পাকিস্তানে ১ নিরাপত্তাকর্মীসহ ৬ জনকে গুলি করে হত্যা

পাকিস্তানে ১ নিরাপত্তাকর্মীসহ ৬ জনকে গুলি করে হত্যা

প্রথম নিউজ, অনলাইন:দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানে সমন্বিত বন্দুকধারীদের গুলিতে ছয়জন নিহত হয়েছে। যারা মূলত জাতিগত গোষ্ঠীর বাস যাত্রীদের লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালায়। আজ বৃহস্পতিবার দেশটির পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছে। পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘটানো সহিংসতার সর্বশেষ ঘটনা এটি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন প্রাদেশিক পুলিশ কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, ‘সন্ত্রাসীরা বেলুচিস্তানের একাধিক জেলায় যাত্রীবাহী বাস এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু করে। এরপর কমপক্ষে পাঁচজন বহিরাগত যাত্রী এবং একজন নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যা করে।’ গোয়াদর জেলার উপকূলীয় শহর পাসনিতে এই ঘটনাটি ঘটেছে।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘তারা যাত্রীবাহী বাস থামিয়ে স্থানীয় না এমন ভ্রমণকারীদের চিহ্নিত করে।
’ তিনি বলেন,  প্রধান মহাসড়কগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার এবং যানবাহন তল্লাশির চালানোর জন্য পোস্ট স্থাপন করার পর কয়েক ডজন সশস্ত্র যোদ্ধা প্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলায় হামলা চালিয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় এখনও হামলা চলছে বলেও তিনি জানান। কোনো গোষ্ঠীই এখনও এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। 

পাকিস্তান কয়েক দশক ধরে বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
সেখানে জঙ্গিরা আফগানিস্তান ও ইরান সীমান্তবর্তী খনিজ সমৃদ্ধ দক্ষিণ-পশ্চিম প্রদেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনী, বিদেশি নাগরিক এবং যারা স্থানীয় না তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘হামলাগুলো একটি কাপুরুষোচিত কাজ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। যাত্রীদের চিহ্নিত করে তাদের লক্ষ্যবস্তু করা বর্বর এবং নৃশংস।’

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় না তাদের ওপর আক্রমণ তীব্র করেছে। এই মাসের শুরুতে, জাতিগত বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ৪৫০ জন যাত্রী নিয়ে যাত্রা করা একটি ট্রেনে আক্রমণ করে।
যাত্রীসহ ট্রেনটি দুইদিন জিম্মি করে রাখা হয়, ফলে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়। এর কয়েকদিন পরে যানবাহনে আত্মঘাতী হামলায় কমপক্ষে পাঁচজন আধাসামরিক বাহিনী নিহত হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এ হামলার দায় স্বীকার করে।

এই গোষ্ঠীটি গত বছরও সমন্বিত হামলা চালিয়েছিল। যার মধ্যে ছিল একটি প্রধান মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া এবং অন্যান্য জাতিগত গোষ্ঠীর যাত্রীদের গুলি করে হত্যা করা, এ সকল ঘটনা দেশকে হতবাক করে দিয়েছিল। সশস্ত্র গোষ্ঠীরা বিদেশি অর্থায়নে জ্বালানি প্রকল্পগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে, বিশেষ করে চীন। তারা অভিযোগ করেছে, বহিরাগতরা পাকিস্তানের দরিদ্রতম অঞ্চলের বাসিন্দাদের বাদ দিয়ে সম্পদ সমৃদ্ধ অঞ্চলটি শোষণ করছে।

সূত্র : এএফপি