তিন দিক ঘিরে ফেলেছে রাশিয়ার লক্ষাধিক সেনা, ইউক্রেনে হামলা কি সময়ের অপেক্ষা
দক্ষিণে জোর করে দখল করা ক্রিমিয়া, রাশিয়ার দিকে দুই দেশের সীমান্ত এবং উত্তরে বেলারুস— এই তিন দিক থেকে রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশ সম্পূর্ণ।
প্রথম নিউজ, ডেস্ক: ইউক্রেন সীমান্ত বরাবর লক্ষাধিক সৈন্য সমাবেশ করল রাশিয়া। চূড়ান্ত হামলার নীল নকশা প্রস্তুত। হামলা হবে কবে? কেউ বলছেন চিনে শীতকালীন অলিম্পিক শেষ হলেই রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করবে। আবার অন্য একটি অংশের মত, ১৪ ফেব্রুয়ারি কিভ হয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজের মস্কো সফর শেষ হলেই বাজবে যুদ্ধের ডঙ্কা। হামলার সময়-কাল নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও যুদ্ধ যে অবশ্যম্ভাবী তা অবশ্য পশ্চিমী বিশ্বের প্রায় সকলেই মনে করছে। ব্যতিক্রম ইউক্রেনের বিদেশ মন্ত্রক। তাদের শান্ত, ধীর স্থির ভাব দেখে আরও বিভ্রান্ত আমেরিকা।শনিবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে টেলিফোনে কথা বলেন রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে। কিন্তু ঐক্যমত্যে পৌঁছনো যায়নি। পশ্চিমী সংবাদ মাধ্যমের দাবি, ফোনে বাইডেন স্পষ্ট জানিয়েছেন, রাশিয়া সংযম না দেখালে ফল হবে তাদের ক্ষেত্রে ধ্বংসাত্মক। যদিও ক্রেমলিন বরাবরেই মতোই দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে ফোনালাপকে ঔপচারিকতা হিসেবেই বর্ণনা করেছে। আমেরিকার ‘হুমকি’কেও পাত্তা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছে না মস্কো।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার আক্রমণ আসবে কোন পথ ধরে, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধন্দ। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, রাশিয়ার লক্ষাধিক সৈন্য তিন দিক দিয়ে ইউক্রেনকে ঘিরে ফেলেছে। দক্ষিণে জবরদস্তি করে অধিকৃত ক্রিমিয়া, রাশিয়ার দিকে দুই দেশের সীমান্ত বরাবর এবং উত্তরে বেলারুসের দিক থেকে রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশ সম্পূর্ণ। এই তিন দিকের মধ্যে কোন অংশ দিয়ে মস্কো হামলা শুরু করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। আমেরিকা ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা নিয়ে চরম উত্তেজিত হলেও, সেই উত্তেজনার রেশ নেই কিভে। উল্টে জনগণকে মাথা ঠান্ডা রাখার পরামর্শ দিচ্ছে ইউক্রেন সরকার। কিভের মেয়রের কার্যালয় জানিয়েছে, রাজধানীর ৩০ লক্ষ বাসিন্দাকে জরুরি ভিত্তিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে তারা প্রস্তুত আছে।
ইউক্রেনে হামলা করতে এত উদগ্রীব কেন পুটিন? আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, মস্কোর আসল আপত্তি পূর্ব ইয়োরোপে ‘নর্থ অ্যাটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো)’ বাহিনীর কর্মকাণ্ড এবং ইউক্রেন নিয়ে তাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা। পশ্চিমী দেশগুলোর কাছে মস্কো নিশ্চয়তা চায়, যে পূর্ব ইউরোপ থেকে তারা ন্যাটোর বাহিনীকে সরিয়ে নেবে। এবং ইউক্রেনে ন্যাটো বাহিনীর প্রবেশের কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ মস্কো মনে করে, পশ্চিমী দুনিয়া আসলে রাশিয়া সীমান্তে ন্যাটোকে মোতায়েন করে পরোক্ষে রাশিয়ার উপর চাপ বাড়াতে চায়। ওয়াশিংটন রাশিয়ার এই দাবি সরাসরি খারিজ করলেও, তারা আলোচনার পথ থেকে সরতে চায় না। এমনকি এ নিয়ে ক্রেমলিনে আলোচনা করতে চেয়ে বার্তাও গিয়েছে। যদিও সেই আলোচনা এখনও গতি পায়নি। ফলে ইউক্রেনকে পদানত করে পাল্টা বার্তা দেওয়ার কথাই এখন ভাবছে মস্কো। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইউক্রেনকে তিন দিক দিয়ে ঘিরে ফেলে রণ-হুঙ্কার ছাড়া শুরু করেছে পুটিনের বাহিনী।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: