইন্টারেস্টিং একটা গল্প। একজন মানুষ, আট এলাকায় তার আটটা বউ। কেউ কাউকে চেনে না। একটা পর্যায়ে মানুষটা আর বউদের লুকিয়ে রাখতে পারে না।
একে অন্যের বিষয়ে জেনে যায়। ফেঁসে যায় মানুষটা। হাস্যরসের সঙ্গে গল্পটাতে দারুণ কিছু ম্যাসেজ আছে। এরই মধ্যে দেখেছেন মনে হয়, ট্রেলারের একটি ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। আমার মনে হয় সিরিজটি সবার ভালো লাগবে।
এই সিরিজের মাধ্যমে প্রথমবার মোশাররফ করিমের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। অভিজ্ঞতা কেমন?
মোশাররফ ভাই আমাদের দেশের সবচেয়ে ট্যালেন্টেড অভিনেতাদের অন্যতম। সিরিজটি করেছি দুটি কারণে—এক, অমিতাভ রেজা চৌধুরীর পরিচালনা, দুই, মোশাররফ করিম ভাইয়ের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ারের সুযোগ পাব বলে। মোশাররফ ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম দৃশ্যটাই ঝগড়ার, অভিমানের। দৃশ্যটির শেষ দিকে একটা সংলাপ, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’। দৃশ্যটি ধারণের সময় আমার হাত-পা কাঁপছিল। বুঝে উঠতে পারছিলাম না কী করব। ঝগড়াটা করলাম ঠিকই, পরে ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ সংলাপটা আর বলতে পারছিলাম না। বিষয়টি বুঝতে পারলেন মোশাররফ ভাই। তিনি আমার মুখ থেকে সংলাপ কেড়ে নিয়ে বললেন, ‘জয়গুন [আমার চরিত্রের নাম] আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো। দেখেন, একজন শিল্পী কতটা আন্তরিক হলে এভাবে সহশিল্পীকে উতরে নেন। মোশাররফ ভাইয়ের কমিক সেন্স অসাধারণ। অনেক সময় দেখেছি, স্ক্রিপ্টে নেই অথচ তিনি এত সুন্দর সংলাপ বলেন যে অবাক না হয়ে উপায় থাকে না। ক্যামেরার বাইরেও তিনি সেরা। স্পটে সারাক্ষণ সবাইকে মাতিয়ে রাখেন।
অভিনয়ে এলেন কিভাবে?
কখনোই অভিনয় করার স্বপ্ন দেখিনি। হঠাৎ করেই এই জগতে আসা। পরিচালক রবিউল আলম রবি ও অভিনেতা শ্যামল মাওলার কারণেই আজ আমি এখানে। ঘটনাটা ২০১৭ সালের। রবি ও শ্যামল [দুজনই আমার বন্ধু] একদিন বলল, ‘ইতি তোমারই ঢাকা’ নামে একটি চলচ্চিত্র হবে। সেখানে আমাকে একটা চরিত্র করতে হবে। প্রথমে রাজি না হলেও পরে ভাবলাম অডিশন দিই। দেখি কী হয়! সৌভাগ্যবশত অডিশনে টিকে গেলাম। সেই শুরু। পর্দায় নিজেকে দেখতে ভালোই লাগে। দর্শকও ভালোবাসা দিচ্ছেন, আমিও কাজ করে যাচ্ছি।
‘ইতি তোমারই ঢাকা’ মুক্তি পেয়েছে ২০১৮ সালে। এরপর কেটে গেছে সাত বছর। সময়ের তুলনায় আপনার কাজ হাতে গোনা ছয়-সাতটি। এত কম কাজ করছেন কেন?
প্রথম থেকেই বেছে বেছে কাজ করছি। আমার কাজগুলো দেখেন—‘সদরঘাটের টাইগার’, ‘কারাগার’, ‘ঊনলৌকিক’, ‘মুনতাসির’, ‘জোয়ারভাটা’—প্রতিটি কাজই দর্শক পছন্দ করেছে। সব সময় ভালো গল্প ও চরিত্রের পাশাপাশি আমি ভালো নির্মাতার সঙ্গেও কাজ করতে চাই। ‘কারাগার’-এ আমার চরিত্রটি খুবই ছোট। তার পরও দর্শক পছন্দ করেছে। এই যে ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’, এই সিরিজেও আমার চরিত্রটি কিন্তু বড় নয়। তবু দর্শকের ভালো লাগবে, দেখবেন। তা ছাড়া আমি সৈয়দ আহমেদ শাওকী, অমিতাভ রেজা, রবিউল আলম রবির মতো মেধাবী নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে থাকি। এখন তাঁরাও তো বছরে তিন-চারটি কাজ করেন না। তাহলে আমার কাজের সংখ্যাটা বাড়বে কিভাবে, বলেন?
আপনার একটা ফ্যাশন হাউস আছে—‘খুঁত’, এটি কেমন চলছে?
খুবই ভালো। এখন ঢাকায় তিনটি শোরুম হয়েছে। লালমাটিয়া, বনানী ও ধানমণ্ডির শোরুমগুলো বেশ জনপ্রিয়। এ বছর আরো কয়েকটি শোরুম বাড়ানোর চিন্তা করছি। এই হাউসের সব পোশাক কিন্তু আমারই ডিজাইন করা।
শেষ প্রশ্ন, ‘বাঙালি বিলাস’-এর ট্রেলার মুক্তি দিয়েও সরিয়ে নেওয়া হলো। অভিনেত্রী হিসেবে কী বলবেন?
এটা তো পরিচালক বলবেন। ছবিটার গল্প সমসাময়িক। নির্মাতা এবাদুর রহমানও দারুণ বানিয়েছেন। সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে তিনি ছবিটি উপস্থাপন করেছেন। এখন কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে ট্রেলারটি সরিয়ে নিতে হয়েছে। অভিনেত্রী হিসেবে খারাপই লাগছে। ছবিটি কিন্তু দেশের বাইরে প্রদর্শিত হচ্ছে। নানা চলচ্চিত্র উৎসবেও অংশ নিচ্ছে। আমার বিশ্বাস, অনিশ্চয়তা কাটিয়ে দ্রুত দেশেও মুক্তি পাবে।