দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা তুলে ‘নব্য-নাৎসিদের’ ধ্বংসের হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন

বৃহস্পতিবার তিনি সেই ঐতিহাসিক স্তালিনগ্রাদ শহরে (বর্তমান নাম ভলগোগ্রাদ) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। এতে তিনি ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলোকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা তুলে ‘নব্য-নাৎসিদের’ ধ্বংসের হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা তুলে ‘নব্য-নাৎসিদের’ ধ্বংসের হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক : ৮০ বছর পূর্বে স্তালিনগ্রাদ শহরে জার্মানির নাৎসি বাহিনীকে পরাস্ত করে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। সেই ইতিহাসকে তুলে এনে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার জয়ের ভবিষ্যৎবাণী করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার তিনি সেই ঐতিহাসিক স্তালিনগ্রাদ শহরে (বর্তমান নাম ভলগোগ্রাদ) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। এতে তিনি ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলোকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। 

জেরুজালেম পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে পশ্চিমা দেশগুলোর আধুনিক ট্যাংক পাঠানোর ঘোষণায় প্রতিক্রিয়া জানান পুতিন। তিনি বলেন, ইতিহাসে এটাই প্রথম নয় যে জার্মানি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ট্যাংক পাঠিয়েছে। রাশিয়া নিজেকে রক্ষায় এর সব অস্ত্র ব্যবহার করবে বলে হুঁশিয়ারি দেন পুতিন। ইউক্রেনে নাৎসিবাদের উত্থানকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে আমরা দেখি যে আধুনিক সময়ে নানা আকার নিয়ে নাৎসিবাদের উত্থান ঘটছে, যা রাশিয়ার নিরাপত্তার প্রতি সরাসরি হুমকি। বারবার আমাদেরকে সম্মিলিত পশ্চিমাদের আগ্রাসনের জবাব দিতে হচ্ছে। এটি রীতিমতো অবিশ্বাস্য তবে আমাদেরকে আবারও জার্মানির লিওপার্ড ট্যাংক দ্বারা হুমকি দেয়া হচ্ছে। স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধ ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবথেকে ভয়াবহ ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। মাতৃভূমিকে রক্ষায় লাখ লাখ সোভিয়েত নাগরিক প্রাণ দিয়েছিলেন ভোলগা নদীর তীরে।

তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের হাতেই পতন হয় নাৎসি জার্মানির। তবে সেই পতনের সূচনা হয়েছিল স্তালিনগ্রাদে। গোটা বিশ্বযুদ্ধে জার্মান বাহিনী যত সেনা হারিয়েছিল তার ৮০ শতাংশই ছিল সোভিয়েত বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে। সেই ইতিহাসকে আবারও মঞ্চায়ন করার হুমকি দেন পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হচ্ছে রাশিয়ার মানুষদের ‘অক্ষয়’ প্রকৃতির প্রতীক। জার্মানিসহ ইউরোপীয় দেশগুলো এখন রাশিয়ার সঙ্গে নতুন যুদ্ধ শুরু করেছে। তারা যুদ্ধক্ষেত্রে জয়ের আশা করছে। কিন্তু তারা বুঝতে পারছে না, আধুনিক যুদ্ধে রাশিয়া তাদের জন্য আরও কঠিন হয়ে আবির্ভূত হবে। আমরা হয়ত তাদের সীমান্তে ট্যাংক পাঠাচ্ছি না কিন্তু আমরা আমাদের মতো জবাব দেবো। আর শুধু যুদ্ধযানের মাধ্যমে এর শেষ হবে না, সকলের সেটি বুঝতে হবে। 

এই ভাষণের আগে স্তালিনগ্রাদকে রক্ষায় জীবন দেয়া সোভিয়েত সেনাদের সম্মান জানান এবং তাদের সমাধিতে ফুল দেন। তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন তিনি। এসময় হাজার হাজার মানুষ সেখানে সম্মান জানাতে অংশ নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ট্যাংক দিয়ে কুচকাওয়াজও অনুষ্ঠিত হয় সেখানে। এসব ট্যাংকের গায়ে ইংরেজি ‘ভি’ আঁকা ছিল। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের প্রতীক হিসেবে জেড এবং ভি বিশ্বজুড়ে পরিচিত হয়ে উঠেছে। 

সেখানে সম্মান জানাতে আসা ইরিনা জোলোতোরেভা নামের এক নারী বলেন, আমার পরিবার স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধ করেছে। ইউক্রেনের যুদ্ধের সঙ্গেও এর মিল রয়েছে। আমাদের দেশ স্বাধীনতা ও ন্যয়বিচারের জন্য লড়ছে। আমরা ১৯৪২ সালে নাৎসিদের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছিলাম, এখন প্রজন্মের কাছে সেটি একটি উদাহরণ। যাই হোক না কেনো, আমরা আবারও জয়ী হবো।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: