জুয়ার অর্থ জোগাতে প্রশ্নফাঁস প্রতারণা: আদমজীর শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার
প্রথম নিউজ, ঢাকা : চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের নামে অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের আব্দুল রউফ প্রীতম নামে এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এই শিক্ষার্থী অনলাইন জুয়ায় আসক্ত।
গতকাল রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এর সহযোগিতায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টস্থ বঙ্গবন্ধু বিমান বাহিনী ঘাঁটির সামনে থেকে আব্দুল রউফ প্রীতমকে গ্রেপ্তার করা হয়। জুয়ায় আসক্ত শিক্ষার্থী জুয়ার অর্থ জোগাতে এই প্রতারণা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্র প্রীতম চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করতে পারবে এরকম শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে তার ফেসবুক এবং মেসেঞ্জার পেইজে বিজ্ঞাপন দেয়। এসময় বিভিন্ন ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে নগদ/বিকাশ মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে তথ্য পায় গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় SSC Batch 2023, SSC Short Syllabus 2023, Desh Viwe নামক একাধিক পেজ থেকে সে চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত প্রচারণা চালাতে থাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকেরা এই প্রচারণায় বিশ্বাস করে প্রতারক প্রীতমের সঙ্গে বিভিন্ন অ্যাপসে যোগাযোগ শুরু করে। এক পর্যায়ে তার চাহিদা অনুযায়ী বিকাশ, নগদ ও রকেট মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা পাঠায়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের নামে প্রতারণার অর্থ হাতিয়ে নেয়ার জন্য এই প্রতারক ছাত্র ও তার বাবা ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ এবং তার মায়ের ন্যাশনাল আইডি দিয়ে একাধিক ব্যাংক হিসাব খোলে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, চলমান এসএসসি পরীক্ষা প্রশ্নপত্র সংরক্ষণ, পরিবহন অথবা বিতরণের মতো কোন কাজেই এই ছাত্র বা তার কোন আত্মীয় জড়িত ছিল না।
তাই তার পক্ষে প্রশ্নপত্র ফাঁস করা একেবারেই অসম্ভব ছিল। অনলাইন জুয়া খেলায় দীর্ঘদিন ধরে আসক্ত এই ছাত্র জুয়া খেলা ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে ফুর্তি করার টাকা সংগ্রহ করতে এই প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিল বলে স্বীকার করেছে প্রীতম। ইতোমধ্যে পাবলিক পরীক্ষা আইন ১৯৮০'র ধারা মতে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এর ডিসি (ডিবি) লালবাগ মশিউর রহমান মানবজমিনকে বলেন, ক্যান্টনমেন্টের মতো সংরক্ষিত এলাকায় বসবাস করে বাহিনীর সদস্যের এনআইডি কার্ড দিয়ে সে কিভাবে এই প্রতারণামূলক কাজ করছিল সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ।