জনসনের পর নাইজেল এডামসের পদত্যাগ
শুক্রবার পদত্যাগ করেছেন নাদিন ডোরিস। এ কথা লিখেছে অনলাইন বিবিসি।
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: পার্লামেন্টের এমপি পদ ত্যাগের ঘোষণা দিয়ে বৃটেনকে হতবাক করে দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এর পরপরই পদত্যাগ করেছেন তার ঘনিষ্ট এক মিত্র। তিনি হলেন সেলবি অ্যান্ড আইনস্টির এমপি নাইজেল এডামস। কেন পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে কিছু বলেননি। তিনি ছিলেন জসননের সরকারে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী। এর ফলে কনজার্ভেটিভ দলের জন্য একটি তৃতীয় উপনির্বাচন ঘটিয়ে আসছে। ওদিকে শুক্রবার পদত্যাগ করেছেন নাদিন ডোরিস। এ কথা লিখেছে অনলাইন বিবিসি। কোভিড -১৯ মহামারীকালে পার্টি করার অভিযোগ আছে জনসনের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে কমন্স প্রিভিলেজেস কমিটি তদন্ত করছে।
তারা তদন্ত করে দেখছে ডাউনিং স্ট্রিটে তিনি লকডাউন লংঘন করে কমন্সকে বিভ্রান্ত করেছেন কিনা। ওই কমিটির রিপোর্ট আগেই দেখেছেন বরিস জনসন। তারপর পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন। তিনি অবশ্য বলেছেন, পার্টিগেট কেলেংকারিতে তাকে জোরপূর্বক পার্লামেন্টের বাইরে রাখা হলো। পার্লামেন্ট ত্যাগ করা খুবই দুঃখজনক বলে তিনি দাবি করেন। দিয়েছেন একটি দীর্ঘ বিবৃতি। তাতে জনসনবিরোধীদের তাকে তাড়ানোর চেষ্টা করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন এবং ইঙ্গিত দিয়েছেন, তার ‘রোলারকোস্টার’ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এখনও শেষ হয়নি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিয়া টুডে, বিবিসি।
৫৮ বছরের জনসন বলেন, তিনি কমিটির কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন, যা স্পষ্ট করে দিয়েছে সংসদ থেকে বের করে দেয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা সাজানো হচ্ছে। তিনি বলেন, সত্য যাই-ই হোক না কেন, শুরু থেকেই ওদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল আমাকে দোষী প্রমাণ করা।
সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যদের নিয়ে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাকে ‘ক্যাঙারু কোর্ট’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এই পদত্যাগ হাউজ অফ কমন্সে একটি শহরতলির লন্ডন আসনের আইন প্রণেতা হিসাবে জনসনকে প্রতিস্থাপন করার জন্য বিশেষ নির্বাচনের সূত্রপাত করবে।
জনসন, যার ক্যারিয়ারে একাধিক কেলেঙ্কারি রয়েছে, ২০১৯ সালে কনজারভেটিভদের হয়ে জয় এনে দেবার পর তিন বছরেরও কম সময় পরে তার নিজের দল তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে। তিনি ২০২০ এবং ২০২১ সালে সরকারি ভবনগুলিতে মহামারী লকডাউন নিয়ম লঙ্ঘনকারী বেশ কয়েকটি জমায়েত সম্পর্কে সংসদে বিভ্রান্তিকর বিবৃতি দিয়ে হাউজ অব কমন্স স্ট্যান্ডার্ড কমিটির তদন্তের মুখে পড়েন। জনসন সংসদকে বিভ্রান্ত করার কথা স্বীকার করেছেন, যদিও তার দাবি তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে তা করেননি।
কমিটি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তার রিপোর্ট প্রকাশ করবে বলে আশা করা হয়েছিল, এবং জনসন ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হলে তাকে হাউজ অব কমন্স থেকে বরখাস্ত করা হতে পারে এমনটাও শোনা গিয়েছিলো। পদত্যাগ করার মাধ্যমে, তিনি একটি স্থগিতাদেশ এড়াতে পারেন, যা তাকে তার ভোটারদের দ্বারা কমন্স আসন থেকে অপসারিত করে ভবিষ্যতে আবার সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ এনে দেবে। তার পদত্যাগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিনি সেই বিকল্প নিয়ে চিন্তা করছেন। ২০২২ সালের জুলাই মাসে জনসন সরকারের ট্রেজারি প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ঋষি সুনাক। এর মধ্য দিয়েই ঋষি সুনাক নজরে আসেন, যা জনসনকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল।
জনসন দাবি করেছেন, গত বছর যখন আমি অফিস ছেড়েছিলাম তখন সরকার নির্বাচনে মাত্র কয়েক পয়েন্ট পিছিয়ে ছিল। সেই ব্যবধান এখন ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। জনসনের মেয়াদের শেষ মাসগুলিতে কনজারভেটিভদের পোল রেটিংগুলি হ্রাস পেয়েছে এবং পুনরুদ্ধার হয়নি। তবে শেষে একটি কথা বলা যায় বরিসের বিরুদ্ধে এই তদন্ত শুরু হওয়ায়, চরম অস্বস্তিতে পড়েছে তার দল কনজারভেটিভ পার্টি। এদিকে বিরোধী লেবার পার্টির উপনেতা অ্যাঞ্জেলা রেনার, জনসনের পদত্যাগের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেছেন- যথেষ্ট হয়েছে। এই অন্তহীন ‘টরি সোপ অপেরা’র সমাপ্তি হোক।