নতুন বাজেটকে ভোক্তাবান্ধব করার সুপারিশ
প্রথম নিউজ, ঢাকা : প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটকে আরও ভোক্তাবান্ধব করাসহ ৯ দফা সুপারিশ জানিয়েছে ভলান্টারি কনজুমারস ট্রেনিং অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটি (ভোক্তা)।
মঙ্গলবার (৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষে এসব দাবি জানানো হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ভোক্তা’র নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান সজল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গত ১ জুন জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। একইসঙ্গে আয় দেখানো হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে সমস্যার স্বীকৃতি থাকলেও উত্তরণ ঘটিয়ে সুসময়ে ফেরার ব্যবস্থা বা দিকনির্দেশনার অভাব রয়েছে।’
মো. খলিলুর রহমান সজল বলেন, ‘দেশের ভোক্তা সাধারণের অধিকার সুরক্ষায় ভোক্তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে একটি ভোক্তাবান্ধব বাজেট প্রণয়নের দাবি জানালেও প্রস্তাবিত বাজেটে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি, মানুষের আয় হ্রাস ইত্যাদি বাস্তবতাকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।’
বাজেটের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘উচ্চ-মূল্যস্ফীতির সময়ে ব্যক্তি-শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা ইতিবাচক, তবে ৪ লাখ টাকা করা যুক্তিসঙ্গত। সার্বজনীন পেনশন চালুর ঘোষণাটি প্রশংসনীয় হলেও পেনশন প্রাপ্তির বিষয়টি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক করতে হবে এবং মানুষের গড় আয়ু বিবেচনায় ৬০ বছরের নিচের সবাইকে এ স্কিমের আওতায় আনতে হবে। বাজেটে স্থানীয় শিল্প সুরক্ষায় নেওয়া এবং একাধিক ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য পরিবেশ সারচার্জ আরোপের উদ্যোগও প্রশংসানীয়।’
সংগঠনটির পক্ষে জানানো সুপারিশগুলো হলো–
১. বাজার সিন্ডিকেট মোকাবিলায় কী ভূমিকা নেওয়া হবে তার কোনও রূপরেখা বাজেট প্রস্তাবনায় নেই। বিষয়টি বাজেট প্রস্তাবনায় সংযোজন করতে হবে।
২. অর্থমন্ত্রী কীভাবে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনবেন, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিতে হবে।
৩. করযোগ্য আয় না থাকার পরও আয়কর রিটার্নের প্রমাণপত্র পেতে করদাতার ন্যূনতম দুই হাজার টাকা আয়কর দেওয়ার বৈষম্যমূলক বিধান প্রত্যাহার করতে হবে।
৪. কলমের ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহার করতে হবে।
৫. বাজেটে চলমান ডলার সংকট থেকে উত্তরণের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা দিতে হবে।
৬. কালো টাকা সাদা করার সুযোগ না রাখার বিষয়টি স্পষ্ট না করা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। তাই বাজেটে বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে।
৭. বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে সরকারি ব্যয় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। এই বায়ের প্রাক্কলন আরও কমিয়ে আনতে হবে।
৮. গ্যাস সিলিন্ডারের দাম যাতে না বাড়ে সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে।
৯. করদাতার সারচার্জ আরোপযোগ্য নিট সম্পদের সীমা না বাড়িয়ে ৩ কোটি টাকা রাখতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন– ভোক্তার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর, ভাইস চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন নওরোজ, পরিচালক (অর্থ) লুৎফর রহমান লিটন এবং পরিচালক ড. লতিফুল বারী, মহসীনুল করিম লেবু, সাইদুল আবেদীন ডলার, মিজানুর রহমান তালুকদার, নুরুন নবী, গোলাম কবীর ও ফজলুল হক।