পণ্যের দাম ২০০ শতাংশ বেশি দেখিয়ে অর্থপাচার

দেশ থেকে বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বেশিরভাগ অর্থ পাচার হচ্ছে। আমদানি পণ্যের আড়ালে ২০ থেকে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি মূল্য দেখিয়ে অর্থপাচার হয়েছে। তবে শঙ্কার বিষয় হলো টাকা একবার পাচার হলে তা ফেরত আনা বেশ কঠিন।

পণ্যের দাম ২০০ শতাংশ বেশি দেখিয়ে অর্থপাচার
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: দেশ থেকে বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বেশিরভাগ অর্থ পাচার হচ্ছে। আমদানি পণ্যের আড়ালে ২০ থেকে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি মূল্য দেখিয়ে অর্থপাচার হয়েছে। তবে শঙ্কার বিষয় হলো টাকা একবার পাচার হলে তা ফেরত আনা বেশ কঠিন।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের কেন্দ্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশকালে এসব কথা বলেন বিএফআইইউর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জহুরুল হুদা, মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ, বিএফআইইউ পরিচালক রফিকুল ইসলাম, মো. আরিফুজ্জামান এবং অতিরিক্ত প‌রিচালক কামাল হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে বিএফআইইউর প্রধান বলেন, উন্নয়নশীল দেশ থেকে অর্থপাচার হয়। এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশও উন্নয়নশীল দেশ। এখান থেকেও টাকা পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে উঠে এসেছে, বিভিন্ন পণ্যের দাম ২০ থেকে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত ওভার ইনভয়েচ (বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির মূল্য বেশি দেখানো) এর মাধ্যমে অর্থপাচার হয়েছে। তবে কী পরিমাণ অর্থপাচার হয়েছে সে তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। এ সময় শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, যে টাকা চলে যায় তা ফেরত আনা কঠিন।

তিনি আরও বলেন, এই যে হুন্ডি হচ্ছে, প্রবাসীরা ডলার পাঠাতে পারছেন না, ফরেন কারেন্সি পাঠাতে পারছেন না। তাহলে এগুলো কোথায় যাচ্ছে। সেগুলো তো কোথাও এক জায়গায় ব্যবহৃত হচ্ছে। সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে আন্ডার ইনভয়েচ (রপ্তানিতে মূল্য কম দেখানো হচ্ছে) এর মাধ্যমে পেমেন্ট মেটানোর জন্য।

প্রশ্নোত্তর উত্তরে মাসুদ বিশ্বাস বলেন, অর্থপাচারের বেশির ভাগই বাণিজ্যিক ভিত্তিক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিদর্শনে বিষয়টি উঠে এসেছে। এরপরই বিলাসী পণ্যের এলসিতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এছাড়া এলসি খোলার ওপর তদারকি বাড়ানো হয়েছে। ফলে বর্তমানে ওভার ইনভয়েচিং হচ্ছে না। এখন নজর দিতে হবে আন্ডার ইনভয়েচিংয়ের দিকে। মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করার কারণে ট্রেড বেইসড মানি লন্ডারিং আগামীতে আরও কমে আসবে।

তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালে প্রকাশিত জিএফআইর একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়- ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে ট্রেড ইনভয়েচিংয়ের মাধ্যমে ৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে। একই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। একই সময়ে বৈশ্বিক অপর একটি সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ থেকে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার অবৈধভাবে বের হয়ে গেছে এবং ২ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশে এসেছে। দুই আর্থিক প্রতিবেদনে দুই রকম তথ্য এসেছে।

বিএফআইইউ অতিরিক্ত পরিচালক কামাল হোসেন বলেন, জিএফআই একটি থিংট্যাংক প্রতিষ্ঠান। এটি গভর্নমেন্ট ও আন্তঃগভর্নমেন্ট কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। তারা বলছে, এটা ১০০ ভাগ সঠিক না। আইএমএফের ডাটাবেইসে বলা হয়েছে, ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হচ্ছে। জাতিসংঘের ডাটাবেইসে দেখা যাচ্ছে, আউটফ্লোর চেয়ে ইনফ্লো বেশি হচ্ছে। এখানে ১০১ মিলিয়ন ডলার দেশে আসছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom