নিষ্ক্রিয় নেতাদের সঙ্গে বিএনপি’র বৈঠক শুরু আজ

এই নেতাদের মধ্যে সাবেক অনেক জনপ্রতিনিধিও আছেন। ২০০১ সাল থেকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হওয়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের একটি তালিকা তৈরি করেছে দলটির কেন্দ্রীয় দপ্তর।

নিষ্ক্রিয় নেতাদের সঙ্গে বিএনপি’র বৈঠক শুরু আজ
নিষ্ক্রিয় নেতাদের সঙ্গে বিএনপি’র বৈঠক শুরু আজ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: নানা কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া নেতাদের সক্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। এমন নেতাদের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করবেন। সামনের দলীয় কর্মসূচিতে নিষ্ক্রিয় নেতাদের সক্রিয় করতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই নেতাদের মধ্যে সাবেক অনেক জনপ্রতিনিধিও আছেন। ২০০১ সাল থেকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হওয়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের একটি তালিকা তৈরি করেছে দলটির কেন্দ্রীয় দপ্তর। ইতিমধ্যে সাবেক জনপ্রতিনিধি ও নিষ্ক্রিয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন শীর্ষ নেতারা। তাদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করবে বিএনপি। এজন্য সাবেক জনপ্রতিনিধিদের অনেককে ডাকা হয়েছে। ধারাবাহিক বৈঠকের প্রথম পর্ব শুরু হচ্ছে আজ। প্রথম ধাপে রংপুর বিভাগের বিএনপি মনোনীত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন দলটির হাইকমান্ড।

বৈঠকে অংশ  নেবেন বিএনপি মহাসচিব, স্থায়ী কমিটি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যগণ। এছাড়া বিভাগীয় ও জেলার শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন। ইতিমধ্যে যেসব নেতা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল বৈঠকের আমন্ত্রণ পেয়েছেন তাদের সকলকে পাস কার্ড (দলীয় আইডি কার্ড) প্রদান করা হয়েছে।  বিএনপি বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এজন্য বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এই আন্দোলন গতিশীল করতে দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য জোরদার করতে চান নীতি-নির্ধারকরা। সংগঠনের স্বার্থ ও দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রেখে সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব মিটিয়ে আগামীতে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে নামতে চায় বিএনপি। 

এজন্য নানা কর্মমুখী পরিকল্পনা নিয়ে আগাতে চায় দলীয় হাইকমান্ড। নিষ্ক্রিয় থাকা নেতাকর্মীদের নিয়ে ক্ষমতাসীনরা যাতে কোনো ফাঁদ পাততে না পারে সেদিকেও সতর্ক বিএনপি। সে লক্ষ্যে রাগ-ক্ষোভ এবং অভিমানে দীর্ঘদিন ধরে দূরে কিংবা নিষ্ক্রিয় থাকা নেতাকর্মীদের একই ছাতার নিচে আনার উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপি’র সমর্থনে বিজয়ী স্থানীয় জনপ্রতিনিধি অর্থাৎ সাবেক ও বর্তমান ইউনিয়ন (ইউপি) চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রায় ৪ হাজার জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। 

দলীয় সূত্র জানায়, প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বিভাগভিত্তিক বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকমান্ড। আজ রংপুর বিভাগের বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠকের মধ্যদিয়ে এই কার্যক্রম শুরু হবে। আগামী ১৬ই মার্চ পর্যন্ত অন্যান্য বিভাগের ইউনিয়ন, পৌরসভা, জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশনের  জনপ্রতিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন দলটির শীর্ষ নেতারা।  এদিকে দলের পদে থেকে সভা-সমাবেশ, আন্দোলন কর্মসূচি পালনে অনীহা কিংবা অংশ না নেয়া নেতাদের তালিকাও প্রস্তুত করছে বিএনপি। তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে সাংগঠনিক ব্যবস্থা। 

বিএনপি নেতারা বলছেন- আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি’র হাইকমান্ড। সরকার পতনের এক দফা দাবি নিয়ে রাজপথে নামবে বিএনপি। সরকারের পতন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বে না কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। অতীতে আন্দোলনের সফলতা ও ব্যর্থতা হিসাব-নিকাশ করেই নিষ্ক্রিয় নেতাদের সক্রিয় করতে কাজ করছেন তারা। এবার আর কোনো ভুল করতে চায় না দলটির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম। তবে আগামীর আন্দোলনে কেউ ভুল করলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।  এছাড়া বিএনপি থেকে পদত্যাগ কিংবা নানা কারণে বহিষ্কার হওয়া সাবেক কিংবা বর্তমান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বৈঠকের দায়িত্বে থাকা নেতারা। দপ্তরের দায়িত্বে থাকা একজন বলেন, যেসব জনপ্রতিনিধি দলছুট কিংবা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন তাদেরকে এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। 

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বিএনপি’র মনোনীত সাবেক ও বর্তমান স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বৈঠক করবেন। ২৩শে ফেব্রুয়ারি থেকে এই বৈঠক শুরু হবে। ধারাবাহিকভাবে এই বৈঠক চলবে। সেই প্রস্তুতি ও আন্দোলন এক সঙ্গে চলবে। বর্তমান সরকারের পতনের দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের আন্দোলন সফল হবে ইনশাআল্লাহ্। 

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ১০ দফা দাবি আদায়ে আমাদের আন্দোলন ক্রমেই গতিশীল হচ্ছে। আমাদের প্রথম দাবি এই সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা। এই দাবি পূরণ হলেই আমরা নির্বাচনে যাবো। আন্দোলন চলমান রাখতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া নেতাদের সঙ্গে আমরা বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ২০০১ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের দলের যত জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন তাদের সক্রিয় রাখাই লক্ষ্য। আমরা সব নেতাকর্মী এবং দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন জোরদার করতে চাই।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: