পদযাত্রায় হামলা সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ মামলা, আসামি ৪০০০
ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৫ জনকে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিএনপি’র দু’দিনব্যাপী পদযাত্রার প্রথমদিনে হামলা, সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় মামলা হয়েছে। বেশির ভাগ স্থানে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। ঢাকার মিরপুরের বাঙলা কলেজের সামনে ছাত্রলীগের সঙ্গে বিএনপি’র সংঘর্ষের ঘটনায় ২টি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া পৃথক পৃথক ঘটনায় ফেনীতে ২টি, বগুড়ায় ৪টি, কিশোরগঞ্জ ও পিরোজপুরের ঘটনায় ১টি করে মামলা হয়েছে। ১০টি মামলায় এজাহারনামীয় আসামির সংখ্যা ৬০৫ জন। অজ্ঞাত হিসাবে আরও ৩৩৯২ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৫ জনকে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
মিরপুরের বাঙলা কলেজের সামনের ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দারুস সালাম থানায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী রুবেল হোসেন এবং অপর মামলার বাদী কলেজের স্টাফ মো. মহিদুর রহমান। রুবেলের করা মামলায় ১২০ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৫০০ জনকে অজ্ঞাত ও কলেজ স্টাফ মহিদুরের মামলায় ১০৯ জনের নাম উল্লেখ ও ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা কলেজের শিক্ষার্থীদের হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। হামলাকারীরা তার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে। ২৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে পৃথক মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপি’র ১৮ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ফেনীতে বিএনপি’র পদযাত্রার সময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) হায়াত উল্যা ফেনী মডেল থানায় মামলা দুটি করেন। পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপের অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে এবং অপরটি পুলিশের কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলাতেই বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৮৮ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। দুই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও দুই হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত পুলিশ দুই মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
পুলিশের ওপর হামলা, মারপিট, সদর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা ভাঙচুর ও বিস্ফোরক আইনে আলাদা তিনটি মামলায় দায়ের করা হয়েছে বগুড়া সদর থানায়। এসব মামলায় ১৮৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় বগুড়া জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক এবিএম মাজেদুর রহমান জুয়েলকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। বগুড়া সদর থানার পাশাপাশি জেলার দুপচাঁচিয়া থানায় শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের একটি কোচ ভাঙচুরের ঘটনায় আদমদীঘি থানায় আরও একটি মামলা হয়েছে। এতে বিএনপি’র ২২ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জে বিএনপি’র পদযাত্রা কর্মসূচিকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। মামলায় জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৬০-৭০ জনকে আসামি করে গত মঙ্গলবার রাতে মামলাটি করেন কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই ফজলুর রহমান। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে আঘাত ও রাস্তায় জনগণের গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকে। থানার পেট্রোল গাড়ি ভাঙচুর, ইটপাটকেল ও লাঠির আঘাতে পুলিশের ১৩ জন সদস্য আহত হওয়ায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
পিরোজপুরে বিএনপি’র পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে পুলিশের ওপরে হামলার ঘটনায় বিএনপি’র ৩৮০ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় পিরোজপুর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন ও সদস্য সচিব গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লাভলুসহ ৮০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ২০০/৩০০ জন বিএনপি’র নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে পিরোজপুর সদর থানার এসআই মাকসুদুর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।